শুভেন্দুকে এড়ানো বড়ই কঠিন, শেষমেষ জব্দ হলেন মমতা! ফোবিয়াতে ভুগছে তৃনমূল! তৃণমূল বিজেপি রাজনীতি রাজ্য September 25, 2023 প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূলের সর্বেসর্বা এবং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে 2021 এর বিধানসভা নির্বাচনে পরাজিত করেছেন শুভেন্দু অধিকারী। আর সেটাই হজম করতে অসুবিধে হচ্ছে রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানের। পরিস্থিতি এমন যে বিরোধী দলনেতা শব্দটিও এতদিন উচ্চারণ করতে দেখা যায়নি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। যেন শুভেন্দু অধিকারী তার দুচোখের বিষ। এমন একটা ভাব করতে শুরু করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার দলের ছোট, বড়, মাঝারি স্তরের নেতারা। অন্যদিকে শুভেন্দুবাবুও প্রত্যেক সেকেন্ডে তৃণমূল বিরোধীতার সুরকে চওড়া করে বুঝিয়ে দিয়েছেন, তিনি মিনমিনে বিরোধী দলনেতা নন। তবে মুখে যাই বলুন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে, তিনি শুভেন্দু অধিকারীর নাম নেবেন না, তিনি যে পদে রয়েছেন, সেই পদের নামটুকু উচ্চারণ করবেন না, কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই নন্দীগ্রামের ছেলেটির কাছে জব্দ হতে হলো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গ দিবস নিয়ে বিধানসভায় যে বিশেষ অধিবেশনের ডাক দেওয়া হয়েছিল, সেখানেই বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাজ্যের বিরোধী দলনেতাকে তার পদ দিয়ে সম্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী। যা দেখে বিরোধীরা বলছেন, একেই বলে, ঠেলায় না পড়লে বিড়াল গাছে ওঠে না। প্রসঙ্গত, এদিন একটি কর্মসূচিতে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তার প্রতি কেন এত রাগ, কেন তিনি শুভেন্দু অধিকারীকে সহ্য করতে পারছেন না, তার গোপন কারণ প্রকাশ্যে তুলে ধরেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। তিনি বলেন, “আমার কাছে হেরেছেন নন্দীগ্রামে। তাই আমার নাম নেয় না। এতদিন নাম নিত না। কিন্তু এখন বলছেন, আমাদের বিরোধী দলনেতা। তাহলে ঠেলায় না পড়লে বিড়াল গাছে ওঠে না।” অনেকে বলছেন, কেনই বা শুভেন্দু অধিকারীকে সহ্য করবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? এই শুভেন্দু অধিকারী একেবারে তৃণমূলের ঘরের খবর জানেন। কোথায় কিভাবে কোন নেতাকে টাইট দিতে হয়, তার সব তার মুখস্থ। তাই তিনি দল পরিবর্তন করার পর থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মাথা ঠিক মত কাজ করছে না। তিনি প্রতি ক্ষণে ক্ষণেই উগ্র হয়ে যাচ্ছেন। বীতশ্রদ্ধ হয়ে যাচ্ছেন দলের একাংশের প্রতিও। তবে কোনোভাবেই যখন শুভেন্দু অধিকারীকে বাগে আনা যাচ্ছে না, তখন তার কাছে শেষ পর্যন্ত নতিস্বীকার করতে বাধ্য হলেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান বলেই দাবি সমালোচক মহলের। তবে তৃণমূলের এক পক্ষ অবশ্য দাবি করছে, শুভেন্দু অধিকারীর কাছে নতিস্বীকার করার কোনো প্রশ্নই নেই। তিনি রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। তাই তাকে তার পদ ধরে সম্বোধন করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার মানেই তিনি শুভেন্দু অধিকারীকে ভয় পাচ্ছেন, এমন ভাবা মূর্খের স্বর্গে বাস করার সামিল। অন্যদিকে পাল্টা বিজেপির ঘনিষ্ঠ মহলের পক্ষ থেকে সামনে আনা হচ্ছে অন্য যুক্তি। তাদের বক্তব্য, বর্তমানে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঠিক যেভাবে শুভেন্দু অধিকারীকে ভয় পাচ্ছেন, ঠিক একই ঘটনা দেখতে পাওয়া গিয়েছিল বিগত বাম সরকারের আমলে। বিভিন্ন দিক থেকে যখন বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাম সরকারকে চাপে ফেলে দিয়েছিলেন, তখন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য তার নাম পর্যন্ত নিতেন না। তাকে সব সময় এড়িয়ে যেতেন। ফলে সেই একই ঘটনার রিপিট টেলিকাস্ট হতে শুরু করেছে বর্তমান বিরোধী দলনেতার ক্ষেত্রেও। তাহলে কি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ধরেই নিয়েছেন যে, এই শুভেন্দু অধিকারীর হাত দিয়েই রাজ্যে পরিবর্তনের পরিবর্তন আসন্ন? পর্যবেক্ষকদের মতে, রাজনীতিতে যতই বিরোধিতা থাক, প্রতিপক্ষকে পরিষদীয় রাজনীতির দিক থেকে সম্মান জানানো উচিত। বিরোধী দলনেতা। তিনি তো বিরোধিতা করবেনই। কিন্তু তাকে অচ্ছুত ভাবা কোনো শাসকের পক্ষেই কাম্য নয়। যে ভুল বাম সরকারের বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য করেছিল, সেই একই ভুলের পথে শুভেন্দু অধিকারীকে রাজনৈতিকভাবে কুপোকাত করতে না পেরে নন্দীগ্রামে হারার ভয় কি এখনও পর্যন্ত তার মাথার মধ্যে ঘুরছে? আর সেই কারণেই কি শুভেন্দুবাবুর নাম পর্যন্ত এতদিন নিতে দেখা যায়নি রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানকে? তবে শেষ পর্যন্ত চারিদিক থেকেই যখন শুভেন্দু অধিকারী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ঘিরে ফেলেছেন রাজনৈতিকভাবে, তখন তাকে “বিরোধী দলনেতা” পদের সম্বোধন করতে বাধ্য হলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। দিনের শেষে তেমনটাই দাবি রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের। আপনার মতামত জানান -