এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > রাজ্যপালের প্রতি আক্রমণে দিশেহারা তৃণমূল মহাসচিব! উত্তর খুজছেন স্বয়ং দলনেত্রীর মুখেই

রাজ্যপালের প্রতি আক্রমণে দিশেহারা তৃণমূল মহাসচিব! উত্তর খুজছেন স্বয়ং দলনেত্রীর মুখেই


পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী থেকে শুরু করে বর্তমান রাজ্যপাল জগদীপ ধনকার পর্যন্ত সকলের রাজ্য সরকারের প্রতি করা যেকোনো কটাক্ষের জবাব দিতে দেখা গেছে তৃণমূলের মহাসচিব তথা রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। কিন্তু সম্প্রতি রাজ্যপাল জগদীপ ধনকারের রাজ্য সরকার সম্পর্কে প্রশ্ন তোলার প্রসঙ্গে মুখ খুলতে চাইলেন না শিক্ষামন্ত্রী।

উল্টে তিনি কার্যত স্পষ্ট জানিয়ে দেন, এখন থেকে রাজ্যপালের যেকোনো বিষয়ে যা বলার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বলবেন। আর মঙ্গলবার পার্থবাবুর এই মন্তব্যের পরই রাজনৈতিক মহলে তৈরি হয়েছে জোর জল্পনা। প্রসঙ্গত, পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করার পর থেকেই বিভিন্ন ইস্যুতে রাজ্য সরকারের সঙ্গে মতবিরোধ দেখা দিয়েছে বর্তমান রাজ্যপাল জগদীপ ধনকারের।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় হেনস্থা হওয়ার সময় সশরীরে সেখানে উপস্থিত হন রাজ্যপাল। যা নিয়ে সরকারের তরফ থেকে রাজ্যপালকে কটাক্ষ করা হয়। কিন্তু উল্টে রাজ্যের সরকারের বিরুদ্ধেও সুর চড়াতে ছেড়ে দেননি সাংবিধানিক প্রধান।

এরপরে শিলিগুড়িতে রাজ্যপালের ডাকা প্রশাসনিক বৈঠকে উপস্থিত হননি সরকারি দলের জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে আমলারা। যা নিয়েও রীতিমত ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন রাজ্যপাল। কিন্তু সম্প্রতি 11 অক্টোবর রেড রোডে অনুষ্ঠিত হওয়া দুর্গা কার্নিভাল অনুষ্ঠানে রাজ্যপাল যোগ দেওয়ার পর থেকেই রাজ্য সরকারের সঙ্গে রাজ্যপালের সম্পর্ক তিক্ত থেকে তিক্ততর হয়ে ওঠে।

রাজ্যপালের তরফ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, প্রায় চার ঘণ্টা সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকলেও তাকে কোনো সংবাদমাধ্যমে দেখানো হয়নি। এমনকি তার উপস্থিতির কথা উল্লেখ করা হয়নি। এই ঘটনাকে রীতিমত ডেকে নিয়ে অপমান করার সঙ্গে তুলনা করেন রাজ্যপাল।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

কিন্তু মঙ্গলবার দিন উত্তর 24 পরগনা জেলার ধামাখালি ও সজনেখালিতে প্রশাসনিক বৈঠক করতে চেয়ে রাজ্যপালের তরফ থেকে জেলা প্রশাসনকে চিঠি করা হয়। গত 17 অক্টোবর কিন্তু জেলা সমাহর্তার তরফ থেকে একুশে অক্টোবর রাজ্যপালকে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়, রাজ্য সরকারের অনুমতি না পাওয়া পর্যন্ত কোনো জনপ্রতিনিধিকে বৈঠকে ডাকতে পারবেন না জেলাশাসক।

এমনকি ওই চিঠিতে 21 থেকে 23 অক্টোবর পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রীর উত্তরবঙ্গ সফরে থাকায় সমস্ত শীর্ষ আমলারা সেখানে ব্যস্ত থাকবেন বলে জানানো হয়। কাজেই তারা রাজ্যপালের ডাকা বৈঠকে থাকতে পারবেন না। আর এরপরই রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান প্রশ্ন তোলেন, আমি কি রাজ্য সরকারের অধীনস্থ! কারও সঙ্গে বৈঠক করতে গেলে রাজ্য সরকারের অনুমতি নিতে হবে! রাজ্যপাল বৈঠক করতে চাইলে সরকারের অনুমতি লাগবে কেন!

পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রীর উত্তরবঙ্গ সফর করে আমলাদের ব্যস্ততাকে প্রশ্নের মুখে ফেলে রাজ্যপাল বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী উত্তরবঙ্গে যেতেই পারেন। কিন্তু তার জন্য সরকার ছুটিতে চলে যেতে পারে না।” তাই রাজনৈতিক মহলের মতে, এই সমস্ত ঘটনার মাধ্যমে স্পষ্ট, নবনিযুক্ত রাজ্যপাল যেভাবে রাজ্যের সাংবিধানিক পরিস্থিতি নিয়ে সক্রিয়ভাবে মাঠে নেমেছেন, তাতে ঘটনা সামলাতে রীতিমতো অস্বস্তিতে পড়তে হতে পারে রাজ্যের শাসক দলকে। তাই এই পরিস্থিতিতে মন্ত্রীদের করা যে কোনো মন্তব্য নতুন বিতর্কের সৃষ্টি করতে পারে।

এদিন রাজ্যপালের মন্তব্যের প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী তথা তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে পার্থবাবু বলেন, “রাজ্যপাল যা বলবেন, তার সব উত্তর কি আমাকে দিতে হবে! আমি রাজ্যপালের কোনো কথার আর জবাব দেব না। যা বলার রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান বলবেন।”

আর পার্থবাবুর এহেন মন্তব্যের ফলে রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছেন, এর আগে একাধিক প্রসঙ্গে রাজ্যপালের কথার জবাব শিক্ষামন্ত্রী দিয়ে থাকলেও বর্তমানে রাজ্যপালের গতিবিধি দেখে ইতিমধ্যেই শাসকদল বুঝতে পেরে গেছে, রাজ্যপালের কার্যকলাপকে আর হালকাভাবে নেওয়া যাবে না। তাই তার কোনো মন্তব্যের প্রতি উত্তর মন্ত্রীদেরকে দিয়ে করিয়ে ঝুঁকি নিতে নারাজ সরকার। এখন সাংবিধানিক প্রধানের মন্তব্যের জবাবে প্রশাসনিক প্রধান কি উত্তর দেন! সেদিকেই লক্ষ্য থাকবে বিশ্লেষকদের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!