এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > বিজেপি > স্ত্রীকে দেখতে আসা দিলীপকে নিয়ে বিস্ফোরক মুকুল, দূরত্ব প্রকটে শুরু জল্পনা!

স্ত্রীকে দেখতে আসা দিলীপকে নিয়ে বিস্ফোরক মুকুল, দূরত্ব প্রকটে শুরু জল্পনা!


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –   তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করার পর তার মস্তিষ্কপ্রসূত পরিকল্পনা এবং অন্য দল থেকে নেতা নিয়ে আসার স্ট্র্যাটেজি বিজেপিকে অনেকটাই উপকৃত করেছিল। তৃণমূলের একসময় কার সেকেন্ড-ইন-কমান্ড মুকুল রায় গত 2009 সালের লোকসভা নির্বাচনে প্রমাণ করে দিয়েছিলেন, বঙ্গ রাজনীতিতে তিনি চাণক্য। বিজেপিতে যোগদান করে গেরুয়া শিবিরের প্রার্থী তালিকা ঠিক করা থেকে শুরু করে কিভাবে নির্বাচন হবে, তার সমস্ত কিছুর দায়িত্ব ছিল তার কাঁধেই।

স্বাভাবিক ভাবেই বিজেপি গত 2019 সালের লোকসভা নির্বাচনের উপর ভরসা করে অভূতপূর্ব ফলাফল করেছিল। তবে যত সময় যেতে থাকে, ততই বিজেপিতে মুকুল রায় গুরুত্ব পাওয়ার কারণে কিছুটা হলেও ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন বিজেপির বর্তমান রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলে আনাচে-কানাচে শুনতে পাওয়া যায়। স্বাভাবিক ভাবেই তাদের মধ্যে কোনো দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে না থাকলেও, তলায় তলায় যে এই দুই নেতা এবং তাদের অনুগামীরা কার্যত আড়াআড়ি ভাবে ভাগ হতে শুরু করেছেন, তা ধীরে ধীরে স্পষ্ট হয়ে যেতে শুরু করে। তবে 2019 সালের নির্বাচনের দায়িত্ব মুকুল রায় সাফল্যের সঙ্গে পার করলেও, 2021 সালের বিধানসভা নির্বাচনে তাকে কৃষ্ণনগর উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রের প্রার্থী করেছিল ভারতীয় জনতা পার্টি।

সেভাবে লোকসভা নির্বাচনের মত গোটা রাজ্যজুড়ে কাজ করতে দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়নি তাকে। সেদিক থেকে এবারের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির অন্যতম সেনাপতি ছিলেন দিলীপ ঘোষ। গোটা রাজ্য জুড়ে প্রচার করতে দেখা গিয়েছিল তাকে। আর এই পরিস্থিতিতে বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলেই স্পষ্ট হয়ে যায়, মুকুল রায়কে ঠিকমত ব্যবহার না করার কারণেই বিজেপি তাদের লক্ষ্যে পৌঁছতে পারেনি। এক্ষেত্রে সাংগঠনিক মুকুল রায় বিধায়ক এবং বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি হওয়া সত্ত্বেও, তার সঙ্গে দলের ক্রমশ দূরত্ব বাড়তে শুরু করে।

বর্তমানে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে অনেকটাই অসুস্থ মুকুল রায় সহধর্মিনী কৃষ্ণা রায়। সম্প্রতি হঠাৎ করেই কৃষ্ণাদেবীকে দেখতে হাসপাতালে উপস্থিত হন তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। যেখানে মুকুল রায়ের পুত্র শুভ্রাংশু রায়ের সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ কথা বলেন তিনি। আর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে আসার পরেই মুকুল রায়ের সহধর্মিনীকে দেখতে সেই হাসপাতালে পৌঁছে যান বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা সাংসদ দিলীপ ঘোষ।

যার জেরে কার্যত স্পষ্ট হয়ে যায় যে, মুকুল রায়কে নিয়ে বিজেপির একাংশ কিছুটা হলেও চিন্তায় পড়ে গিয়েছে। তাই ড্যামেজ কন্ট্রোল করতে বিরোধী হলেও মুকুল রায় যাতে দলে থাকেন, তার চেষ্টা করার জন্য সৌজন্যতাবশত অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরেই মুকুলবাবুর স্ত্রীকে দেখতে হাসপাতালে ছুটে গেলেন দিলীপ ঘোষ।

তবে দিলীপবাবু হাসপাতালে গেলেও, তাতে খুব একটা গুরুত্ব দিতে চাইছেন না বিজেপির অন্যতম বিধায়ক তথা সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি মুকুল রায়। স্বাভাবিক ভাবেই মুকুল রায়ের একটি মন্তব্যকে কেন্দ্র করে এখন ক্রমশ জল্পনা বাড়তে শুরু করেছে। প্রকট হচ্ছে দিলীপ ঘোষের সঙ্গে তার দূরত্ব বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

সূত্রের খবর, সম্প্রতি তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় মুকুল রায়ের সহধর্মিনীকে দেখতে হাসপাতালে পৌঁছন। আর তারপরই জল্পনা তৈরি হয়, বিধানসভা নির্বাচন সমাপ্ত হওয়ার পর থেকে মুকুল রায় বিজেপিতে ঠিকমত সক্রিয় ছিলেন না। স্ত্রীর অসুস্থতার কারণেই হোক, আর অন্য কোনো কারণ, বিজেপিতে তার নিষ্ক্রিয়তা যে বাড়তে শুরু করেছিল, তা কার্যত স্পষ্ট হয়ে যায়। এমনকি মুকুল রায়ের পুত্র শুভ্রাংশু রায়ের একটি ফেসবুক ভাইরাল হওয়ার সাথে সাথেই অস্বস্তিতে পড়ে যায় ভারতীয় জনতা পার্টি।

স্বাভাবিক ভাবেই মুকুলবাবু এবং তার পুত্র কি ধীরে ধীরে বিজেপির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে তৃণমূলের দিকে যেতে চলেছেন! এই প্রশ্ন ক্রমাগত উঠতে শুরু করে। তবে মুকুল রায় যদি সেই পদ্ধতি পালন করেন, তাহলে তার জন্য প্রধান দায়ী হবেন দিলীপ ঘোষ এবং তার অনুগামীরা বলে দাবি করতে শুরু করেন একাংশ। অনেকে বলেন, মুকুল রায় সাংগঠনিক নেতা হিসেবে পরিচিত হলেও তাকে বিজেপিতে ঠিকমত কাজ করতে দেওয়া হয়নি। আর এর পেছনে যে দিলীপ ঘোষ রয়েছেন, তা বলাই যায়।

তবে ড্যামেজ কন্ট্রোল করতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরেই সেই মুকুল রায়ের সহধর্মিনীকে দেখতে হাসপাতালে যান দিলীপ ঘোষ। কিন্তু আশ্চর্যজনক ভাবে সেই ব্যাপারে তেমন কোনো বিবৃতি দিতে দেখা গেল না মুকুল রায়কে। বরঞ্চ এই ব্যাপারে একটি অন্য রকম মন্তব্য করে পরোক্ষে দিলীপ ঘোষকে খোঁচা দিলেন হেভিওয়েট এই বিজেপি নেতা বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

এদিন এই প্রসঙ্গে মুকুল রায় বলেন, “উনি আমাকে বা অন্য কাউকে বলে তো হাসপাতালে যাননি। তাই কাকে দেখতে গিয়েছিলেন, তা আমি জানি না। কেউ অসুস্থ হলে কেউ তাকে দেখতে যেতে পারেন। তাতে কোনো অসুবিধা নেই। এর মধ্যে রাজনীতি দেখা অনুচিত হবে।”

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

বিশ্লেষকরা বলছেন, মুকুল রায়ের এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে স্পষ্ট যে, দিলীপ ঘোষের পক্ষ থেকে তার স্ত্রীকে দেখতে আসা নিয়ে তিনি মোটেই উৎসুক নন। আর মুকুল রায়ের এই মন্তব্যই এখন জল্পনা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। অনেকে বলছেন, প্রতিপক্ষ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর স্ত্রীকে দেখতে আসার পর সেরকম কোনো মন্তব্য করতে চাননি মুকুলবাবু। তবে তার পুত্র শুভ্রাংশু রায় গোটা বিষয়টিকে স্বাগত জানিয়েছেন। এমনকি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিবারের সঙ্গে তাদের পারিবারিক সম্পর্কের কথাও তুলে ধরে জল্পনা বাড়িয়ে দিয়েছেন মুকুল রায়ের পুত্র।

তবে বর্তমানে মুকুলবাবু যে দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতা এবং বিধায়ক, সেই দলের রাজ্য সভাপতি তার স্ত্রীকে দেখতে আসার পরেও তিনি কেন এরকম অনীহা প্রকাশ করলেন! এখন সেটাই চর্চার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেকে বলেছেন, মুকুল রায় এই মন্তব্যের মধ্যে দিয়ে বুঝিয়ে দিতে চাইলেন যে, দিলীপ ঘোষের সাথে তার সম্পর্ক খুব একটা ভালো নয়। আবার একাংশ বলছেন, মুকুলবাবুর এই মন্তব্যের মধ্যে দিয়ে স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে, তিনি ভবিষ্যতে কি করতে চলেছেন।

অর্থাৎ তার সঙ্গে যে বিজেপির বর্তমান নেতৃত্বে দূরত্ব বাড়ছে এবং তিনি যে বড় কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেন, তা দিলীপ ঘোষ হাসপাতালে আসার পরেও কোনোরুপ ধন্যবাদ জ্ঞাপন না করে গোটা বিষয়টিকে কার্যত পাত্তাই দিলেন না বঙ্গ রাজনীতির চাণক্য বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। তবে স্ত্রীর শারীরিক অসুস্থতার মাঝেও মুকুল রায়ের এই মন্তব্য এখন রীতিমত চর্চা সৃষ্টি করেছে রাজ্য জুড়ে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!