এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > তাপস রায়কে নিয়ে কতই বড়াই তৃণমূলের! চাঁচাছোলা জবাব বিজেপির!

তাপস রায়কে নিয়ে কতই বড়াই তৃণমূলের! চাঁচাছোলা জবাব বিজেপির!


প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-তৃণমূল যে চুরির সঙ্গে যুক্ত, এই দলের নেতারা যে দুর্নীতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে গিয়েছেন, এটা আজকে নতুন করে বলতে হবে না। একের পর এক মন্ত্রীর জেলযাত্রা সেই ঘটনার দিকেই ইঙ্গিত করছে। তবে এর মাঝেই সম্প্রতি পৌর নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় রাজ্যের মন্ত্রী সুজিত বসু এবং তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায়ের বাড়িতে হানা দিয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। দীর্ঘক্ষণ তাদের বাড়িতে জেরা, তল্লাশি চলেছে। আর তারপর দুজনের বাড়ি থেকেই মোবাইল ফোন এবং বেশ কিছু নথি নিয়ে এসেছে কেন্দ্রীয় সংস্থা। এখন যে তৃণমূল কথায় কথায় তাদের কোনো নেতার বাড়িতে গেলেই বলে প্রতিহিংসার আচরণ করছে বিজেপি, সেই তৃণমূল যে এক্ষেত্রেও এমনটা বলবে, সেটা ধরাই ছিল। আর তেমনটাই তৃণমূল নেতারা বলেছেন। কিন্তু তাপস রায়কে নিয়ে তারা যেন বাড়তি উৎসাহী। তারা বলছেন, যে তাপস রায়কে নিয়ে বামেরা কোনো দুর্নীতির কথা বলতে পারিনি, সেই তাপস রায়ের বাড়িতে গিয়ে রাজনীতিকে কলঙ্কিত করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এবং বিজেপি। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, এখানে বিজেপিকে জড়ানো হচ্ছে কেন? কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা তো একটি নিরপেক্ষ সংস্থা। তারা কোর্টের নির্দেশে তদন্ত করছে। আর দ্বিতীয় কথা, তথ্য সংগ্রহের কাজে ব্যস্ত রয়েছে কেন্দ্রীয় এজেন্সি। তাই তারা যে কোনো ব্যক্তির বাড়িতে যেতেই পারে। তাই বলে কে সৎ, আর কে অসৎ, এটা কেন এখন থেকেই চাপিয়ে দিচ্ছে এই রাজ্যের শাসক দল? যাদের একাধিক নেতা, বিধায়ক, মন্ত্রীরা জেলে রয়েছে, তাদের মুখ থেকে অন্তত এই সমস্ত কথা মানায় না। আগে তদন্ত প্রক্রিয়া শেষ হোক, তথ্য সংগ্রহের যে কাজ চলছে, তাকে ঠিকমতো করতে দেওয়া হোক। তারপরেই ঠিক হবে কে দোষী, আর কে সাধুপুরুষ! বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ এদিন যে কথা বলেছেন, তারপর এমনটাই মনে করা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, একথা ঠিক যে, তাপস রায়কে নিয়ে কখনও কোনো দুর্নীতির অভিযোগ ওঠেনি। কিন্তু কিছু একটা হয়েছে। যার কারণেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা তার বাড়িতে গিয়েছে, এটা তো স্পষ্ট। অনেকে তো আবার এটাও বলছেন যে, সৎসঙ্গে স্বর্গবাস। কিন্তু তাপসবাবু যে দলের সঙ্গে এখন জড়িয়ে আছেন, সেই দলের পুরোটাই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে। ফলে এখন তিনি কি করছেন, সেটা কেউ জানে না। তাই তদন্ত করতেই পারে কেন্দ্রীয় সংস্থা। তারা যদি চুরি না করে থাকে, তাহলে এই ব্যাপারে এত চেঁচামেচি করার কি আছে তৃণমূল নেতাদের? এদিন এই বিষয়ে বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ বলেন, “”কে সৎ, আর কে অসৎ, সেটা তো তদন্ত শেষ হলে বোঝা যাবে। আগেই এসব বলে দেওয়া ঠিক নয়। এটা দেখা যেতে পারে যে, অনেকের বাড়িতে এজেন্সি গিয়েছে, কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই। আবার অনেকের বাড়িতে যায়নি, তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। ফলে এখনই এটা নির্ধারণ করার মত বিষয় আসেনি। আগে পুরো তদন্ত শেষ হোক। তারপরেই বোঝা যাবে, কে চোর, আর কে নির্দোষ!” অনেকে বলছেন, এটা অস্বীকার করার মত বিষয় নেই যে, তাপস রায় অত্যন্ত সৎ এবং প্রবীণ রাজনীতিবিদ। তাকে দেখে অনেকেই রাজনীতির ময়দানে এসেছে। ফলে তার বাড়িতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা গিয়েছে, যে কোনো একটা অভিযোগের ভিত্তিতে। হতে পারে, সেটা তথ্য সংগ্রহ। কিন্তু অনেক বিরোধী নেতাও বলেছেন যে, তাপস রায় এই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে আছেন, এটা তারা বিশ্বাস করেন না। আর এটাকেই বাড়তি হাতিয়ার হিসেবে পেয়ে তৃণমূল এখন কেন্দ্রীয় এজেন্সি আর বিজেপিকে কটাক্ষ করতে শুরু করেছে। তবে এসব করে তৃণমূল নিজেদের স্বচ্ছতার পরিচয় সামনে আনতে চাইলেও, তাতে মানুষ তাদের আর বিশ্বাস করবে না। যে দুর্নীতি পশ্চিমবাংলার মাটিতে হয়েছে, তাতে একটা তাপস রায়কে দিয়ে তৃণমূল নিজেদের স্বচ্ছতার প্রমাণ দিতে পারবে না বলেই দাবি একাংশের।

ইতিমধ্যেই গোটা বিষয়ে কটাক্ষ করতে শুরু করেছে বিজেপি। তাদের দাবি, তদন্তের আগেই তৃণমূল নিজেদের স্বচ্ছতার পরিচয় দিতে মরিয়া। তার মানেই বোঝা যাচ্ছে, এরা কতটা চুরির সঙ্গে যুক্ত। পশ্চিমবাংলার বুকে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর যতগুলো নিয়োগ হয়েছে, সবগুলোই অবৈধ। টাকার বিনিময়ে চাকরি বিক্রি করা হয়েছে। তাই কোনো একজনকে শিখন্ডি করে তৃণমূল নিজেদের ভাবমূর্তি স্বচ্ছ করতে পারবে না। যারা চুরি করেছে, তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত হবে। আর তদন্তে যদি সেই বিষয়টি উঠে আসে, তাহলে দোষীদের জেলে যেতে হবে বলেই দাবি গেরুয়া শিবিরের।

পর্যবেক্ষকদের মতে, তৃণমূল সরকারের আমলে মানুষ চুরি, দুর্নীতি নিয়ে প্রবল বিরক্ত। আর এটাই তৃণমূলের বিদায়ের অন্যতম প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়াবে। তৃণমূল এখন বুঝতে পেরেছে, তারা এই পৌর নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে চরম ফ্যাসাদে পড়বে। তাই তাপস রায়ের বাড়িতে এজেন্সি যেতেই তারা সেটাকে হাতিয়ার করে বলতে শুরু করেছে যে, এই ঘটনা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। কিন্তু কেন্দ্রীয় এজেন্সি তদন্তের জন্য যে কারও বাড়ি যেতে পারে। তিনি যদি সৎ হন, তাহলে সেটা তো সকলের সামনেই স্পষ্ট হবে। কিন্তু তাপসবাবুকে তো গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়নি কেন্দ্রীয় সংস্থা। তার বাড়িতে গিয়ে তাকে জেরা করেছে, যা প্রয়োজনীয় নথি নেওয়ার সেটা নিয়ে এসেছে। ফলে এটাতে এত বেশি সোচ্চার হওয়া, নিজেদের স্বচ্ছতার প্রমাণ দেওয়ার মরিয়া চেষ্টা কেন করছে তৃণমূল? তাহলে কি এই ঘটনায় এটা স্পষ্ট হচ্ছে যে, ঠাকুর ঘরে কে রে আমি তো কলা খাইনি! তবে যাই হোক, এসব করে তদন্তকে যেমন আটকানো যাবে না, ঠিক তেমনই কে সাধু পুরুষ, আর কে দোষী, সেটা সেই তদন্তের ফাইনাল পর্বেই ঠিক হয়ে যাবে। তাই এখনই কাউকে নিয়ে এত বেশি মাতামাতি করার মত কারণ তৃণমূলের না করাই ভালো। দিলীপ ঘোষের বক্তব্যের পর তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক সমালোচকরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!