করোনা আবহেই বিধানসভার ছক? বিজেপিকে আটকাতে ত্রাণ বিলিতে অনুমতি শুধু তৃণমূলের! ফুঁসছে উত্তরবঙ্গ উত্তরবঙ্গ বিশেষ খবর রাজ্য May 12, 2020 রাজনৈতিক নেতাদের আসল পরিচয় পাওয়া যায় দুর্দিনের সময়। বর্তমানে করোনা ভাইরাসের দাপটে গোটা বিশ্ব আতঙ্কিত। যার প্রভাব পড়েছে পশ্চিমবঙ্গেও। একদিকে করোনা ভাইরাস এবং অন্যদিকে লকডাউনের ফলে মানুষ অনেকটাই সর্বস্বান্ত হয়ে পড়ছেন। তাই এই পরিস্থিতিতে সেই সাধারণ মানুষের পাশে থেকে প্রতিটি রাজনৈতিক দল চেষ্টা করছে নিজেদের জনদরদি ভূমিকা পালন করার। এক্ষেত্রে তৃণমূল কংগ্রেস যে অনেকটাই এগিয়ে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। অনেকে বলছেন, আগামী 2021 এর বিধানসভা নির্বাচন এই করোনা ভাইরাসের আবহেই এসে উপস্থিত হবে। সেদিক থেকে রাজনৈতিক নেতারা ভোট চাইতে যাওয়ার সময় সাধারণ মানুষের মহামারীর সময়কার নানা প্রশ্নের মুখে পড়তে পারেন বলে মনে করছে একাংশ। তাই এখন থেকেই শাসক থেকে বিরোধী প্রতিটি রাজনৈতিক দল চেষ্টা করছে, মানুষের পাশে গিয়ে দাঁড়াতেবলে অভিমত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের। তবে এক্ষেত্রে তৃণমূল অনেকটাই এগিয়ে এবং ভারতীয় জনতা পার্টি অনেকটাই পিছিয়ে বলে দাবি একাংশের। কেননা বিজেপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হচ্ছে যে, তাদের নেতা, সাংসদরা ত্রাণ বিলি করতে গেলেও সব সময় তাদের বাধা দেওয়া হচ্ছে। শুধু তাই নয়, তৃণমূলের ক্ষেত্রে প্রত্যেকে ত্রান বিলি করতে পারলেও কেন বিরোধীদের আটকে দেওয়া হচ্ছে, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে গেরুয়া শিবির। কেন এমনটা হচ্ছে? মানুষের পাশে থাকার জন্য তো প্রতিটা দল তৎপর। সেক্ষেত্রে শুধুমাত্র শাসকদল কেন বাড়তি সুবিধা পাবে? কেন বিরোধীদের সুবিধা দেওয়া হবে না! তা নিয়েও তৈরি হয়েছে প্রশ্ন। জানা গেছে, আলিপুরদুয়ার জেলা তৃণমূলের সভাপতি মৃদুল গোস্বামী, বিধায়ক সৌরভ চক্রবর্তী, জেলা পরিষদের সভাপতি শীলাদাস সরকার, জেলা পরিষদের মেন্টর মোহন শর্মা সহ অনেক তৃণমূল নেতারা মানুষের পাশে দাঁড়াতে শুরু করেছেন। তবে এক্ষেত্রে ব্যতিক্রমী বিজেপি নেতারা। সেই বিজেপি নেতাদের মানুষের সাহায্য করার জন্য যেতে দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - এদিন এই প্রসঙ্গে আলিপুরদুয়ার টু ব্লক পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তৃণমূলের অনুপ দাস বলেন, “আমরা মানুষের পাশে গিয়ে দাঁড়াচ্ছি। কারওর খাদ্যের প্রয়োজন বা চিকিৎসার দরকার হলে চটজলদি ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। তবে এর সঙ্গে ভোটের কোনো সংযোগ নেই। এখন মানুষের পাশে দাঁড়ানোই আমাদের সকলের কর্তব্য।” তবে এই ব্যাপারে আলিপুরদুয়ার জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি বিপ্লব সরকার বলেন, “তৃণমূল প্রশাসনকে কাজে লাগিয়ে আমাদের ঘর বন্দি করে রেখেছে। আমরা চাইলেও মানুষের সামনে গিয়ে দাঁড়াতে পারছি না।” তাঁর বক্তব্য, “তবে আমরা ঘরে থেকেই মানুষের সমস্যা সমাধানের জন্য সমস্ত ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। তৃণমূলের মত আমরা লোক দেখানো কাজ করি না। মানুষ জানে আমরা কাদের পাশে আছি। এর যোগ্য জবাব মানুষ সময়েই দিয়ে দেবে।” তবে বিজেপির পক্ষ থেকে এই অভিযোগ করা হলেও তৃণমূলের পাল্টা দাবি, বিজেপি নেতা কর্মীদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শাসকদলের পক্ষ থেকে যতই এই কথা বলা হোক না কেন, লকডাউনের সময় থেকে বিভিন্ন জায়গায় বিজেপির জনপ্রতিনিধিরা মানুষকে সাহায্য করতে গেলেও তারা বাধাপ্রাপ্ত হয়েছেন। সেদিক থেকে তৃণমূলের নেতা মন্ত্রীরা মানুষকে সাহায্য করছেন বলে দেখা যাচ্ছে। আর এই পরিস্থিতিতে একাংশ প্রশ্ন করছেন, তাহলে কি সামনে বিধানসভা নির্বাচন, আর তাই কি এখন থেকে মানুষকে সুবিধে করে দিতে বেশি করে তাদের পাশে দাঁড়াচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস? সেদিক থেকে বিজেপিতে আটকে দিয়ে তারা বিজেপির ভোট ব্যাংক আটকে দিতে চাইছে? এখন এইসব প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে বিরোধী রাজনৈতিক দল থেকে শুরু করে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। বিশেষ করে লোকসভা নির্বাচনে গোটা উত্তরবঙ্গ থেকেই কার্যত ধুয়েমুছে সাফ হয়ে গিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। তীব্র উত্থান হয়েছিল বিজেপির। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন – এর প্রধান কারণ ছিল তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ ও তাঁদের জনসংযোগের অভাব। কিন্তু, করোনা আবহে মানুষের পাশে ত্রাণ নিয়ে দাঁড়িয়ে সেই ক্ষতে মলম দেওয়ার চেষ্টা করছেন তৃনামল নেতারা। কিন্তু, বিজেপি সহ বিরোধীদের আটকানোর যে অভিযোগ উঠছে – তা কি আখেরে ক্ষতি করছে না ঘাসফুল শিবিরের। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন – করোনার কঠিন সময়ে মানুষ চেয়েছিল, রাজনীতির রঙ ভুলে সকলে এক হয়ে মানুষের পাশে দাঁড়াক। তাতে করে সাধারণ মানুষ আরও বেশি করে পরিষেবা ও সাহায্য পাবে। কিন্তু, যেভাবে ত্রাণ বিলি নিয়ে তৃণমূল ‘দেখনদারি’ করছে তার জবাব নাকি দেবেন উত্তরবঙ্গের মানুষ বলে দাবি গেরুয়া শিবিরের। বিশেষ করে করোনার কঠিন সময়েও যেভাবে রেশন দুর্নীতি হচ্ছে তাতে নাকি উত্তরবঙ্গের মানুষ ‘ফুঁসছেন’ বলে দাবি বিজেপি নেতাদের। সবমিলিয়ে গোটা পরিস্থিতি এখন কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, তার দিকেই নজর থাকবে সকলের। আপনার মতামত জানান -