এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > মমতাকে সরাতে দম চাই, ভেজা বেড়ালে কাজ হবে না! মিনমিনে নেতাদের মোক্ষম জবাব শুভেন্দুর!

মমতাকে সরাতে দম চাই, ভেজা বেড়ালে কাজ হবে না! মিনমিনে নেতাদের মোক্ষম জবাব শুভেন্দুর!


 

 

প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-রাজ্যে এতদিন বিজেপি নামে কোনো দল ছিল না, তা বলা যাবে না। কিন্তু 2019 সালের পর থেকে সেই বিজেপির প্রভাব বঙ্গ রাজনীতিতে অনেকটাই বেড়েছে। আর সেই প্রভাব বর্তমানে এমন জায়গায় পৌঁছে গিয়েছে যে, তা শাসকদলের সঙ্গে শেয়ানে শেয়ানে টক্কর দিচ্ছে। আর এর পেছনে যদি সব থেকে বেশি কারও অবদান থাকে, তাহলে তিনি হচ্ছেন শুভেন্দু অধিকারী। যেমন রাজনৈতিক প্রভাব রয়েছে, তেমনই রয়েছে সাংগঠনিক ক্ষমতা। নিজের এলাকা ধরে রাখার মত শক্তি যেমন রয়েছে, ঠিক তেমনই রয়েছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য প্রবল মানসিকতা। আর এত কিছুর ওপর ভিত্তি করে যে লোকটা দাঁতে দাঁত চেপে প্রচুর প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই করে যাচ্ছেন এবং শাসক দলকে চাপে ফেলে দিচ্ছেন, তাকে দেখে অন্তত বিজেপির অন্য নেতাদের শিক্ষা নেওয়া উচিত।

প্রসঙ্গত, এই শুভেন্দু অধিকারী 2021 এর বিধানসভা নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে নন্দীগ্রামে লড়াই করেছিলেন। যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূলের শেষ কথা, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, তাকে তিনি নন্দীগ্রামে হারিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, তিনিই পারেন। কিন্তু বর্তমানে বিজেপির যারা রাজ্য নেতৃত্বের বড় বড় দায়িত্বে রয়েছেন, তারা কি আদৌ নিজের এলাকা জেতাতে পেরেছেন? নিজের এলাকায় দলের পক্ষে জয় নিয়ে আসতে পেরেছেন? পারেননি। কিন্তু শুভেন্দু অধিকারী প্রতি এই মুহূর্তে এলাকা ধরে রেখে তৃণমূলকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছেন। আর এটাই একজন রাজনৈতিক নেতার সাফল্য। এদিন সেই শুভেন্দু অধিকারী আবার বুঝিয়ে দিয়েছেন যে, টকশোতে চিৎকার করে, বড় বড় কথা বলে কোনো লাভ হবে না। এলাকায় সংগঠন ধরে রাখতে হবে, জেতাতে হবে দলকে। যে কাজ তিনি নন্দীগ্রামে করেছেন, তা রাজ্যের প্রত্যেকটি জায়গায় বিজেপি নেতৃত্বকে করে দেখাতে হবে। তাহলেই সাফল্য আসবে। তা না হলে কোনোভাবেই এই সরকারকে উৎখাত করা সম্ভব হবে না। কিন্তু শুভেন্দু অধিকারী যে কাজ নন্দীগ্রামে করতে পারছেন, কেন সেই কাজ অন্য জায়গায় করতে পারছেন না বিজেপির তাবড় তাবড় নেতারা? তারা তো মুখে অনেক বড় বড় কথা বলেন! কিন্তু গর্জনই শেষ। কোনো বর্ষণ তাদের কর্মপদ্ধতির মধ্যে দিয়ে দেখা যাচ্ছে না। যা দেখাতে সক্ষম হচ্ছেন শুভেন্দু অধিকারী।

ইতিমধ্যে গেরুয়া শিবিরের ঘনিষ্ঠ মহলের একাংশও শুভেন্দু অধিকারীকে সার্টিফিকেট দিতে শুরু করেছেন। তারা বলছেন যে, শুভেন্দুবাবু নিজের কাজটা দায়িত্বের সঙ্গে করছেন। কিন্তু বিজেপির যারা রাজ্যের সংগঠন সামলাচ্ছেন, তারা সত্যিই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলতে অক্ষম। সাংগঠনিক লড়াই কি করে করতে হয়, তা অন্তত শুভেন্দু অধিকারীর কাছ থেকে শেখা উচিত বর্তমান রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের। তা না হলে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের পক্ষ থেকে রাজ্যের হাল ধরার জন্য শুভেন্দুবাবুকেই দায়িত্ব দেওয়া উচিত নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহদের। কিন্তু কেন তারা এখনও পর্যন্ত বাংলা নিয়ে চিন্তিত নন! সেটাই লাখ টাকার প্রশ্ন। তাহলে কি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে তৃণমূলের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহদের একটা গোপন সেটিং রয়েছে বলে যে কথা বলা হচ্ছে, তা সত্যি? যদি তাই হয়, তাহলে কেন শুভেন্দু অধিকারী এত লড়াই লড়ছেন? কেন বিজেপির কর্মীরা তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে মার খাচ্ছেন, কেস খাচ্ছেন? তাহলে কি কর্মীরা নীচুতলায় লড়ে যাবে, আর ওপরে বসে মজা দেখবেন বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব?

বিশেষজ্ঞদের মতে, সংগঠন করলে শুধু মুখে বড় বড় বক্তৃতা দিলে হয় না। কাজটা করে দেখাতে হয়। শুভেন্দু অধিকারী যে কাজটা নিজের এলাকায় করছেন, তা যদি প্রত্যেক বিজেপি নেতৃত্ব, জনপ্রতিনিধিরা নিজের এলাকায় করেন, তাহলেই তো সংগঠন শক্তিশালী হয়ে যায়। কিন্তু সকলেই কি তাদের একশো শতাংশ পরিশ্রম দলের পেছনে দিচ্ছেন? যদি তা করতেন, তাহলে আজকে জেলায় জেলায় বিজেপি কর্মীরা আক্রমণের শিকার হলে নন্দীগ্রামের কায়দাতেই বিভিন্ন জায়গায় তৃণমূল প্রতিরোধের ঠ্যালাটা অন্তত পেত। কিন্তু যে প্রতিরোধ নন্দীগ্রামে হচ্ছে, তা অন্য কোথাও দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না। সদ্য সমাপ্ত পঞ্চায়েত নির্বাচনেও একমাত্র নন্দীগ্রাম খেলা ঘুরিয়ে দিয়েছে। সিংহভাগ পঞ্চায়েত বিজেপির দখলে গিয়েছে। দুটি পঞ্চায়েত সমিতি তাও দখল করেছে পদ্ম শিবির। ফলে শুভেন্দু অধিকারী তার ক্যারিশমাতে দলকে সাফল্যের মুখ দেখালেও, একশ্রেণীর নেতারা শুধু বড় বড় ভাষণ দিতেই ব্যস্ত। তাই তারা ভাষণ শেষ করে কর্মীদের ব্যথা বুঝলে নন্দীগ্রামের মডেলেই রাজ্যের অন্য এলাকাতেও সাফল্য পাবে বিজেপি। তবে এই সাফল্য আনতে গেলে বর্তমান নেতৃত্বকে দিয়ে আর কোনো লাভ হবে না। যদি সংগঠনকে চাঙ্গা করতে হয়, যদি তৃণমূলকে বিদায় জানাতে হয়, তাহলে বিজেপির মুখ করতে হবে শুভেন্দু অধিকারীকেই। দিনের শেষে তেমনটাই দাবি রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!