এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > উত্তরবঙ্গ > পুরসভা নির্বাচনের আগে আবারও দলবদলের ঘটনা, চিন্তিত বিজেপি শিবির

পুরসভা নির্বাচনের আগে আবারও দলবদলের ঘটনা, চিন্তিত বিজেপি শিবির

2019 এর লোকসভা নির্বাচনের পর দেখা যায় বিভিন্ন দল থেকে নেতাকর্মীরা বিজেপিতে যোগদান করছেন পর্যায়ক্রমে। তবে বর্তমানে বেশ কিছুদিন যাবত দেখা যাচ্ছে বিজেপি থেকে নেতাকর্মীরা বেরিয়ে আসছেন এবং যোগ দিচ্ছেন শাসক দলসহ অন্যান্য দলে। স্বাভাবিকভাবেই এই দলবদল এর ঘটনাগুলি বিজেপি শিবিরে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে। এদিন আবারও বড় সংখ্যার বিজেপি নেতা-কর্মী-সমর্থকরা যোগ দিলেন তৃণমূলে। আর কিছুদিনের মধ্যেই বাংলায় শুরু হতে চলেছে পুরসভা নির্বাচন। ঠিক সেই সন্ধিক্ষণে বিজেপি থেকে তৃণমূলে প্রবেশ খুব স্বাভাবিকভাবেই বিজেপিকে কিছুটা অস্বস্তিতে ফেলল বলে দাবি রাজনৈতিক মহলের।

পুরনির্বাচনের প্রস্তুতির স্বার্থে আগামী 3 ও 4 মার্চ উত্তরবঙ্গ সফরে যেতে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারমধ্যেই দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটের এই দলবদল বেশ কিছুটা শক্তি বাড়িয়ে তুলল শাসক শিবিরের বলে দাবি করা হয়েছে। রবিবার বেশ কিছু বিজেপি নেতা-কর্মী-সমর্থকরা তৃণমূলে যোগ দিলেন। তাঁদের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দিয়েছেন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার তৃণমূলের সভানেত্রী অর্পিতা ঘোষ। তবে জানা গেছে, শুধুমাত্র বিজেপি কর্মীরা যোগ দিয়েছেন তা নয়, শাসক শিবিরে এদিন বেশ কিছু কংগ্রেস এবং বাম কর্মীরাও যোগ দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

সম্প্রতি এই দলবদলের ঘটনাটি ঘটেছে বালুরঘাটের সাহেব কাছারি এলাকায়। ঐ এলাকার উৎসব ভবনে দলের জেলা সভানেত্রী অর্পিতা ঘোষের হাত থেকে দলীয় পতাকা নিয়ে দলবদলের ঘটনাটিকে সীলমোহর দেন বিজেপি, সিপিএম এবং কংগ্রেস ছেড়ে শাসক শিবিরে যোগ দেওয়া নেতাকর্মীরা। এই দলে আছেন বিজেপির জেলা সম্পাদক মিঠু মহন্ত, শ্রমিক সংগঠনের নেতা শ্যামসুন্দর সাহা। অন্যদিকে শাসক শিবির দাবি করেছে, এদিন প্রায় চার হাজার কর্মী সমর্থক তাঁদের দলে যোগ দিয়েছেন। এদিন স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রবিবার এই দলবদল সমাপ্ত হওয়ার পর বক্তব্য রাখেন মিঠু মহান্ত এবং শ্যামসুন্দর সাহা।

আর সেখানেই বিপত্তি ঘটান বিজেপি ছেড়ে আসা কর্মীবৃন্দ। দল ছেড়ে দিলেও পুরনো দলের স্লোগান দেন তাঁরা। যদিও সূত্রের খবর, স্লোগান দেওয়ার সাথে সাথে তাঁরা নিজেদের ভুল বুঝতে পারেন এবং ক্ষমা চেয়ে নেন। জানা গেছে, এদিন মিঠু মহন্ত তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর নেতৃত্বকে গৈরিক অভিনন্দন জানান যা একান্তই বিজেপির নিজস্ব বাচনভঙ্গি। অন্যদিকে, শ্যামসুন্দর সাহাও তাঁর বক্তব্যের শেষে বিজেপির শ্লোগান দিয়েছেন বলে জানা গেছে। যদিও পুরো ঘটনায় তাঁরা ক্ষমা চেয়ে নিলেও মঞ্চে থাকা অন্যান্য তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে রীতিমতো হাসাহাসি শুরু হয়ে যায়।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এদিন জানা গেছে, জেলা বিজেপি থেকে একাধিক পদাধিকারী ব্যক্তিত্ব শাসক শিবিরে যোগদান করেছেন। এই ঘটনায় বিজেপি শিবিরেও চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। এ সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে বিজেপি সাংসদ সুকান্ত মজুমদার দাবি করেছেন, দলের মধ্যেই তোলাবাজি এবং দুর্নীতির আশ্রয় নিয়েছিল দলত্যাগকারী বিজেপি নেতারা। দল তাঁদের পাশে না থাকার জন্যই এবং তাঁদের কুকির্তীকে প্রশ্রয় না দেয়ার জন্যই উক্ত নেতারা সরাসরি শাসক শিবিরে যোগদান করেছেন। তবে মুখে কিছু না বললেও সূত্রের খবর, পুরসভার নির্বাচনের আগে হওয়া এই দলবদল পদ্ম শিবিরের কাছে সত্যিই অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

অন্যদিকে জানা গেছে, আগামী 3 এবং 4 মার্চ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উত্তরবঙ্গ সফরে যেতে চলেছেন। সেখানে তিনি প্রশাসনিক বৈঠক করবেন বলে জানা গেছে। 3 মার্চ তিনি উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জে সভা করবেন। উল্লেখ্য, এই কালিয়াগঞ্জেই উপনির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়লাভ করেছে তৃণমূল। দ্বিতীয় দিনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পদার্পণ করবেন দক্ষিণ দিনাজপুরের বুনিয়াদপুর এলাকায়। সেখানেও তিনি কর্মী সভায় যোগদান করবেন বলে জানা গেছে। মোদ্দাকথা, পুরসভা নির্বাচনের আগে যাতে কোনোভাবেই বিরোধীরা বিন্দুমাত্র পালের হাওয়া টানতে না পারে সে ব্যাপারে অতিসতর্ক মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

গত লোকসভা নির্বাচনের পর এই বাংলার মাটিতেই রাজনৈতিক জমি শক্ত করে বিজেপির রাজনৈতিক মঞ্চের একেবারে সামনের সারিতে চলে আসে। কিন্তু বর্তমানে বাংলাতেই উল্টো ধাক্কা সইতে হচ্ছে বিজেপিকে। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, সম্প্রতি এনআরসি এবং সিএএকে কেন্দ্র করে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি বেশ কিছুটা ধাক্কা খেয়েছে। অন্যদিকে, তৃণমূল লোকসভা ভোটে বেশ কিছুটা কোণঠাসা অবস্থা থেকে ক্রমশ ভোট কৌঁশলী প্রশান্ত কিশোরের পরামর্শ অনুযায়ী ঘুরে দাঁড়াতে সমর্থ হয়েছে। ঠিক এই অবস্থায় বিজেপি শিবিরের দলবদলের ধাক্কা যথেষ্ট চিন্তায় ফেলেছে তাঁদের বলে দাবি রাজনৈতিক মহলের। অন্যদিকে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, যেভাবে বিজেপি থেকে নেতাকর্মীরা দলবদল করছেন। তাতে আগামী দিনে এ রাজ্যে বিজেপি যথেষ্ট বেকায়দায় পড়তে পারে। আপাতত সম্পূর্ণ বিষয়টি নজরে রাখছে ওয়াকিবহাল মহল।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!