এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > বিজেপির লালবাজার অভিযান – মৃত্যুমুখ থেকে ফিরে এলেন যুবনেতা শঙ্কুদেব পণ্ডা

বিজেপির লালবাজার অভিযান – মৃত্যুমুখ থেকে ফিরে এলেন যুবনেতা শঙ্কুদেব পণ্ডা


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া এক্সক্লুসিভ – রাজ‍্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক অবনতির বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে গতকাল রাজ‍্য বিজেপি লালবাজার অভিযানের কর্মসূচী নিয়েছিল। মূলত সন্দেশখালির ন‍্যাজাট সহ গোটা রাজ‍্য জুড়ে যেভাবে বিজেপি কর্মী সমর্থকদের ওপর আক্রমণ নেমে আসছে, তারই প্রতিবাদে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল বলে গেরুয়া শিবিরের দাবি। আর সেই মিছিলে পুলিশের জলকামান চালানো থেকে শুরু করে কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটানো নিয়ে সারাদিন ধরেই চলেছে ধুন্ধুমার।

কিন্তু সেই মিছিলে অংশগ্রহণ করে কার্যত মৃত্যুমুখ থেকে ফিরে এলেন বিজেপির যুবনেতা শঙ্কুদেব পণ্ডা। গতকাল সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার থেকে বিজেপির মিছিল শুরু হতেই দেখা যায়, সেই মিছিলের একদম সামনের সারিতে রয়েছেন শঙ্কুদেব পণ্ডা ও অর্জুন সিং। আর তাঁদের ঠিক পিছনেই আছেন কৈলাশ বিজয়বর্গীয়, মুকুল রায় বা সুরিন্দর সিংহ আহলুওয়ালিয়াদের মত বিজেপির প্রথম সারির নেতারা। এই নেতারা সকলেই ওয়াই প্লাস বা জেড ক্যাটাগরির কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা পান। সাধারণত, এইধরনের মিছিল ‘হ্যান্ডেল’ করার স্বাভাবিক প্রক্রিয়া হয়, পুলিশের কোনো উচ্চপদস্থ আধিকারিক এসে মিছিলের নেতৃত্ব দেওয়া প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে ‘অভিযানের’ শান্তিপূর্ণ পরিসমাপ্তি ঘটানো।

কিন্তু মিছিল শুরুর কিছুক্ষনের মধ্যেই পুলিশের তরফে এই ধরনের কোনো সদর্থক পদক্ষেপের বদলে, সরাসরি জলকামান চালানো শুরু হয়। আর তার কিছুক্ষনের মধ্যেই শুরু হয় কাঁদানে গ্যাসের সেল ছোঁড়া। আর প্রথম সেলটিই এসে ‘টার্গেট’ করে মিছিলের একদম সামনে থাকা অর্জুন সিং ও শঙ্কুদেব পণ্ডাকে। অর্জুন সিংকে তাঁর নিরাপত্তারক্ষীরা কোনও রকমে সরিয়ে নিয়ে গেলেও, শঙ্কুদেব পণ্ডা সরাসরি সেই গ্যাসের মধ্যে পরে যান। ফলে সাথেসাথেই তাঁর ‘ব্ল্যাক আউট’ হয়ে যায়। তাঁকে কোনোরকমে রাস্তার সাধারণ ট্যাক্সি করে সল্টলেকের সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

শঙ্কুদেবের জ্ঞান তখনও ফেরেনি! রাজ্য সরকারের অধীন ওই সরকারি হাসপাতালের ডাক্তাররা পরীক্ষা করে দেখেন শঙ্কুদেবের রক্তচাপ বেশ উঁচুর দিকে, তাঁকে সাথে সাথে ইমার্জেন্সিতে ভর্তি করে নিয়ে তাঁকে অক্সিজেন দেওয়া শুরু হয়। কিন্তু তারপরেও তাঁর শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি হতে থাকে, রক্তচাপ আরও বেড়ে যায়, শুরু হয়ে যায় বমি করার প্রবণতা। তাঁর শারীরিক অবস্থা এতটাই খারাপ হয়ে যায় যে, কোনোরকম ঝুঁকি না নিয়ে ওই সরকারি হাসপাতালের ডাক্তাররা শঙ্কুদেবকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। কিন্তু, পুলিশের জলকামান ও কাঁদানে গ্যাসের দাপটে সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ তখন কার্যত রণক্ষেত্র!

এদিকে, শঙ্কুদেব যেহেতু কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা পান, তাঁর শারীরিক অবস্থার খবর পেয়ে সল্টলেক হাসপাতালে পৌঁছে গেছেন সিআইএসএফের আধিকারিকেরা। তাঁরাই সিদ্ধান্ত নেন, ওই পরিস্থিতিতে শঙ্কুদেবকে মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়ার পরিস্থিতি নেই। তাই তাঁকে সিআইএসএফের ‘বেস চিকিৎসাকেন্দ্র’ সল্টলেক আমরি নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেও, তাঁকে ডাক্তাররা দেখেই ইমার্জেন্সিতে ভর্তি করেন, তাঁর ইসিজিও হয় – কেননা তাঁর রক্তচাপ তখন ২১০ ছাড়িয়ে গেছে, যে কোন মুহূর্তে সেরিব্রাল অ্যাট্যাকের সম্ভাবনা রয়েছে। ইসিজিতে দেখা যায় বেশ গন্ডগোল, কিন্তু তার মধ্যেই ভালো খবর শঙ্কুদেবের জ্ঞান ততক্ষনে ফেরত এসেছে, রক্তচাপও কিছুটা কমতে শুরু করেছে।

কিন্তু, শঙ্কুদেবের শারীরিক অবস্থা দেখে ডাক্তাররা তাঁকে ভর্তি করার পরিকল্পনা করেন। কিন্তু নাছোড় শঙ্কু জানিয়ে দেন, কাঁদানে গ্যাসের চোটে আমার রক্তচাপ বেড়ে গেছে, হার্টও দুর্বল, বমির প্রবণতা রয়েছে, গলা জ্বালা করছে! এর আগেও বহু আন্দোলন-অভিযান করেছি, বহু কাঁদানে গ্যাসের সেল খেয়েছি – কিন্তু, কোনোদিন এই পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয় নি। নিশ্চয় এই গ্যাসের মধ্যে কিছু ছিল – আর তাতে আমার যদি এই অবস্থা হয়, আমার কর্মীদের কি হয়েছে? কর্মীদের খোঁজ না নিয়ে আমি হাসপাতালে পরে থাকতে পারি না, আমি কিছুতেই ভর্তি হব না! কিন্তু, তাঁর শারীরিক অবস্থা দেখে ডাক্তাররা কোনো ঝুঁকি নিতে রাজি ছিলেন না।

শেষে অনেক টালবাহানার পরে রাত্রের দিকে শঙ্কু ‘সেল্ফ ডিক্লেরেশন বন্ডে’ সই করে আমরি থেকে বেরোন। এই প্রসঙ্গে, শঙ্কুদেবের এক ঘনিষ্ঠ নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, তৃণমূল নাকি প্রচার করছে শঙ্কুদেব পণ্ডা ‘ফুটেজ’ খেতে এইসব ‘নাটক’ করছেন! কিন্তু, একটা কথা মাথায় রাখবেন, তাঁর চিকিৎসা প্রথমে কোনো নার্সিংহোমে হয় নি, হয়েছে সরকারি হাসপাতালে – যে দপ্তরের মন্ত্রীর নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সরকারি হাসপাতালের ডাক্তারই শারীরিক অবস্থা দেখে তড়িঘড়ি মেডিক্যাল কলেজে রেফার করেন! শঙ্কুদেব পণ্ডার এই ধরনের কোনো ‘সস্তা’ রাজনীতি করার কোনোদিন দরকার পরে নি, আগামীদিনেও পড়বে না!

অসুস্থ হওয়ার পর সল্টলেকের সরকারি হাসপাতালে ইমারজেন্সিতে শঙ্কুদেব পণ্ডার শারীরিক অবস্থা ও চিকিৎসার বিবরণের প্রেসক্রিপশন।
সল্টলেকের সরকারি হাসপাতাল থেকে শঙ্কুদেব পণ্ডাকে মেডিক্যাল কলেজে রেফার করার ডাক্তারি সিদ্ধান্ত।
আমরিতে ভর্তি হওয়ার পর শঙ্কুদেব পণ্ডার ব্লাড-প্রেসার যখন ২১০-১৩০।
শঙ্কুদেব পণ্ডার ইসিজি রিপোর্ট।
আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!