এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > উত্তরবঙ্গ > শক্তি বাড়াতে মমতা নিয়ে এলেন যাঁকে তিনিই ‘অশান্তির’ কারণ? বিস্ফোরক অভিযোগে তুলকালাম তৃণমূলে

শক্তি বাড়াতে মমতা নিয়ে এলেন যাঁকে তিনিই ‘অশান্তির’ কারণ? বিস্ফোরক অভিযোগে তুলকালাম তৃণমূলে


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – পাহাড়ের মানুষ এখন আবার অশান্তির আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন। পুজোর সময়ে আত্মপ্রকাশ করেছেন তিন বছর ধরে ফেরার থাকা বিমল গুরুং। তাও খোদ কলকাতার বুকে। খুব স্বাভাবিকভাবেই জল্পনা ওঠে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বিমল গুরুংয়ের আগাম আলোচনা নিয়ে। বিরোধীদের পক্ষ থেকে ক্রমশ আওয়াজ উঠতে থাকে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতার বুকে বিমল গুরুংকে হাজির করালেন নিজস্বার্থে। কিন্তু ক্রমশ বিমল গুরুংকে নিয়ে ঘনিয়ে উঠছে পাহাড়ে অশান্তির মেঘ। কিছুদিন আগেই বিমল গুরুং সোজাসুজি গেরুয়া শিবিরের অন্দরে প্রবেশ করেছিলেন দিল্লি গিয়ে।

সেখানে কেন্দ্রীয় স্তরে গোর্খাল্যান্ড নিয়ে আলোচনা হয় আর তারপরেই একেবারে কলকাতার বুকে আত্মপ্রকাশ বিমল গুরুংয়ের। অন্যদিকে পাহাড়ে বিনয় তামাং এবং অনিত থাপারা স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, বিমল গুরুং পাহাড়ে আসলে অশান্তি অনিবার্য। তাই বিমল গুরুংকে আটকাতে সবরকম ব্যবস্থা নিচ্ছে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার বর্তমান নেতৃত্ব। এদিকে নবান্ন সূত্রে জানা গেছে, আগামী 3 রা নভেম্বর অর্থাৎ মঙ্গলবার দুপুরে পাহাড় থেকে বিনয় তামাং এবং অনিত থাপা দেখা করতে আসছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে এবং সেখানেই আশা করা যাচ্ছে বিমল গুরুংকে নিয়ে জোরদার আলোচনা হবে। পাহাড়ের মিটিং মিছিল থেকে প্রায় প্রতিদিনই বলা হচ্ছে, গুরুংকে পাহাড়ে উঠতে দেওয়া হবেনা।

শনিবারও কার্শিয়াং বাজার এবং মিরিক বাজারে প্রকাশ্য সমাবেশ করে মোর্চার বিনয় তামাং শিবির। এবং সেখানে স্পষ্ট করে দেওয়া হয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্য সরকারের কাছে অনুরোধ করা হবে গুরুংকে পাহাড়ে ঢুকতে না দেওয়ার ব্যাপারে। অন্যদিকে বিনয় তামাং এবং অনিল থাপা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করার খবর এখনো পর্যন্ত সরকারিভাবে স্বীকার করা হয়নি নবান্নর তরফে। এদিন কার্শিয়াং টুরিস্ট পয়েন্ট রেলস্টেশন এবং মিরিক বাজারের কৃষ্ণনগরে বিনয় তামাং শিবিরের একটি প্রকাশ্য সভা হয়। এর আগে মোর্চা সমর্থকরা বিভিন্ন জায়গায় মিছিল করেন।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

মিছিল থেকে গুরুং বিরোধী স্লোগান ওঠে। অন্যদিকে বিনয় ঘনিষ্ঠ মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটির মুখপাত্র কেশবরাজ পোখরেল জানিয়েছেন, বিমল গুরুংকে কেউ পাহাড় ছাড়া করেনি। তিনি নিজের ইচ্ছায় এতদিন পাহাড় থেকে চলে গিয়েছিলেন। যাবার আগে পর্যন্ত তিনি পাহাড়ে অশান্তির আগুন জ্বালিয়ে গিয়েছিলেন। বর্তমানে বিনয় তামাংয়ের শাসনকালে পাহাড়ে শান্তি রয়েছে। তাই সেই শান্তি যাতে বিঘ্নিত না হয়, সে ব্যাপারেই উঠে-পড়ে লেগেছে বিনয় তামাং শিবির। পাহাড়ের শান্তি যাতে বিঘ্নিত না হয় তার জন্য মোর্চা নেতারা বারবার বলে আসছেন, মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তাঁরা অনুরোধ জানাবেন। পাশাপাশি বিনয় তামাং এর ওপর আস্থা প্রসঙ্গটিও উঠছে।

বিভিন্ন আলাপ-আলোচনায় ইতিমধ্যেই গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার বিভিন্ন ছোট বড় নেতা জানিয়েছেন, বিনয় তামাং পাহাড়ের মানুষের সঙ্গে রয়েছেন, পাহাড়কে শান্ত রেখেছেন। এদিন একটি সভায় বিনয় তামাং ঘনিষ্ঠ পুরাণ থামি বিমল গুরুংয়ের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, গুরুংকে স্বাগত জানাচ্ছেন যারা পাহাড়ে, তাঁরা প্রত্যেকেই বিশ্বাসঘাতক। পাহাড় গত তিন বছর যেরকম শান্ত ছিল, এখনও সেরকমই শান্ত থাকবে বলে দাবি করেন এদিন পুরাণ থাপা।

অন্যদিকে দুর্গাপুজোর মুহূর্তে কলকাতায় আত্মপ্রকাশ করে বিমল গুরুং এবং রোশন গিরি জানিয়েছেন, পরবর্তী বিধানসভা নির্বাচনে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তাঁরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই দেখতে চান। আর এই নিয়েই শুরু হয়েছে প্রবল রাজনৈতিক আলোড়ন। অন্যদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে গোর্খাল্যান্ডের ব্যাপারে রাজনৈতিক সমাধান আশা করেছেন বিমল গুরুংরা। অতএব স্পষ্ট হয়ে উঠছে, পাহাড়ে ক্ষমতায় থাকা বিনয় তামাং গোষ্ঠীর সঙ্গে বিমল গুরুং এবং তাঁর অনুগামীদের তীব্র সংঘাত।

তাই বিকল্প পথ সমাধানের সূত্র বার করতে হবে যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই সেকথা অনিবার্য। এদিকে সামনেই আসছে একুশের বিধানসভা নির্বাচন। আর সেদিকে নজর দিয়ে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল এই মুহূর্তে তাঁদের সংগঠন গোছানোর কাজে মন দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে পাহাড়ে অশান্তির আবহ বিপদ ডেকে আনতে পারে শাসকদলের বলে মত বিষেষজ্ঞদের। অতএব বিমল গুরুংয়ের আত্মপ্রকাশের ফলে পাহাড়ের সাথে সাথে রাজ্যের তৃণমূল গোষ্ঠীর মধ্যেও শুরু হয়েছে অন্তর্দ্বন্দ্ব। আপাতত এই ঘটনার মোড় কোন দিকে নেয়, সেদিকেই এখন লক্ষ্য রাজনৈতিক মহলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!