ডায়মন্ডহারবারে ভয়ের আবহ তৈরি করতে চলেছে শাসক দলের চূড়ান্ত সন্ত্রাস, কমিশনে বামেরা কলকাতা রাজ্য March 16, 2019 রাজ্যের আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের দিন ঘোষণা হওয়ার অনেক আগে থেকেই যাতে এই নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও অবাধ ভাবে করানো যায় তার জন্য নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়ে নানা আবেদন জানিয়েছিল সমস্ত বিরোধী দলগুলো। আর এরপর নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা হওয়ার সাথে সাথেই হিসেব মতো রাজ্যের সমস্ত পুলিশ প্রশাসন থেকে শুরু করে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো নির্বাচন কমিশনের আওতায় চলে যাওয়ার কথা। কিন্তু নির্বাচন কমিশনের আওতায় গেলেও এখনও পর্যন্ত এই পুলিশ প্রশাসন তৃণমূলের হয়েই কাজ করছে বলে এবার ডায়মন্ডহারবারের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনের কাছে গিয়ে অভিযোগ জানাল বাম, কংগ্রেস, বিজেপি সহ একাধিক বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো। সূত্রের খবর, এই ব্যাপারে রাজ্যের বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতারা নির্বাচন কমিশনের কাছে লিখিতভাবে চিঠি দিয়ে জানিয়েছে যে, থানায় গেলে শাসকদলের অঙ্গুলিহেলনে চলা থানার পুলিশ অফিসাররা কোনরূপ অভিযোগ নিচ্ছেন না। বিরোধী দলের সদস্যদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে যাতে তৃণমূলের হয়ে কাজ করা যায় তার জন্য হুমকি দেওয়া হচ্ছে। আর এর পেছনে ডায়মন্ডহারবারের মহকুমা পুলিশ সরাসরি যুক্ত রয়েছে বলে অভিযোগ জানাতে দেখা যায় বিরোধীদের। আর সমস্ত বিরোধী দল একজোট হয়ে এই ব্যাপারে ডায়মন্ডহারবারের তৃণমূল নেতৃত্বের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ জানানোয় প্রবল চাপে পড়তে শুরু করেছে শাসক দল। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - বস্তুত, এই ডায়মন্ড হারবারে এবার তৃণমূলের হয়ে দাঁড়িয়েছেন এখানকারই বিদায় সাংসদ তথা তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ফলে বিরোধীরা নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ করে কার্যত সেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকেই যে অভিযোগের আঙুল তুললেন সেই ব্যাপারে একপ্রকার নিশ্চিত রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ। এদিকে গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় এই ডায়মন্ডহারবার লোকসভা কেন্দ্রের কোথাও বিরোধী দল মনোনয়ন জমা দিতে না পারায় শাসকদলের বিরুদ্ধে আদালত পর্যন্ত মামলা গড়িয়েছিল। আর যার ফলে পঞ্চায়েতের ফলাফল ঘোষণা হলেও ডায়মন্ডহারবারের অনেক গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতিতে বোর্ড গঠন স্থগিত রাখা হয়েছিল। আর এবার আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগেও সেই শাসকের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হল বিরোধীরা। কিন্তু ঠিক কী অভিযোগ রয়েছে তাদের? এদিন এই প্রসঙ্গে দক্ষিণ 24 পরগনা জেলা সিপিএমের সম্পাদক শমীক লাহিড়ী বলেন, “গোটা ডায়মন্ডহারবারে জোড়া ফুল কার্যত জরুরি অবস্থা জারি করেছে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে তৃণমূলের হয়ে কাজ করতে হবে বলা হচ্ছে। আর তা না হলে বাড়িতে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হবে বলে হুমকি দিচ্ছে তৃণমূল বাহিনীরা। এমনকি শাসকদলের অত্যাচার নিয়ে থানায় অভিযোগ করতে গেলেও কোনো অভিযোগ নেওয়া হচ্ছে না। গোটা বিষয়টি আমরা নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছি।” একই অভিযোগ করে জেলা কংগ্রেসের সভাপতি মানব মিত্র বলেন, “আসলে এখন জোর যার মুলুক। ফলতার সরারহাটে আমাদের দলের ভাড়া অফিস দখল করে নেওয়া, বজবজ পৌরসভা 7 নম্বর ওয়ার্ডের দলীয় অফিস দখল করে নেওয়া, আইএনটিটিইউসির শ্রমিক নেতা শেখ সামেদকে রাস্তায় ফেলে মার দেওয়া- এই সমস্ত কিছুই এখানে তৃণমূলীরা ঘটাচ্ছে। আমরা পুলিশ প্রশাসনকে সব জানিয়েছি।” এদিকে শাসকদলের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে দক্ষিণ 24 পরগনা জেলা পশ্চিম সভাপতি অভিজিৎ দাস বলেন, “এখানে শাসক দল সর্বত্র সন্ত্রাস সৃষ্টি করছে। আমরা পুলিশ প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনের কাছে সব জানিয়েছি। এরপরও যদি এর বিহিত না হয় তাহলে আমরা এবার হাইকোর্টে যাব।” তবে বিরোধীরা এত সব অভিযোগ করলেও এই ব্যাপারে সমস্ত অভিযোগকে কার্যত উড়িয়ে দিতে দেখা গেছে দক্ষিণ 24 পরগনা জেলা তৃণমূলের সভাপতি শুভাশিস চক্রবর্তীকে। এদিন তিনি বলেন, “আসলে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের উন্নয়নমুখী কাজের সঙ্গে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগের জন্য সমস্ত মানুষ যখন জোড়াফুলের দিকে আসতে শুরু করেছে তখন সিপিএম, কংগ্রেস ও বিজেপি মিলে আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছে। এসব অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই।” একইভাবে তৃণমূলের সুরে সুর মিলিয়ে বিরোধীদের এই অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিতে দেখা গেছে ডায়মন্ডহারবার মহকুমা পুলিশ আধিকারিক মিতুন দে কেও। তবে শাসক দল এবং পুলিশ প্রশাসনের আধিকারিকরা বিরোধী দলের এই অভিযোগকে যতই উড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করুন না কেন, এখন বিরোধীদের এই অভিযোগের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন ডায়মন্ডহারবারে শাসকদলের বাড়বাড়ন্ত রোধ করতে ঠিক কি পদক্ষেপ নেয় এখন সেদিকেই তাকিয়ে সকলে। আপনার মতামত জানান -