সংখ্যালঘু-মতুয়া-গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অংক সামলে নদীয়াকে আবার ঘাসফুলময় করতে মমতার পঞ্চবান কলকাতা নদীয়া-২৪ পরগনা রাজ্য July 24, 2020 প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –দলের নানা পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ভিডিও কনফারেন্সে মুখ খুলেছিলেন মহুয়া মৈত্র। যার ফলে জেলার অনেক নেতার কাছে তিনি সমালোচনার শিকার হয়েছিলেন। কিন্তু বৃহস্পতিবার সাংগঠনিক বৈঠকে গোটা নদীয়া জেলার দায়িত্ব সেই মহুয়া মৈত্রের কাধেই দিয়ে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুঝিয়ে দিলেন, নদীয়া জেলার ক্ষেত্রে মহুয়া মৈত্রই সমস্ত কিছু সামলাবেন। স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনায় ব্যাপক গুঞ্জন তৈরি হয়েছে গোটা নদীয়া জেলা জুড়ে। জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সাংগঠনিক বৈঠকে নদীয়ার দুটি সাংগঠনিক জেলা কৃষ্ণনগর এবং রানাঘাটকে একসাথে মিশিয়ে দিয়ে পুরো জেলার সভাপতি মহুয়া মৈত্রকে করে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফলে বিধানসভা ভোটের আগে মহুয়া মৈত্র যে নদীয়া জেলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অন্যতম প্রধান সেনাপতি, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। বস্তুত, গত লোকসভা নির্বাচনে নদীয়া জেলার রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রটি হাতছাড়া হওয়ার পর জেলা সভাপতির পদ থেকে গৌরীশংকর দত্তকে সরিয়ে দেওয়া হয়। যেখানে রানাঘাট এবং কৃষ্ণনগরকে দুই ভাগে ভাগ করে রানাঘাটের দায়িত্ব শংকর সিংহ এবং কৃষ্ণনগরের দায়িত্ব মহুয়া মৈত্রকে দেয় তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব। কিন্তু সম্প্রতি বিভিন্ন ঘটনায় মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে জেলা নেতৃত্বের একাংশ রাজ্য নেতৃত্বের কাছে অভিযোগ জানাতে শুরু করেছিল। স্বাভাবিকভাবেই বৃহস্পতিবার যখন সাংগঠনিক বৈঠক শুরু হয়, তখন মনে করা হয়েছিল, এবার হয়ত মহুয়া মৈত্রের ডানা ছাটা হতে পারে। কিন্তু তেমনটা তো হলই না, উল্টে দুই সাংগঠনিক জেলাকে এক করে দিয়ে গোটা জেলার দায়িত্ব মহুয়া মৈত্রকে দিয়ে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু হঠাৎ করে কেন মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে এত অভিযোগ যাওয়ার পরেও, তার ওপর বেশি ভরসা রাখলেন তৃণমূল নেত্রী? আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - অনেকে বলছেন, বিধানসভা ভোটে নদীয়া জেলার লড়াইটা অত্যন্ত কঠিন। বিজেপির প্রভাব দিনকে দিন বাড়ছে। তাই এই পরিস্থিতিতে দৌড়ঝাঁপ করতে পারা মহুয়া মৈত্রকে বাড়তি দায়িত্ব দিয়ে মতুয়া ভোট, সংখ্যালঘু ভোট এবং গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকে সামাল দিতে চাইছেন তৃণমূল নেত্রী। এদিকে এতদিন রানাঘাটের জেলা সভাপতির দায়িত্ব সামলানো শংকর সিংহকে রাজ্য কমিটির সহ-সভাপতি করা হয়েছে। যার ফলে অনেকেই বলছেন, হয়ত জেলা রাজনীতিতে শংকরবাবুকে কিছুটা অপ্রাসঙ্গিক করে দিয়ে রাজ্যে তাকে একটা জায়গা দিয়ে সন্তুষ্ট রাখার চেষ্টা করল তৃণমূল কংগ্রেস। যদিও বা এই ব্যাপারে শংকরবাবু বলেন, “দল আমাকে যা দায়িত্ব দিয়েছে আমি সেটাই পালন করব।” অন্যদিকে মতুয়া ভোট বড় ফ্যাক্টর হওয়ার কারণে প্রাক্তন বিধায়ক তথা বর্তমানে রাজ্যসভার সদস্য আবিররঞ্জন বিশ্বাসকে জেলার পাঁচটি মতুয়া প্রভাবিত বিধানসভা কেন্দ্রের কো-অর্ডিনেটর করা হয়েছে। অন্যদিকে সংখ্যালঘু ভোটের কথা মাথায় রেখে পুরনো দিনের নেতা বলে পরিচিত সবসময় নাসিরূদ্দিন আহমেদকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে কৃষ্ণনগর এবং তেহট্ট মহকুমার। অর্থাৎ সবদিক মিলিয়ে মহুয়া মৈত্রকে মাথায় রেখে নদীয়া জেলার সংগঠনে কিছুটা সামঞ্জস্য বজায় রাখতে চেয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নদীয়ার এই পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যেমন ভোটব্যাঙ্কের ব্যাপারটি মাথায় রেখেছেন, ঠিক তেমনই স্বচ্ছ এবং সাংগঠনিক ব্যক্তিকে সামনের সারিতে এনে নিজেদের সংগঠন শক্তিশালী করার চেষ্টা করেছেন। এখন এই সমস্ত কিছু বিষয়ের মধ্যে দিয়ে নদীয়ার সংগঠনকে চাঙ্গা করার চেষ্টা হলেও, তা কতটা সফলতা পায়, সেদিকেই নজর থাকবে রাজনৈতিক মহলের। আপনার মতামত জানান -