রাজধানী দিল্লির পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন দিল্লি সরকার, সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেন কেন্দ্রীয় মহল জাতীয় February 27, 2020 আবারও উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে ভারতের রাজধানী দিল্লিতে। নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বিরোধী ও সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ ক্রমশ ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। প্রতিদিন মৃতের সংখ্যা একটু একটু করে বাড়ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ভালো মতন বেগ পেতে হচ্ছে পুলিশ প্রশাসনকে। এই মুহূর্তে রাজনৈতিক মহলে দিল্লি পুলিশকে কাঠগড়ায় তোলা হয়েছে। অন্যদিকে, কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে পরিস্থিতির গুরুত্ব বিচার করে প্রশাসনের উচ্চস্তরে প্রায় প্রতিদিনই বৈঠক করা হচ্ছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও পরিস্থিতি এখনো পর্যন্ত সামাল দেওয়া যায়নি। এই অবস্থায় উত্তর-পূর্ব দিল্লির 10 টি অঞ্চলে 144 ধারা জারি করা হয়েছে। তবে এ ক’দিনে সারাদেশের কাছে এই ছবিটি পরিষ্কার হয়ে গেছে, দিল্লির সংঘর্ষ প্রাথমিক অবস্থায় সিএএকে কেন্দ্র করে হলেও পরবর্তীতে তা পরিণত হয়েছে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে হিংসায়। যা পরিস্থিতি আরও ঘোরালো করে তুলেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। ইতিমধ্যে তিনি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে অতিরিক্ত সেনাবাহিনীর আবেদন জানিয়েছেন। কিন্তু এর মাঝে জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্ররা অরবিন্দ কেজরিওয়ালের বাসভবন ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখিয়েছে। তাঁদের দাবি, অরবিন্দ কেজরিওয়াল পুরোপুরি ব্যর্থ দিল্লির হিংসা নিয়ন্ত্রণে। অবশ্য বিক্ষোভ দেখানোর সাথে সাথেই তাঁদেরকে সরিয়ে দেয় পুলিশ। নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনকে কেন্দ্র করে যে হিংসার ছবি দেখছে গোটা দেশ, তা নিয়ে আতঙ্কিত সবাই। ইতিমধ্যে উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে হিংসার আকার ক্রমশ ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। দিল্লি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে থাকছেনা পরিস্থিতি বলে দাবি রাজনৈতিক মহলের একাংশের। অন্যদিকে, মৃত্যুমিছিল ক্রমশ বেড়ে চলেছে। মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত যেখানে দিল্লির হিংসায় এক হেড কনস্টেবলসহ 12 জন সাধারণ নাগরিকের মৃত্যু সংবাদ এসেছিল, বুধবার সকালেই তা বেড়ে দাঁড়ায় আঠারোতে। এই ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে দিল্লির রাজনৈতিক মহলে। নিহতদের মধ্যে প্রত্যেকের শরীরেই গুলির চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে বলে খবর। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - ইতিমধ্যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল কেন্দ্রের কাছে অতিরিক্ত সেনাবাহিনীর আবেদন জানিয়েছেন। যদিও এখনো পর্যন্ত দিল্লি গোষ্ঠী সংঘর্ষ থামানোর জন্য পথে নেমেছে প্রায় 35 কোম্পানি আধা সামরিক বাহিনী। তবে এত পরিমান সেনাবাহিনী ও পুলিশ প্রশাসন পথে নেমেও এখনো পর্যন্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি বলে জানা গেছে। কারণ বুধবার সকালে আরো পাঁচ জনের মৃত্যুর খবর এসেছে। তবে সবথেকে ভয়াবহ অবস্থা এই মুহূর্তে উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে। সংঘর্ষের ভয়াবহতা বিভিন্ন দৃশ্যের মাধ্যমে ধরা পড়েছে সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরায়। অন্যদিকে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ দিল্লির পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছেন বলে খবর। ইতিমধ্যে তিনি মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল ও পুলিশ কমিশনারকে নিয়ে দফায় দফায় জরুরি বৈঠক চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে সমস্ত রকম সাহায্যের জন্য প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তবে এদিন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল দাবি করেছেন, দিল্লির হিংসার পেছনে মুখ্য ভূমিকা পালন করছে বহিরাগতরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দিল্লির জাফরাবাদ, মৌজপুর, চাঁদবা, খুরেজি খাস, ভজনপুরায় ইতিমধ্যে 144 ধারা জারি করা হয়েছে, যা বহাল থাকবে চব্বিশে মার্চ পর্যন্ত। দিল্লী সংঘর্ষের ছবি যতবারই সংবাদমাধ্যমে ভেসে উঠছে ততোবারই আতঙ্কের চোরা স্রোত বইছে দেশবাসীর অন্দরে। এ প্রসঙ্গে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের দাবি, বহুদিন ধরেই এনআরসি এবং সিএএ নিয়ে দেশবাসীর মনে ক্ষোভ জমা হচ্ছে। এবার সময় এসেছে পুরো ব্যাপারটি নিয়ে ভাবনা চিন্তা করার। অন্যদিকে, রাজনৈতিক মহলের একাংশের দাবি নাগরিকত্ব ইস্যুকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় বিজেপি শিবির যথেষ্টই কোণঠাসা। তারমধ্যে ঠিক সংঘর্ষের মাঝেই দিল্লিতে উপস্থিত হন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় শাসক মহলকে লজ্জাজনক পরিস্থিতির সম্মুখীন করবে বলে মনে করা হচ্ছে। আপাতত পরিস্থিতির ওপর নজর রাখবে ওয়াকিবহাল মহল। আপনার মতামত জানান -