এককালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে নির্বাচনী বৈতরণী পার করে দিয়েছিলেন প্রশান্ত কিশোর। তবে সেই সমস্ত কিছু আজ অতীত। গঙ্গা, যমুনা, ব্রহ্মপুত্র দিয়ে আজ অনেক জল গড়িয়ে গেছে। গত 2019 এর লোকসভা নির্বাচনের পর বাংলায় তৃণমূল কংগ্রেসের খারাপ ফলাফল হওয়ার সাথে সাথেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পক্ষ থেকে ডাক পড়ে সেই বিশিষ্ট নির্বাচনী রণনীতিকার প্রশান্ত কিশোরের। বাংলায় বিজেপির কেন এত বৃদ্ধি হল, তা জানতে প্রশান্ত কিশোরের সমীক্ষার ওপর নির্ভর করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

শুধু তাই নয়, দলের রননীতিকারের দায়িত্বও পিকের উপর দিয়ে দেন তিনি। আর এরপর থেকেই একসময় বিজেপির বিভিন্ন নেতা থেকে শুরু করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে প্রশান্ত কিশোর জয়লাভ করানোর চেষ্টা করলেও, তার মুখ থেকে শোনা যায় বিজেপি বিরোধীতার সুর। বিভিন্ন বিষয়ে ইস্যুভিত্তিক ভাবে বিজেপির বিরোধিতা করতে দেখা যায় প্রশান্ত কিশোরকে।

আর এবার লকডাউনের মুহূর্তে দেশের সংকটকালে যখন কুড়ি লক্ষ কোটি টাকার আর্থিক প্যাকেজের ঘোষণা করলেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, ঠিক তখনই তার বিরোধিতায় সরব হলেন তৃণমূলের রাজনৈতিক পরামর্শদাতা। এদিন একটি টুইটে প্রধানমন্ত্রীর আত্মনির্ভরতার বার্তাকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন প্রশান্ত কিশোর। যেখানে তিনি বলেন, “গোটা দুনিয়া বোকা আর নয় আমরা অনেক চালাক হয়ে গিয়েছি। সারা বিশ্ব যখন করোনা মহামারীর বিরুদ্ধে লড়ছে, সেই সময় আত্মনির্ভরতার স্বপ্ন দেখাটাই বোকামি।”

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী আত্মনির্ভরতার ডাক দিয়ে ভারতকে বিশ্ব সভায় শ্রেষ্ঠ আসন লাভ করানোর বার্তা দেওয়ার সাথে সাথেই তার বিরুদ্ধে গর্জে উঠতে দেখা যায় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। পাশাপাশি তৃণমূলের ডেরেক ও’ব্রায়েন থেকে শুরু করে মহুয়া মৈত্র, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে সৌগত রায়ের মত বিভিন্ন নেতা-নেত্রীরা তাদের মুখ থেকে বিজেপি বিরোধীতার সুর ক্রমাগত বর্ষণ করতে শুরু করেন।

আর এবার তৃণমূলের রাজনৈতিক পরামর্শদাতা প্রধানমন্ত্রীর এই বার্তাকে যেভাবে কটাক্ষ করে নরেন্দ্র মোদির আত্মনির্ভরতাকে প্রশ্নের মুখে ফেলে দিলেন তাতে রাজনৈতিক মহলে তৈরি হয়েছে শোরগোল। অনেকে বলছেন, তৃণমূলের রননীতিকার হওয়ার পর থেকেই বিজেপির প্রতি বিভিন্ন বিষয়ে আরও বেশি করে সরব হতে শুরু করেছেন এই প্রশান্ত কিশোর। আর এবার তার এই বিরোধিতার বার্তা আরও প্রকট হওয়ায় গোটা পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেয়, তার দিকেই নজর থাকবে রাজনৈতিক মহলের।