এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > উত্তরবঙ্গ > পুজো মিটতেই রাজনৈতিক কর্মসূচিতে সংগঠন মজবুত করতে আসরে অবতীর্ন শাসকদল

পুজো মিটতেই রাজনৈতিক কর্মসূচিতে সংগঠন মজবুত করতে আসরে অবতীর্ন শাসকদল

লোকসভা ভোটের প্রাক্কালে পশ্চিমবঙ্গের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের গড়ে লেগেছিল জোড় ধাক্কা। রাজ্যের প্রধান বিরোধীদলের আঘাতে শাসকদল রীতিমত নড়ে গেছে। এবং উত্তরবঙ্গে শাসক দল বিরোধী দলের কাছে পুরোপুরি পরাজিত। শাসকদল লোকসভা ভোটে পশ্চিমবঙ্গের 42 টি আসনের মধ্যে অধিকার করেছিলেন মোটে 22 টি আসন। যেখানে বিজেপি তাদের সংগঠনকে পাঁচ বছরে পশ্চিমবঙ্গের এমন জায়গায় নিয়ে গেছে, যার ফলে তাদের আসন সংখ্যা বেড়ে 18 হয়ে গেছে। পুনরায় দলের শক্তি ফেরত আনার জন্য এবার শাসকদল উঠে পড়ে লেগেছে। তাই পুজো মিটতেই নানান কর্মসূচি নিয়ে রাজনৈতিক মঞ্চে তাঁরা হাজির।

দুর্গাপূজা মিটতেই দলীয় সংগঠনের ভিত মজবুত করার উদ্দেশ্যে ইতিমধ্যে কোচবিহার জেলায় বিধানসভা ভিত্তিক ওয়ার্কিং কমিটি গঠন করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। এবার পুজো পার্বণ মিটতেই ব্লকে ব্লকে বিজয়া সম্মিলনী করার পরিকল্পনা করেছে দল। এই বিজয়া সম্মিলনীতে যোগদান করতে পারেন তৃণমূল কংগ্রেস দলের রাজ্য সভাপতি তথা কোচবিহার জেলার দলের পর্যবেক্ষক সুব্রত বক্সি। এবং এই বিজয়া সম্মিলনীর পর থেকেই তৃণমূল কংগ্রেসের বিধানসভা ভিত্তিক ওয়ার্কিং কমিটিগুলি ‘দিদিকে বল’ কর্মসূচি এবং এনআরসি নিয়ে আবারও প্রচার পর্বে সামিল হবে।

দলের জেলা কার্যকরী সভাপতি প্রাক্তন সাংসদ পার্থ প্রতিম রায় জানিয়েছেন, আগামী একুশে অক্টোবর কোচবিহার জেলার বিজয়া সম্মিলনী অনুষ্ঠিত হবে। সেই অনুষ্ঠানে দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সির উপস্থিত হবার কথা আছে। তিনি আরও জানিয়েছেন, এর আগে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে সাতটি বিধানসভা এলাকার ওয়ার্কিং কমিটি ঘোষণা হয়েছে। এবং আগামী দিনে আরও দুটি ওয়ার্কিং কমিটির কথা ঘোষণা করা হবে শীঘ্রই। পাশাপাশি প্রতিটি ব্লকে বিজয়া সম্মিলনী, ‘দিদিকে বল’ কর্মসূচি ও এনআরসি নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস এবার পথে নেমে প্রচার চালাবে। যদিও এ ব্যাপারে তৃণমূল কংগ্রেস দলের জেলা সভাপতি বিনয় কৃষ্ণ বর্মন এর সাথে বারংবার যোগাযোগ করার চেষ্টা হলেও ব্যর্থ হয়।

বিগত কয়েক মাস ধরে কোচবিহার জেলা নেতৃত্ব ব্লকে ব্লকে ‘দিদিকে বল’ কর্মসূচি পালন করে আসছিল। এই কর্মসূচিতে দলের সমস্ত নেতাকর্মী বিশেষ করে বিধায়করা পথে নেমেছিলেন। দীর্ঘদিন ধরে কোচবিহার জেলার তৃণমূল কংগ্রেসের ব্লক কমিটি বলে কিছুই ছিল না। সম্প্রতি দলের জেলা সভাপতি বিনয় কৃষ্ণ বর্মন জেলার বিধানসভাভিত্তিক এলাকার মধ্যে সাতটি বিধানসভা কেন্দ্রের ওয়ার্কিং কমিটির কথা ঘোষণা করেন।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

কোচবিহার দক্ষিণ ও শীতলকুচি বিধানসভা কেন্দ্রে এখনো পর্যন্ত কোনো ওয়ার্কিং কমিটি হয়নি। গত লোকসভা নির্বাচনে কোচবিহার জেলার ভরাডুবি হওয়ার পর তৎক্ষণাৎ সেইসময়ের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষকে অপসারণ করা হয় দলের পক্ষ থেকে। তাঁর জায়গায় বিনয় কৃষ্ণ বর্মন জেলা সভাপতি হয়েছিলেন। দলগত কারণেই সে সময়ে তৎকালীন ব্লক কমিটিগুলি নিষ্ক্রিয় হয়ে গিয়েছিল। ব্লক কমিটি না থাকার কারণে দলীয় সংগঠনের কাজেও নানান সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছিল। এবং এই কারণেই পুজোর আগে বিধানসভা ভিত্তিক ওয়ার্কিং কমিটি গঠন করা হয়। যে দুটি বিধানসভা ব্লকের এখনো পর্যন্ত ওয়ার্কিং কমিটি ঘোষণা হয়নি, খুব শীঘ্রই তার ঘোষণা হবে।

দুর্গাপূজার প্রাক্কালে শাসকদলের প্রায় সব বিধায়কই জনসংযোগের উদ্দেশ্যে দুর্গাপুজোকে বেছে নিয়েছিলেন। এবার দলের রাজ্য সভাপতি বিজয়া সম্মিলনীতে যোগ দিলে সেই সম্মিলনী এক আলাদা মাত্রা পাবে বলে মনে করা হচ্ছে। দলীয় সূত্রে পাওয়া খবর অনুযায়ী সুব্রত বক্সি আসার সূত্রে বিজয়া সম্মিলনী জেলার কোন একটি অডিটোরিয়ামে আয়োজন করা হবে এবং সেখানে সম্প্রতি গঠিত বিধানসভা ওয়ার্কিং কমিটির সদস্যরা ও দলের স্হানীয় নেতৃত্ব উপস্থিত থাকবেন।

গত লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের অবস্থা বেশ কিছুটা সঙ্গীন হলেও গত কয়েকমাস যাবৎ তাঁরা আপ্রাণ চেষ্টা করছে আগামী দিনকে সামনে রেখে আবার ঘুরে দাঁড়ানোর। ইতিমধ্যে ঘরওয়াপসির মাধ্যমে অনেকগুলি গ্রাম পঞ্চায়েত তাঁরা আবার পুনর্দখল করতে সক্ষম হয়েছে। এর ফলে দলে শক্তির সাথে সাথে আত্মবিশ্বাস অনেকটাই বেড়েছে। পুজোর শেষে এবার নতুন ওয়ার্কিং কমিটি নিয়ে দল আবার নতুন করে রাজনৈতিক মঞ্চে অবতীর্ণ হবে। এর ফলে দলের সংগঠন আবার নতুন করে উজ্জীবিত হবে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

পুরো ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিরোধী দল দাবি করেছে, শাসকদল যতই সংগঠন করুক আর ওয়ার্কিং কমিটি করুক, বিরোধী দলের নেতাদের মত শক্তি অর্জন করতে এখনো সক্ষম হননি। এবং তা 2021 এর বিধানসভা নির্বাচনে প্রমাণ হবে। বাংলার জনগণ ইতিমধ্যে তাঁদের রায়ে অনেকটাই তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন। সামনের দিনে বিধানসভা দখল করে শাসক দলকে উৎখাত করাই বিরোধী দলের উদ্দেশ্য বলে তাঁরা জানিয়েছে। অন্যদিকে রাজ্যের রাজনৈতিক মহল মনে করছেন, লোকসভা ভোটের পর বিরোধী দলে যে পরিমাণ দলবদল হয়ে প্রবেশ ঘটেছিল, তাতে বিরোধী দলের শক্তি অনেকটাই বেড়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে গত তিন মাসের মধ্যে ঘরওয়াপসি জেরে পুরনো সদস্যরা একে একে শাসকদলে ফিরে যায়। ফলে বিরোধীদলের আত্মবিশ্বাস একটু হলেও টাল খেয়েছে। আপাতত সামনের বিধানসভা নির্বাচনের দিকেই নজর রাখছে সমগ্র রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

আপনার মতামত জানান -

ট্যাগড
Top
error: Content is protected !!