প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুরু করেছেন দুয়ারে সরকার কর্মসূচি। এই কর্মসূচির মাধ্যমে বিভিন্ন প্রকল্পকে মানুষের হাতের নাগালে পৌঁছে দিচ্ছে রাজ্য সরকার। আর এবার শুধুমাত্র দুয়ারে সরকার কর্মসূচিতেই না থেমে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও একটি বড় পরিকল্পনা গ্রহণ করলেন রাজ্যের মানুষকে কাছে পাওয়ার জন্য। জানা যাচ্ছে, দুয়ারে সরকার কর্মসূচির পাশাপাশি এবার রাজ্য জুড়ে শুরু হতে চলেছে বঙ্গধ্বনী কর্মসূচি।রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেস শিবির থেকে এই ঘোষণায় করা হয়েছে।

সূত্রের খবর, এই কর্মসূচির মাধ্যমে বাড়ি বাড়ি গিয়ে রাজ্য সরকারের একাধিক প্রকল্প এবং উন্নয়নের প্রচার চালানো হবে, এবং এই কর্মসূচিতে সামিল হবেন রাজ্য সরকারি কর্মীরা। সেইরকমই নির্দেশ দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, দুয়ারে সরকার কর্মসূচির ব্যাপক সাফল্যের পর এবার বঙ্গধ্বনী কর্মসূচি শুরু করা হচ্ছে বাংলায়। তৃণমূল নেতা ও কর্মীরা এই কর্মসূচি সফল করতে রাজ্যের প্রতিটি বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচার চালাবেন সরকারি কাজের সাফল্য নিয়ে। পাশাপাশি এই কর্মসূচিতে সরকারি কর্মী সংগঠনগুলোকেও সামিল করা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। প্রসঙ্গত, গতকাল তৃণমূল সরকারি কর্মী সংগঠনগুলির প্রতিনিধির সঙ্গে একটি বৈঠক করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

সেখানেই কর্মী সংগঠনের নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে সরকারি কাজের খতিয়ান এবং উন্নয়নের হিসাব দেওয়ার কথা জানান তৃণমূল নেত্রী। মূলত, একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যের উন্নয়নকেই হাতিয়ার করছে মমতা সরকার বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। আর এই উন্নয়নের হাতিয়ার দিয়েই রাজ্যের মানুষকে কাছে টেনে তৃণমূলের ভোট ব্যাংক শক্তিশালী করে তুলতে চাইছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। আর সেই উদ্দেশ্যেই একের পর এক কর্মসূচী। জানা যাচ্ছে, দুয়ারে সরকার কর্মসূচিতে ব্যাপক সাড়া মিলেছে। রাজ্যের জেলায়, জেলায়, শহরে, শহরে, বিভিন্ন পাড়ায় দলের নেতাকর্মীরা দুয়ারে সরকার কর্মসূচি নিয়ে মানুষের কাছে পৌঁছে গিয়েছিল।

এমনকি বাঁকুড়ায় দুয়ারে সরকার কর্মসূচি ঘোষণার পর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই বাঁকুড়া আদিবাসী পাড়ায় গিয়ে তাঁদের অভাব অভিযোগ শোনেন। প্রত্যেকে সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন কিনা তা তিনি জানতে চান। আর এবার সেই একই পথে হেঁটে নতুন করে শুরু হচ্ছে বঙ্গধ্বনী কর্মসূচি। মূলত ঘরে ঘরে সরকারি উন্নয়ন কতটা পৌঁছেছে, সে কথা জানানোই মূল উদ্দেশ্য। অন্যদিকে রাজ্য বিজেপির সাথে সাথে কেন্দ্রীয় বিজেপি সরকারকেও আক্রমণ করতে এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কৃষক আন্দোলনকে হাতিয়ার করে তুলতে চলেছেন বলে জানা যাচ্ছে। ইতিমধ্যেই মোদি সরকারের কৃষি আইনের বিরোধিতায় দিল্লির রাজপথ হয়ে উঠেছে উত্তাল।

সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই পাঞ্জাব, হরিয়ানার কৃষকদের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। দলনেত্রীর নির্দেশে ডেরেক ও’ব্রায়েন হরিয়ানার উদ্দেশ্যে রওনা হচ্ছেন। সিঙ্গুরের জমি আন্দোলনের কথা মনে করিয়ে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দেশজুড়ে কৃষক আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার কথা বলেছেন। এই লড়াইকে আরও জোরদার করার দিকেই ইঙ্গিত দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রসঙ্গত, লোকসভা নির্বাচনের পর থেকেই রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে একের পর এক কর্মসূচি চলছে।

দিদিকে বল কর্মসূচি দিয়ে রাজ্যের মানুষের কাছাকাছি পৌঁছানোর চেষ্টা চালিয়েছিলেন প্রথমে মুখ্যমন্ত্রী। আর তারপর থেকেই রাজ্যের মানুষকে পাশে পাওয়ার জন্য একের পর এক পদক্ষেপ তৃণমূল নেত্রীর। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে যাবতীয় পরিকল্পনার সৃষ্টিকর্তা মূলত প্রশান্ত কিশোর। রাজ্যের মানুষকে কাছে টানার ইঙ্গিত দিয়েই এই বঙ্গধ্বনী পরিকল্পনা। আর সেক্ষেত্রে গত পাঁচ বছরের উন্নয়নের খতিয়ানকে তুলে ধরা হচ্ছে বলে জানা যাচ্ছে।