এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > পুজোর পরেই চলে আসছে সঙ্ঘের ‘ব্রম্ভাস্ত্র’! বিধানসভা ‘যুদ্ধ-জয়ে’ আরও উজ্জীবিত গেরুয়া শিবির

পুজোর পরেই চলে আসছে সঙ্ঘের ‘ব্রম্ভাস্ত্র’! বিধানসভা ‘যুদ্ধ-জয়ে’ আরও উজ্জীবিত গেরুয়া শিবির

প্রিয় বন্ধু মিডিয়া এক্সক্লুসিভ – আম বাঙালির মনে এখন একটাই প্রশ্ন – আগামী বিধানসভা নির্বাচনে কি হবে বাংলার রঙ? সব কিছু বাধা কাটিয়ে আবার কি গোটা রাজ্য ভরসা রাখবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বের উপরে? নাকি পঞ্চায়েত-লোকসভার ‘ট্রেন্ড’ বজায় রেখে বাংলায় হতে চলেছে ‘পরিবর্তনের পরিবর্তন’ অর্থাৎ নবান্নের রঙ পাল্টে হয়ে যাবে গেরুয়া? নাকি, সব হিসাব উল্টে দিয়ে বাংলার মসনদ দখল করবে বামফ্রন্ট বা কংগ্রেস বা তাদের সম্মিলিত জোট?

প্রশ্নটা উঠছে এই কারণেই – ২০০৮ সাল থেকে বঙ্গবাসী ঘাসফুল শিবিরের তীব্র উত্থান আর বাম শিবিরের রক্তক্ষরণ দেখতেই অভ্যস্ত ছিল। ২০০৮-এর পঞ্চায়েত থেকে শুরু করে ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচন পর্যন্ত পাল্লা দিয়ে বেড়েছে তৃণমূলের ভোটব্যাঙ্ক ও আসনসংখ্যা। কিন্তু, তারপরেই ছন্দপতন – বিভিন্ন উপনির্বাচনে ইঙ্গিত মিলতে থাকে বাংলায় আসতে চলেছে গেরুয়া ঝড়। বামেদের রক্তক্ষরণ অব্যাহত রেখে, সেই ভোটব্যাঙ্ক অতি সন্তপর্ণে সরে যাচ্ছে গেরুয়া শিবিরের দিকে।

তবুও, ঘাসফুল শিবিরের দাবি ছিল ‘রাম’ শিবিরের ভোট হয়ত কিছুটা বাড়বে ‘বাম’ শিবিরের কল্যানে – কিন্তু আসন সংখ্যার বিচারে ঘাসফুল শিবির থাকবে ধরা ছোঁয়ার বাইরে। তাই তো ৪২-এ-৪২ করার স্লোগান নিয়ে লোকসভার ময়দানে নেমেছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। কিন্তু, নির্বাচনের ফলাফল বেরোতেই দেখা গেল – ঘাসফুল শিবিরের পায়ের তলার মাটি অনেকটাই সরে গেছে। বাংলায় তীব্র গেরুয়া উত্থান তো হয়েছেই, একই সঙ্গে বাম-কংগ্রেসকে কার্যত অপ্রাসঙ্গিক করে দিয়ে তারা নিশ্বাস ফেলছে ঘাসফুল শিবিরের।

স্বাভাবিকভাবেই, গেরুয়া শিবিরের নেতারা এরপরেই হুঙ্কার ছাড়েন – পরবর্তী বিধানসভা নির্বাচনেই নবান্নের দখল নেওয়ার। কিন্তু, এরই মাঝে আর দেরি না করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল ভোট বিশেষজ্ঞ প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে চুক্তি করে (দুর্জনেরা বলে থাকেন কয়েকশো কোটি টাকার চুক্তি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে বলেন, প্রশান্ত কিশোর ‘ভালোবেসে’ সাহায্য করছেন, কোনো টাকা-পয়সা ছাড়াই!)। আর দায়িত্ব নিয়েই প্রশান্ত কিশোর তৃণমূলের সংগঠন থেকে কর্মীদের চাঙ্গা করতে একের পর এক দাওয়াই দিয়ে চলেছেন।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এর পাশাপাশিই, গেরুয়া শিবিরের সাংগঠনিক ক্ষমতা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলায় লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির দুর্দান্ত ফলের পিছনে তাদের সাংগঠনিক ক্ষমতার থেকেও অনেক বেশি করে দায়ী ছিল সাধারণ ভোটারের তৃণমূলকে ভোট না দেওয়ার বাসনা। আর তা যদি সত্যি হয়, তাহলে কিন্তু লোকসভার প্রাপ্ত ধরে রাখা কষ্টকরই শুধু হবে না, কার্যত তা অসম্ভব হয়ে দাঁড়াবে। আর এর সবথেকে বড় উদাহরণ তো বিজেপি নিজেই – ২০১৪ সালের মোদী-ঝড়ে বিজেপির বাংলায় ভোট পৌঁছায় ১৭%-এ, কিন্তু ২ বছরের মধ্যে বিধানসভা নির্বাচনে তা কমে দাঁড়ায় ১০%-এ।

আর তাই গেরুয়া শিবিরের নেতারা যতই হুঙ্কার ছাড়ুন, নবান্ন থেকে তৃণমূল সরকারকে উৎখাত করবেন – কাজটা যে অতটাও সহজ হবে না, মেনে নিচ্ছেন নিরপেক্ষ মহল। তবে, বিজেপির বাংলা দখলের রাজনৈতিক ইচ্ছাতে সম্পূর্ণ সমর্থন আছে সঙ্ঘ পরিবারের। ফলে, বাংলায় রাজনৈতিক যুদ্ধজয়ে সবরকমের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে প্রস্তুত সঙ্ঘ-পরিবার বলে গেরুয়া শিবির সূত্রেই জানা যাচ্ছে। আর তাই, বঙ্গ-বিজেপির সাংগঠনিক ফাঁক-ফোকর গেলে ঘাসফুল শিবির যাতে আর কিছুতেই নবান্নের মসনদে ফিরতে না পারে তা নিশ্চিত করতে বড়সড় পদক্ষেপ নিতে চলেছে সঙ্ঘ বলে সূত্রের খবর।

বাঙালির সব থেকে বড় উৎসব দুর্গাপুজো মিটলেই সংঘের প্রায় ৪০ হাজার কার্যকর্তা বিভিন্ন রাজ্য থেকে চলে আসছে বাংলায়। প্রতি বিধানসভা পিছু গড়ে প্রায় ১,১০০ থেকে ১,৫০০ কার্যকর্তা ছড়িয়ে পড়বেন। দলীয় প্রচার, সাংগঠনিক সমন্বয় থেকে শুরু করে বিরোধীদের হেঁশেলের খবর জোগাড় – সবই নাকি করবেন তাঁরা। দুর্গাপুজোর পরে এসে, একেবারে বাংলার বিধানসভা নির্বাচন পার করেই তবে তাঁরা বাংলা ছাড়বেন বলে জানা গেছে।

স্বাভাবিকভাবেই সঙ্ঘ পরিবারের এত বড় পরিকল্পনায় রীতিমত উৎসাহিত গেরুয়া শিবির। তবে, রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা দাবি করে থাকেন, বাংলার রাজনীতি গোটা ভারতের বাকি প্রদেশের রাজনীতির থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। উত্তরপ্রদেশ, বিহার বা তামিলনাড়ুর মডেলে এখানে নির্বাচন জেতা যায় না। বাংলার দখল নিতে গেলে, আগে বাংলার ‘পাল্স’ বোঝা দরকার, নাহলে হুলটুকুও ফোটানো যাবে না! তবে, গেরুয়া শিবির যখন এতবড় পরিকল্পনা নিয়েছে – সেকথা কি তাদের জানা নেই? উঠছে সেই প্রশ্ন – ফলে এখন দেখার, দুর্গাপুজোর পর সঙ্ঘের ‘ব্রম্ভাস্ত্র’-এর প্রয়োগ হলে কোন পথে যায় বঙ্গের রাজনীতি।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!