এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > রথযাত্রার প্রস্তুতি শিবির ঘিরে তুলকালাম গেরুয়া শিবিরের অন্দরে, অস্বস্তিতে বিজেপি

রথযাত্রার প্রস্তুতি শিবির ঘিরে তুলকালাম গেরুয়া শিবিরের অন্দরে, অস্বস্তিতে বিজেপি


গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে বন্ধ হওয়ার মুখে বিজেপির রথযাত্রা। রথ যাত্রার আগেই আবারো প্রকাশ্যে এলো বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। এদিন সিউড়ি রামকৃষ্ণ সভাগৃহে রথযাত্রার প্রস্তুতি বৈঠক করতে গিয়ে নিজেদের মধ্যেই বাকবিতণ্ডা, ধস্তাধস্তি এমনকী মারামারিতেও জড়িয়ে পড়লেন নেতা-কর্মীর। বীরভূম জেলা সভাপতির নানা সিদ্ধান্ত নিয়ে সরব হন সভায় উপস্থিত একাধিক জেলা নেতা।

এমনকী সদ্য বহিষ্কৃত বিজেপির জেলা সম্পাদক অনিল সিংহ এই বৈঠকে হাজির হয়ে বহিষ্কারের কারণ জানতে চান। আর তার ফলস্বরূপ গেরুয়া শিবিরের যুযুধান দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বিবাদ চরমে পৌঁছয়। বৈঠক ছেড়ে একাধিক ক্ষিপ্ত নেতা-কর্মী বেরিয়ে যাওয়ায় সভা কার্যত ভেস্তে যায়।

অন্যদিকে, ৮ সদস্য বিশিষ্ট জেলা কমিটির এক উপকমিটি বিজেপির জেলা সভাপতি রামকৃষ্ণ রায়ের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের কাছে লিখিত অভিযোগ জানালেন। যা নিয়ে রীতিমত সরগরম বীরভূমের জেলা রাজনীতি।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য,আগামী ১৪ডিসেম্বর তারাপীঠ থেকে রথে চেপে ‘গণতন্ত্র বাঁচাও’ অভিযানে নামতে চলেছে বিজেপি। অভিযান শুরু করবেন দলের সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। শীর্ষ নেতার উপস্থিতিতে ‘গণতন্ত্র বাঁচাও’ সেই অভিযান থেকে জেলায় লোকসভা ভোটের আগে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখা বিজেপি শিবিরের স্বপ্নে এদিন কার্যত জল ঢালা হয়ে গেল। বীরভূম জেলা সভাপতি রামকৃষ্ণ রায় মূলত রথযাত্রার কর্মসূচি এবং তাকে কেন্দ্র করে বিজেপির একাধিক বৃহৎ সভা করার প্রস্তুতি নিয়েই এদিন সিউড়িতে বৈঠক ডেকেছিলেন। সেই বৈঠকে ডাক পেয়েছিলেন জেলা কমিটির সদস্য, মণ্ডল সভাপতি ও বিভিন্ন মোর্চার জেলা সভাপতি এবং বিধানসভা ভিত্তিক পর্যবেক্ষকরা। সভা শুরু হতেই জেলা কমিটির সদস্য তথা সদ্য সাধারণ সম্পাদক থেকে জেলার সহসভাপতি হওয়া শুভাশিস চৌধুরী তাঁর পদ পরিবর্তন নিয়ে জেলা সভাপতির উদ্দেশ্যে প্রশ্ন তোলেন।

এরপর হঠাৎই সভায় হাজির হন সদ্য বহিষ্কৃত বিজেপির জেলা সম্পাদক থাকা অনিলবাবু। কোন বৈঠকে কেন তাঁকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত হয়েছে তা তিনি জেলা সভাপতির কাছে জানতে চান। এমনকি তাকে বহিষ্কার করা প্রসঙ্গে রাজ্য নেতৃত্বর নির্দেশে তা করা হলে চিঠি দেখানোর দাবি জানান। কিন্তু জেলা সভাপতি কোনও কিছুই না দেখাতে পারায় এনিয়ে বৈঠকের মাঝেই তুলকালাম বাধে। জেলা সভাপতির অনুগামী ও তাঁর বিরোধী গোষ্ঠীর মধ্যে তীব্র বাদানুবাদের জেরে একটা সময়ে সভার সাউন্ড সিস্টেম বন্ধ করে দেওয়া হয়, যাতে বাকবিতন্ডা প্রকাশ্যে না আসে। কিন্তু আখেরে লাভ হয়নি। সভাকক্ষ থেকে বেরিয়ে এসে বাইরেই চিৎকার শুরু করে দু’পক্ষ। প্রকাশ্যে সংবাদমাধ্যমের সামনেই দু’পক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তিও হয়।

সভা থেকে বেরিয়ে এসে অনিলবাবু বলেন, “কোনও নিয়মের তোয়াক্কা না করে জেলা সভাপতি নিজের ইচ্ছেমতো সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। সংগঠনকে তৃণমূলের কাছে বিকিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন।”পাশাপাশি শুভাশিসবাবু বলেন,” দলে জেলা সভাপতি একনায়কতন্ত্র কায়েম করার চেষ্টা করছেন, কারও সঙ্গে কোনও আলোচনা করছেন না।”গণ্ডগোলের জেরে বৈঠকে একটা বড় অংশ সভা থেকে বেরিয়ে যাওয়ায় বৈঠক কার্যত পণ্ড হয়ে যায়। যদিও জেলা সভাপতি রামকৃষ্ণবাবু সাফাই দিয়ে বলেন, ‍”যা করেছি আইন মেনেই করেছি, মিটিংও হয়েছে।”

অন্যদিকে, শুক্রবারই ২১জনের জেলা কমিটির আট জন সদস্য রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে চিঠি লিখে রামকৃষ্ণ রায়ের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে অনাস্থা প্রস্তাব আনার অনুমতি চেয়েছেন। জেলা কমিটির সদস্য অতনু চট্টোপাধ্যায় বলেন, ” মল্লারপুর, গণপুরের কর্মীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পঞ্চায়েত দখল করল তাঁদের কোনও সম্মান দেন না জেলা সভাপতি। তাই আমরা তাঁর প্রতি অনাস্থা জানিয়ে চিঠি দিয়েছি।” এনিয়ে অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে চাননি রামকৃষ্ণবাবু।

প্রসঙ্গত, গত ১০নভেম্বর শুভাশিস চৌধুরী ও শান্তনু রায় আয়োজিত বিজেপির বিজয়া সম্মেলনেই দুধকুমার মণ্ডল সহ একাধিক নেতা এমনকী, বিজেপির প্রাক্তন জেলা সভাপতিরাও বর্তমান জেলা সভাপতি রামকৃষ্ণ রায়কে তুলোধোনা করেন। অনিলবাবু জেলা সভাপতির ব্যক্তিগত ব্যবসা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। এরপর রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের বোলপুরের সভায় বিজয়া সম্মেলনে উপস্থিত জেলা কমিটির প্রথমসারির সদস্যদের দেখা যায়নি, অন্যদিকে মুকুলু রায়ের সভায় কার্যত তাঁরাই মুখ হয়ে উঠেছিলেন। এরপরই জেলা সভাপতি হঠাৎই কার্যত এক প্রকার নিজের সিদ্ধান্তে জেলার দু’জন প্রভাবশালী নেতাকে বহিষ্কার করেন ও শুভাশিসবাবুকে অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ পদে বহাল করেন।

ফেসবুকের কিছু টেকনিকাল প্রবলেমের জন্য সব খবর আপনাদের কাছে পৌঁছেছে না। তাই আরো খবর পেতে চোখ রাখুন প্রিয়বন্ধু মিডিয়া-তে

 

এবার থেকে প্রিয় বন্ধুর খবর পড়া আরো সহজ, আমাদের সব খবর সারাদিন হাতের মুঠোয় পেতে যোগ দিন আমাদের হোয়াটস্যাপ গ্রূপে – ক্লিক করুন এই লিঙ্কে

যদিও বিষয়টি নিয়ে প্রতিক্রিয়া নেওয়ার জন্য বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে একাধিক বার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। অন্যদিকে, এদিন ইলামবাজারের দ্বারন্দায় একটি সভায় বিজেপিকে কাঁকড়া বিছে বলে আক্রমণ করেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। তিনি বলেন, “দলের বুথ সভাপতিরা মাসে দু’টি করে সভা না করলে দল থেকে তাড়িয়ে দেব।”

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!