এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > রাহুলের যোগ্যতাকে ছোট করে দেখছেন মমতা- ফের কংগ্রেসের হেভিওয়েট নেতার কটাক্ষের মুখে তৃণমূল নেত্রী

রাহুলের যোগ্যতাকে ছোট করে দেখছেন মমতা- ফের কংগ্রেসের হেভিওয়েট নেতার কটাক্ষের মুখে তৃণমূল নেত্রী

পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে ম্যান অব দ্য ম্যাচের খেতাব ছিনিয়ে নিল কংগ্রেস। নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকদের উচ্ছ্বাস ছিল দেখার মতো – সাজো সাজো রব হাত শিবিরে। জয়ের আনন্দে ভাসছেন রাহুলবাহিনী। গোটা দেশেই যেন ফের একবার উৎসবের মরশুম শুরু হল কংগ্রেসীদের।

তাছাড়া অভাবনীয় জয়ের সাফল্য উদযাপনে পিছিয়ে নেই প্রদেশ কংগ্রেসও। রাণি রাসমনি রোডে প্রদেশে কংগ্রেসের জনসভা জমজমাট ছিল এদিন দলীয় কর্মী সমর্থকদের উপস্থিতিতে। বহুদিন পরে একই মঞ্চে উপস্থিত থাকতে দেখা গেছে মঞ্চে উপস্থিত সোমেন মিত্র, অধীর চৌধুরি, প্রদীপ ভট্টাচার্য, দেবপ্রসাদ রায়, সর্দার আমজাদ আলি, আব্দুল মান্নান প্রমুখ প্রদেশ কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বদের।

সবথেকে উল্লেখযোগ্য দীর্ঘদিন পরে প্রদেশ কংগ্রেসের নেতৃত্বে ঐক্যের ছবি দেখা গেল। মঞ্চ থেকে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক ভূমিকায় দেখা গেল প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরীকে। পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোটের ফলাফলকে হাতিয়ার করেই নেত্রীর বিরুদ্ধে তোপ দাগতে দেখা গেল তাঁকে।

অধীরবাবু বললেন, ‘পাঁচ রাজ্যে কংগ্রেস জিতেছে, বিজেপি হেরেছে। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একবারও বলছেন না যে এটা রাহুল গান্ধীর কৃতিত্ব বা কংগ্রেসের সাফল্য’। তৃণমূলনেত্রী রাহুল গান্ধীর নামোল্লেখ না করে কংগ্রেসের জয় সম্পর্কে যে মন্তব্যে করেছেন, তা আসলে তাঁর ‘সংকীর্ণতাকেই’ তুলে ধরে – মনটাই দাবী অধীর চৌধুরীর।

কংগ্রেস বা রাহুল গান্ধীর নামকে উহ্য রেখে মন্তব্য করার নেপথ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অন্য উদ্দেশ্য রয়েছে বলেই দাবী করলেন বহরমপুরের সাংসদ। তাঁর দাবি, আসলে তৃণমূল নেত্রী এখন প্রধানমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। আর তাকে প্রধানমন্ত্রী পদের জন্যে যোগ্য দাবীদার ভাবেন ‘তাঁর চামচা কিছু নেংটি ইঁদুর’। সেই কারণেই কংগ্রেসের সাফল্যকে খাটো করে দেখার পক্ষপাতী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর ফের কটাক্ষের সুর চড়া করে বলেন, ‘স্বপ্ন দেখে লাভ নেই। প্রধানমন্ত্রির চেয়ার রাহুল গান্ধীর জন্য ফিক্স হয়ে গিয়েছে’।

ফেসবুকের কিছু টেকনিকাল প্রবলেমের জন্য সব খবর আপনাদের কাছে পৌঁছেছে না। তাই আরো খবর পেতে চোখ রাখুন প্রিয়বন্ধু মিডিয়া-তে

এবার থেকে প্রিয় বন্ধুর খবর পড়া আরো সহজ, আমাদের সব খবর সারাদিন হাতের মুঠোয় পেতে যোগ দিন আমাদের হোয়াটস্যাপ গ্রূপে – ক্লিক করুন এই লিঙ্কে

প্রসঙ্গত, লোকসভা নির্বাচনের আগেই জয়ের তিলক উঠেছে কংগ্রেসের ললাটে। বিজেপিকে জোর ধাক্কা দিয়ে পাঁচটি রাজ্যের মধ্যে তিনটি রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে অভাবনীয় সাফল্য পেল কংগ্রেস। একদিকে মোদী-শাহ জুটির কপালে চিন্তার ভাঁজ, অন্যদিকে জয়ের আনন্দে মেতে আছে কংগ্রেস।

বিজেপির এই অপ্রত্যাশিত পরাজয়ে স্বাভাবিকভাবেই বিরোধীদের ফেডারেল ফ্রন্ট গঠনের দাবী আরো জোরালো হল বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। গত মে মাসেই লোকসভা নির্বাচনের দিকে নিশানা করেই এই ফ্রন্ট গঠনের প্রস্তাব রেখেছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই বিজেপি বিরোধী মহাজোটে আরো শক্তি সঞ্চয় হল বলেই মনে করছেন স্বয়ং অধীরবাবু।

বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির পরাজয়ের পর তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের প্রতিক্রিয়া জনাইয়েছিলেন ট্যুইটারে। তিনি লিখেছিলেন, বিজেপির শেষের দিন শুরু হল এবার থেকে। সেমিফাইনালেই ভরাডুবি বিজেপির। মানুষ বিজেপির বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছেন। এই জয়কে তিনি মানুষের জয় তথা গণতন্ত্রের জয় বলেই ব্যাখ্যা করেছিলেন। নেত্রীর এই মন্তব্যের পাল্টা দিতেই তৃণমূল সুপ্রিমোর বিরুদ্ধে গর্জে উঠতে দেখা গেল প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতিকে।

উল্লেখ্য, প্রদেশ কংগ্রেসের এই জনসভায় অধীর চৌধুরী আদৌও হাজির হবেন কিনা তা নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছিল একসময়। কারণ, সম্প্রতি প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির দায়িত্ব থেকে তাঁকে হটিয়ে সোমেন মিত্রকে এনেছেন কংগ্রেসের হাইকমান্ডার। দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব দমনে ব্যর্থ সহ একাধিক অভিযোগে তাঁকে দায়িত্ব থেকে অপসারণ করা হয়েছিল তাঁকে।

কাজেই দলের প্রতি তাঁর মনে চাপা অসন্তোষ থাকাটা স্বাভাবিক ছিল। এমনকি, এই ঘটনার পর বিধানভবনে প্রকাশ্যে দুই গোষ্ঠীর লড়াই হতেও দেখা গেছে। কিন্তু সমস্ত জল্পনার ইতি টেনে সোমেন মিত্রের পাশে একই মঞ্চে উপস্থিত হতে দেখা গেল অধীর রঞ্জন চৌধুরীকে। অধীরবাবুর বক্তব্য রাখার সময় নজরকাড়া উন্মাদনা লক্ষ্য করা যায় কর্মীদের মধ্যে। আর, সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে যতই সোনিয়া গান্ধী-রাহুল গান্ধীরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে সখ্যতার হাত বাড়িয়ে দিন – বাংলার মাটিতে প্রদেশ-নেতৃত্ত্ব তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধেই যে লড়াই করবেন ওই মঞ্চ থেকে স্পষ্ট করে দিলেন রাজ্যনেতৃত্ত্বের হেভিওয়েট নেতা-নেত্রীরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!