এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > অন্য কেউ নয়, দরকারে ডাক সেই শুভেন্দুরই, দুই নেতার প্রকাশ্য বিরোধে এবার অস্বস্তি দলে

অন্য কেউ নয়, দরকারে ডাক সেই শুভেন্দুরই, দুই নেতার প্রকাশ্য বিরোধে এবার অস্বস্তি দলে

কথায় আছে, “ব্যবহারের জন্য আপন করে, ভালোবেসে ডাকে কজন! তাই সমাজের প্রিয়জন কম, বেশিরভাগেরই প্রয়োজন।” তৃণমূলের দক্ষ সাংগঠনিক, পরিশ্রমী নেতা শুভেন্দু অধিকারীর সাথেও হয়ত তার দল এমন বাক্য ব্যবহার করছে বলে মনে করছেন একাংশ। যে কোনো শক্ত, কঠিন কাজে ডাক পড়ে এই শুভেন্দু অধিকারীর। কিন্তু লাভের গুড় খাওয়ার যখন পালা আসে, তখন তার মত নেতারা পড়ে থাকেন পেছনের সারিতে। দলের একাংশ কর্মী-সমর্থক থেকে শুরু করে, শুভেন্দুবাবুর অনুগামীরা এমনটাই মনে করেন।

সম্প্রতি বাঁকুড়ার একটি জনসভায় ব্যাপক জনসমাগম হয়েছিল। যার মূল কৃতিত্ব ছিল সেই শুভেন্দু অধিকারীর। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে সেই মঞ্চে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্লোগান দেওয়া একটি ভিডিও ভাইরাল হলেও, সেখানে দেখা যাচ্ছে না তৃণমূলের এই হেভিওয়েট মন্ত্রীকে। যা নিয়ে তৃণমূলের অনেক কর্মী সমর্থকদের মনে তৈরি হয়েছে ক্ষোভ। যে শুভেন্দুবাবু সবসময় বিপদে-আপদে দলের সব কাজকে সহজ, সরল করে দিতে সক্ষম হন, তাকেই কেন বাদ দিয়ে সংগঠন চলবে, তা নিয়ে প্রশ্ন শুরু করেছেন একাংশ।

কিন্তু হাজার পরিশ্রম দিয়েও যেভাবে কেউ বা কারা দলে তাকে কোণঠাসা করে দিতে চাইছে, তাতে অতটা গুরুত্ব দিতে চাইছেন না শুভেন্দু অধিকারী। উল্টে মুর্শিদাবাদের এক তৃণমূল বিধায়ক বনাম জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষের মধ্যে যে দ্বন্দ্ব চলছে, তা মেটাতে এবার পদক্ষেপ গ্রহণ করলেন তিনি। অর্থাৎ দলের হিতের জন্য তিনি যে সব সময় কাজ করে যাবেন, তা ফের প্রমাণ করে দিলেন তৃণমূলের শুভেন্দু অধিকারী বলে মত একাংশের।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি সামশেরগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক আমিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে তার দুই ছেলেকে অপহরণের চেষ্টার অভিযোগ করেন জেলা পরিষদের তৃণমূলের কর্মাধ্যক্ষ আনারুল হক। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই তীব্র গুঞ্জন সৃষ্টি হয়েছে মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূলের অন্দরমহলে। বিধায়ক বনাম জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষের গন্ডগোলে রীতিমত অস্বস্তিতে পড়েছে তৃণমূল নেতৃত্ব। আর এমত পরিস্থিতিতে এবার ধুলিয়ানের পৌরপ্রধান সুপল সাহাকে ডেকে পাঠালেন তৃণমূলের শুভেন্দু অধিকারী।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এদিন সবুলবাবু বলেন, “দুই নেতার এভাবে প্রকাশ্যে লড়াইয়ে আমরা বলির পাঠা হয়ে যাচ্ছি। দুই নেতাই চাইছেন, নিজের নিজের লবি তৈরি করতে। কিছু সমাজবিরোধী তার সুযোগ নিচ্ছে। এটা অবিলম্বে বন্ধ হওয়া দরকার। আমি শুভেন্দুবাবুকে ফোন করে সব জানিয়েছি। তিনি সোমবার সন্ধ্যে সাড়ে পাঁচটায় আমাকে দেখা করতে বলেছেন।” তবে শুভেন্দু অধিকারী সুবলবাবুকে ডাকলেও স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক এবং জেলা পরিষদের কর্মাধক্ষকে সেই বৈঠকে ডাকেননি।

এদিন এই প্রসঙ্গে বিধায়ক আমিরুল ইসলাম বলেন, “অপহরণের চেষ্টা সত্যি হয়েছিল কিনা, সেটা যা দেখার পুলিশ দেখবে। কিন্তু এর সঙ্গে আমাকে জড়ানো কেন! আমি সমস্ত ঘটনা অভিষেকবাবুকে জানিয়েছি। জেলা সভাপতি আবু তাহেরের সঙ্গে কথা বলেছি। শুভেন্দু অধিকারীকে মেসেজ করে সব জানিয়েছি। এখনঝ কেউ আমাকে ডেকে পাঠায়নি। ডাকলে যাব। তবে পৌরসভা নির্বাচনের আগে মানুষের মনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তো হচ্ছেই।”

এদিকে এই ঘটনার পর স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক আমিরুল ইসলাম দলবল নিয়ে জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ আনারুল সাহেবকে বহিষ্কারের জন্য উদ্যোগী হয়েছেন বলে খবর রটতে শুরু করেছে। এদিন সেই প্রসঙ্গে বিধায়কের বিরুদ্ধে সরব হয়ে তৃণমূলের জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ আনারুল হক বলেন, “আমাকে বহিষ্কারের দাবি কেন! এতে রাজনীতি কোথা থেকে এল! আমি শুভেন্দুদাকে সব জানিয়েছি। তিনি বিষয়টি নিয়ে দেখবেন বলে আমাকে বলেছেন।” আর মুর্শিদাবাদ জেলায় তৃণমূলের বিধায়ক এবং কর্মাধ্যক্ষের এই নজিরবিহীন গন্ডগোল যে পৌরসভা নির্বাচনে দলকে বড় অস্বস্তিতে ফেলবে, তা বুঝতে বাকি নেই কারোরই।

তবে অনেকে বলছেন, শুভেন্দু অধিকারী এক্ষেত্রে হাল না ধরলে, এই সমস্যার সমাধান করা কারও ক্ষেত্রেই সম্ভব হবে না। আর তাইতো যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও যে শুভেন্দু অধিকারীকে সব সময় পিছনের দিকে ঠেলে দেওয়া হয়, সেই শুভেন্দু অধিকারীকেই এই সমস্যা সমাধানের জন্য সামনের দিকে এগিয়ে দেওয়া হল। অর্থাৎ কঠিন পরিস্থিতিতে শুভেন্দু অধিকারীকেই যে তৃণমূলের দরকার, তা কার্যত প্রমাণ হতে শুরু করেছে শাসকদলের অন্দরমহলে বলে মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের। এখন শুভেন্দু অধিকারী অন্যান্য সমস্যার মত বিধায়ক বনাম কর্মাধ্যক্ষের সমস্যা মেটাতে কতটা সফল হন, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!