এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > পরিকল্পনামাফিক কৃষির উন্নতি এবং সেচ ব্যবস্থার মাধ্যমে সিঙ্গুর নিয়ে বড়সড় দাবী রাজ্যসরকারের

পরিকল্পনামাফিক কৃষির উন্নতি এবং সেচ ব্যবস্থার মাধ্যমে সিঙ্গুর নিয়ে বড়সড় দাবী রাজ্যসরকারের


রাজ্যের ক্ষমতায় আসার আগের থেকেই সিঙ্গুর নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সচেতন। আর তার প্রমাণ রেখে গিয়েছে নেত্রীর সক্রিয় সহযোগিতায় এবং নেতৃত্বে ২০০৬ সালের সিঙ্গুর জমি আন্দোলনের সফলতা। ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার পর পূর্ব প্রতিশ্রুতি মতো এখনো সিঙ্গুরের সব চাষীরা জমি ফেরত পাননি। এখনো জমি মিউটেশন করতে গিয়ে তাঁরা নানান সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। সেই বিতর্কিত অধ্যায়ের প্রেক্ষিতেই রাজ্যসরকার লাগাতার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সিঙ্গুরের চাষীদের প্রাপ্যটুকু পাইয়ে দেওয়ার।

চলতি বিধানসভার অধিবেশনে সিপিএম বিধায়ক সমর হাজরার এক প্রশ্নের জবাবে কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় দাবী করলেন-সিঙ্গুরে অধিগৃহীত জমির মধ্যে ৯৫৫.৯০ একর জমিই চাষযোগ্য করে তোলা হয়েছে। পরিকল্পনা মাফিক কৃষির উন্নতি এবং সেচ ব্যবস্থার জন্যে অধিগৃহীত জমির কিছুটা অংশই ব্যবহার করা হয়েছে যা কৃষকদের জমির মধ্যে পড়ছেই না। রাস্তা,সেচ,খাল,নালা ও অগভীর নলকূল ইত্যাদি তৈরিতেই ওই জমি কাজে লাগানো হবে।

এছাড়াও দাবী করেন,৯৫৫ একর জমিতে সর্ষে,কলাই,সব্জি,তিল,ভুট্টা ও পাট চাষ করা হচ্ছে বর্তমানে। তবে দাবী মানতে নারাজ বিরোধীরা। তাঁদের বক্তব্য,মাত্র ৩৭০ একর জমিই চাষযোগ্য করা হয়েছে সিঙ্গুরে। তবে কৃষিমন্ত্রীর জানালেন,সিঙ্গুরে ৯৫৫ একর জমিতেই সারা বছর ধরে নানান ধরনের চাষবাস করা হচ্ছে। রাজ্যসরকারের তরফ থেকে বিনা পয়সায় বিভিন্ন শস্যের বীজও দেওয়া হচ্ছে কৃষকদের।

মুখ্যমন্ত্রী সিঙ্গুরের অনিচ্ছুক চাষীদের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন,তা তিনি পালন করছেন বলেই দাবী করলেন কৃষিমন্ত্রী। এবং এটাও দাবীতে জানালেন,সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মতোই কৃষকদের প্রাপ্য জমি তুলে দেওয়া হয়েছে। বিক্ষুব্ধ চাষীদের পাশে সমস্ত সহায়তার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার সবসময়ই উপস্থিত থাকবে,এমনটাই আশ্বাস দিলেন তিনি।

কংগ্রেস বিধায়ক অসিত মিত্রের এক প্রশ্নের জবাবে কৃষিমন্ত্রী জানালেন,২০১৬-১৭ কৃষিবর্ষের হিসেব অনুসারে রাজ্যে কৃষিজমির পরিমাণ হল ৫৬ লক্ষ ৩২ হাজার ৫৯৫ হেক্টর। গত ছ’বছরে ৫৪ হাজার ৭৭০ হেক্টর জমি কৃষিজমিতে রূপান্তরিত করা হয়েছে। বর্তমান কৃষিবর্ষে আরও ১০ হাজার হেক্টর জমি কৃষিযোগ্য করার পরিকল্পনা রয়েছে। ২০১০-১১ কৃষিবর্ষে মোট খাদ্যশস্যের উৎপাদন ছিল ১ কোটি ৪৮ লক্ষ ১১ হাজার ১ টন। ২০১৬-১৭ কৃষিবর্ষে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ৭৫ লক্ষ ৫২ হাজার ৭৫৪ টন। এরপরও একটি অতিরিক্ত প্রশ্ন করে ফেলেন অসিত বাবু।

তার উত্তর দিতে গিয়ে তিনি জানান,হেক্টর প্রতি জমিতে রাসায়নিক সারের ব্যবহার আগের থেকে অনেকটাই কমে গিয়েছে। প্রতি হেক্টর জমিতে ১৯০ কেজি রাসায়নিক সারের বদলে এখন ১৮৭ কেজি সার ব্যবহার করা হয়। বর্তমানে ১৭ হাজার ৮০৭ হেক্টর জমিতে জৈর সার ব্যবহার করা হচ্ছে। আরো ১০ হাজার হেক্টর জমিতে তা দিয়ে চাষ করা হচ্ছে চলতি কৃষিবর্ষে।

আগে প্রতি হেক্টর জমিতে ১.৫০ মেট্রিক টন জৈব সার ব্যবহার হতো। কিন্তু বর্তমানে তা বৃদ্ধি পেয়ে প্রতি হেক্টর জমিতে ১.৮৮ মেট্রিক টন হয়েছে। সুগন্ধী চাল (তুলাইপাঞ্জি, গোবিন্দভোগ, কালোনুইয়া প্রভৃতি) উৎপাদনেও রাজ্যসরকার জৈব সার ব্যবহারের উপর জোর দিয়েছে। বর্তমানে ১২ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে জৈব সার ব্যবহার করে সুগন্ধী চাল উৎপাদন করা হয়। জৈবসার ব্যবহার না করলে নাকি সেই সুন্দর গন্ধটাই আসে না,এমনটাই জানালেন তিনি।

অন্যদিকে,তৃণমূল বিধায়ক নার্গিস বেগমের এক প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে কৃষিমন্ত্রী তুলে ধরেন ধানের উৎপাদন বৃদ্ধি সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য। জানালেন,২০১০-১১ কৃষিবর্ষে উৎপাদিত ধানের পরিমাণ হল ২ কোটি ৮৪ হাজার ৪১১ টন। ২০১৭-১৮ কৃষিবর্ষে উৎপাদিত মোট ধানের পরিমাণ ২ কোটি ৫৭ লক্ষ ৭৮ হাজার ৬৪২ টন হতে পারে। রাজ্যে মোট ধানের চাহিদা ২ কোটি ২৬ লক্ষ ৭৬ হাজার টন। বিধায়ক সুজিত চক্রবর্তীর প্রশ্নের জবাবে নথিভুক্ত পরীক্ষাগারে পরীক্ষার মাধ্যমেই সারের গুনগত মান নিয়ন্ত্রিত হয়,এমনটাই জানালেন কৃষিমন্ত্রী।

ফেসবুকের কিছু টেকনিকাল প্রবলেমের জন্য সব খবর আপনাদের কাছে পৌঁছেছে না। তাই আরো খবর পেতে চোখ রাখুন প্রিয়বন্ধু মিডিয়া-তে

 

এবার থেকে প্রিয় বন্ধুর খবর পড়া আরো সহজ, আমাদের সব খবর সারাদিন হাতের মুঠোয় পেতে যোগ দিন আমাদের হোয়াটস্যাপ গ্রূপে – ক্লিক করুন এই লিঙ্কে

এছাড়াও বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তীর এক প্রশ্নের জবাবে কৃষিমন্ত্রী খাতায় কলমে লিখে জানালেন,২০১০-১১ সালে রাজ্যের চাষযোগ্য জমির পরিমাণ ছিল ৫৬ লক্ষ ৬৫ হাজার ৬৩০ হেক্টর৷ সেটাই বেড়ে ৫৬ লক্ষ ৬৬ হাজার হেক্টর হয়েছে ২০১৭-১৮ কৃষিবর্ষে। এবং আগামীতে এই চাষযোগ্য জমির পরিমান আরো বাড়বে বলেই দাবী করলেন তিনি। বর্তমান রাজ্যসরকারের হাত ধরে সিঙ্গুর তথা গোটা রাজ্যের কৃষির উন্নয়ন কীভাবে হয়েছে সেটাই বুঝিয়ে দিলেন কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। আসলে লোকসভা ভোটের আগে কৃষিক্ষেত্রে উন্নয়নের খতিয়ান তুলে ধরে রাজ্যবাসীর নজর আকর্ষণ করাই ছিল রাজ্যের কৃষিমন্ত্রকের লক্ষ্য। এমনটাই মনে করছেন অভিজ্ঞমহল।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!