এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > সংক্রমণের ভয় উড়িয়ে নবমী-দশমীর কলকাতায় থিকথিকে ভিড়! নতুন করে ঘুম উড়তে চলেছে স্বাস্থ্য কর্তাদের

সংক্রমণের ভয় উড়িয়ে নবমী-দশমীর কলকাতায় থিকথিকে ভিড়! নতুন করে ঘুম উড়তে চলেছে স্বাস্থ্য কর্তাদের


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – এবছর পুজো নিয়ে শুরু থেকেই ছিল চূড়ান্ত টালাবাহানা। পুজো হবে কি হবে না, এই উৎকণ্ঠাতেই শুরুর দিকে দিন কাটিয়েছে বাংলার আমজনতা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত রাজ্য সরকার পুজো হবার ব্যাপারে গ্রীন সিগন্যাল দেয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও প্রশাসনিক বৈঠক ডেকে তড়িঘড়ি পুজো কমিটিগুলিকে নির্দেশ দেন করোনাবিধি মেনে পুজো করার জন্য। প্যান্ডেলে যাতে ভিড় হতে না পারে, সেদিকে যাতে কড়া নজর রাখা হয় সেকথাও জানান তিনি। একই সাথে প্রশাসনও নজরদারিতে লেগে পড়ে। এরইমধ্যে আবার তৃতীয়াতে মহামান্য কলকাতা হায়কোর্টের পক্ষ থেকে নতুন নির্দেশ জারি হয় পুজোর বিধিনিষেধ নিয়ে।

কিন্তু এত কিছু করেও ভিড় আটকাতে ব্যাপক বেগ পেতে হয়েছে প্রশাসনকে বহু জায়গাতেই। কলকাতায় পুজোর কদিন রাস্তায় প্রচুর মানুষ দেখা গিয়েছে। সুরুচি সংঘের পূজা মন্ডপে প্রবেশের মুখে এক পুলিশকর্মী নজর রাখছিলেন মাস্ক ছাড়া কেউ ভেতরে ঢুকেছে কিনা! সে সময়ে এক মাস্কহীন যুবককে চোখে পড়ে। তাঁর হাতে মাস্ক তুলে দেওয়ার পরে তিনি পাল্টা জানান, 20 থেকে 45 এর মধ্যে করোনা হচ্ছেনা। আর তাঁর বয়স 29। এই অভাবনীয় যুক্তি শুনে পুলিশও হকচকিয়ে যায়। তাঁকে কড়া ধমক দিয়ে বেশ কিছুক্ষণ দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। শেষে করোনা বিধি লঙ্ঘনকারীর তালিকায় নাম ঠিকানা, ফোন নাম্বার লিখে ওই যুবককে ছেড়ে দেওয়া হয়। বরাবরই পুজোর জনস্রোতে বয়সের কোনো সীমারেখা থাকেনা।

কিন্তু এবছর পরিস্থিতি অন্য। উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, আদালতের নির্দেশের পরেও এবছর কারা কারা পূজো দেখতে বেরিয়েছে, সেদিকে কড়া নজর ছিল। ষষ্ঠী থেকে অষ্টমী পর্যন্ত ভিড়ের সমীক্ষা করে দেখা গিয়েছে সব মণ্ডপে 20 থেকে 45 বছরের ভিড়। 45 থেকে 60 বছরের ভিড়ের সংখ্যা হাতেগোনা এবং ষাটের ওপরে পুজো প্যান্ডেলে দর্শনার্থী নেই বললেই চলে। নবমীর সন্ধ্যাতেও একই ট্রেন্ড। অন্যদিকে ফোরাম ফর দুর্গোৎসব এর সাধারণ সম্পাদক শাশ্বত বসু জানিয়েছেন, যতদিন এগোচ্ছে মানুষের ভয় ততই কমছে। এবং সবথেকে ভয় কম কমবয়সী ছেলেমেয়েদের।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

আর এই বক্তব্যের সঙ্গে তাল মিলিয়ে একই প্রতিচ্ছবি দেখা গিয়েছে এদিন হাতিবাগান, বাগবাজার, কাশি বোস লেন, একডালিয়া, দেশপ্রিয় পার্ক, নাকতলা, উদয়ন এর মতন প্রতিটি পুজোয়। চেতলা অগ্রণীর সামনে ভিড় এতটাই বেড়ে গিয়েছিল যে সেখানে মাস্ক খুলে সেলফি নিতে ব্যস্ত কম বয়সী ছেলেমেয়েদের সামলাতেই পুলিশকে হিমশিম খেতে হয়েছে। শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাবে সন্ধ্যায় ভিড়ের মধ্যে রীতিমতো তর্ক-বিতর্কও শুরু হলো দর্শনার্থী এবং উদ্যোক্তাদের মধ্যে ঠাকুরের সামনে যাওয়া নিয়ে। তবে বেশিরভাগ পুজো কর্তারাই এ বছর জানিয়েছেন, কম বয়সীরাই সবথেকে বেশি নাজেহাল করেছে। কারণ এবছর তাঁদেরকে অত্যন্ত বেপরোয়া হিসেবে রাস্তায় দেখা গেছে। এমনকি মাস্ক খুলে তাঁরা স্বচ্ছন্দে হেঁটে বেরিয়েছে।

অন্যদিকে এ প্রসঙ্গে চিকিৎসক কুনাল সরকার জানিয়েছেন, আনন্দ-উৎসবে এত মাস বাধা পড়েছে। তারপর উৎসব আসতেই বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাসে ভেসে গিয়েছে কম বয়সীরা। তিনি আরও জানিয়েছেন, সামনে কালীপুজো। তখন কিন্তু নিয়ন্ত্রণ রাখা কঠিন হবে। নিজেরা আনন্দে মাততে গিয়ে কমবয়সীরা কিন্তু তাঁদের পরিবারের জন্য বিপজ্জনক হয়ে উঠছেন। অন্যদিকে চিকিৎসক অনির্বাণ নিয়োগী জানিয়েছেন, কুড়ি থেকে 45 বছর মানুষের বিপদ কম এ কথা অত্যন্ত ভ্রান্ত। কো-মর্বিডিটি শুধু বয়সের উপর নির্ভর করেনা, যারা বিপদ বুঝে বাড়িতে কাটাচ্ছেন মাত্র একজন মানুষের বেপরোয়া আচরণ সেই পরিবারের কাছে ভয়ংকর হয়ে উঠতে পারে।

নবমীর রাতেই দেখা গিয়েছে সরকারি নিষেধাজ্ঞা কিংবা হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা কোন কিছুই আর কাজে আসেনি। অন্যদিকে পূজার আগে থেকেই আশঙ্কা ছিল উৎসবের দিন শেষ হওয়ার পর শুরু হবে ভয়ঙ্কর করোনা সংক্রমণ। আর এ বছর পুজোর ভিড় কিন্তু সেদিকেই ইঙ্গিত দিচ্ছে। রীতিমতো আতঙ্কিত চিকিৎসকরা। পাশাপাশি ঘুম উড়তে চলেছে স্বাস্থ্য কর্তাদের বলে মনে করা হচ্ছে। তবে দশমীর পর পরিস্থিতি কি থাকে, সেদিকে কড়া নজর রাখছে ওয়াকিবহাল মহল।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!