এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > দীর্ঘদিন ব্যাকফুটে, হঠাৎই কীর্তনের আসরে মন্ত্রী! জোর চর্চা উত্তরবঙ্গে!

দীর্ঘদিন ব্যাকফুটে, হঠাৎই কীর্তনের আসরে মন্ত্রী! জোর চর্চা উত্তরবঙ্গে!

কোচবিহার জেলায় একসময় তিনি ছিলেন অবিসংবাদিত তৃণমূল নেতা। জেলা তৃণমূলের সভাপতির পদ সামলানোর পাশাপাশি উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দপ্তরের মন্ত্রীর দায়িত্বও সামলাতে হচ্ছিল তাঁকে। তবে গত লোকসভা নির্বাচনের পর থেকেই অবস্থা পরিবর্তন হতে শুরু করে। একসময় কোচবিহার জেলায় তৃণমূল দলের শেষ কথা বলা রবীন্দ্রনাথ ঘোষের ডানা ছেটে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাম আমলের প্রাক্তন মন্ত্রী পরেশ অধিকারীকে গত লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস কোচবিহার কেন্দ্রে প্রার্থী করেছিল তৎকালীন জেলা তৃণমূল সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষের পরামর্শে।

এমনকি তৃণমূলের অনেকেই প্রার্থীর ব্যাপারে বিরোধিতা করলেও, রবিবাবু ঠিক সেই প্রার্থীকে জয়লাভ করাবেন বলে নিশ্চিত ছিল তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কোচবিহার লোকসভা কেন্দ্রে জয়লাভ করতে পারেনি তৃণমূল কংগ্রেস। সেখানে পদ্মফুল ফুটেছে। বিজেপির প্রতীকে জয়লাভ করেছেন এককালে তৃণমূলের হেভিওয়েট যুবনেতা নীশিথ প্রামাণিক। ফলে দায়িত্ব নিয়েও দলকে সাফল্যের মুখ না দেখানোয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রোষানলে পড়েন রবীন্দ্রনাথ ঘোষ।

জেলা তৃণমূল সভাপতির পদ কেড়ে নিয়ে রবিবাবুর বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর নেতা হিসেবে পরিচিত বিনয় কৃষ্ণ বর্মনকে জেলা তৃণমূল সভাপতি করা হয়। এমনকি রবিবাবুর চরম বিরোধী প্রাক্তন সাংসদ পার্থপ্রতিম রায়কে দেওয়া হয় জেলার কার্যকরী সভাপতি পদ। যার ফলে দিনকে দিন জেলায় ব্যাকফুটে চলে যেতে শুরু করেন রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। কিন্তু সামনেই বিধানসভা নির্বাচন। তাই সেই নির্বাচনকে পাখির চোখ করেই কি এবার ফের খবরের শিরোনামে উঠে আসছেন কোচবিহারের নাটাবাড়ি বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক তথা রাজ্যের উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী?

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

সূত্রের খবর, বর্তমানে নিজের বিধানসভা কেন্দ্র নাটাবাড়ি এলাকার বিভিন্ন অষ্টপ্রহর কীর্তনের আসরে দেখা যাচ্ছে রবীন্দ্রনাথ ঘোষকে। যেখানে কোথা উপস্থিত হয়ে বাতাসা ছেটানো, আবার কোথাও বা কীর্তনের সাথে তাল দিতেও দেখা যাচ্ছে রাজ্যের উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীকে। যা দেখে অনেকেই বলছেন, সামনে বিধানসভা নির্বাচন। সেখানে যদি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ নিজের গড় ধরে রাখতে না পারেন, তাহলে তিনি আরও ব্যাকফুটে চলে যাবেন। তাই এখন থেকেই এই ধর্মীয় অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে জনসংযোগ শুরু করেছেন তিনি। ইতিমধ্যেই ব্যাপারে বিরোধীদের তরফে রবীন্দ্রনাথ ঘোষকে উদ্দেশ্য করে করা হচ্ছে কটাক্ষ।

এদিন এই প্রসঙ্গে জেলা বিজেপির সভানেত্রী মালতি রাভা রায় বলেন, “আমরাও অনেক ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যাই। অনেক জায়গায় শুনতে পাই, এখন ওনাকে না ডাকলেও তিনি এসব অনুষ্ঠানে চলে যান। আসলে উনি অনেক কিছু হারিয়েছেন। নাটাবাড়ি বিধানসভা হাতছাড়া হয়ে গেলে ওনার আর কিছুই থাকবে না। সেই কারণেই খরকুটো যা কিছু ধরে ভেসে থাকার চেষ্টা করছেন মন্ত্রী।”

একইভাবে এই ব্যাপারে রবীন্দ্রনাথ ঘোষকে কটাক্ষ করে কোচবিহার জেলা সিপিএমের সম্পাদক অনন্ত রায় বলেন, “ওনাদের একই অঙ্গে বহুরূপ। যেনতেন উপায়ে সোনার হরিণ চাই। তাই ওরা যা করে, তা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়।” কিন্তু বিরোধীদের তোলা এই অভিযোগ কি সত্যি? তাহলে কি শুধুমাত্র ভোটের দিকে তাকিয়েই রবীন্দ্রনাথ ঘোষের এই জনসংযোগ?

এদিন এই প্রসঙ্গে সেই রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “আমি সব অনুষ্ঠানেই যাই। কীর্তন থেকে শুরু করে জলসা, আদিবাসীদের করিম পুজো, রাজবংশীদের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যাই। আমি ছোটবেলা থেকেই এসব পছন্দ করি। এর সঙ্গে রাজনীতির কোনো যোগ নেই। আমাদের বাড়িতে ছোটবেলা থেকে কীর্তন হয়। এলাকাতেও কীর্তন হত। সেখানে আমি থাকতাম। এর সঙ্গে আসন ধরে রাখা বা নির্বাচনের কোনো সম্পর্ক নেই। মানুষ যেখানে থাকেন, আমি সেখানেই যাই।”

তবে রবীন্দ্রনাথ ঘোষ যে কথাই বলুন না কেন, বিরোধীরা যে প্রশ্ন তুলছে, তা যে একেবারে ফেলে দেওয়ার মত নয়, তা প্রায় স্বীকার করে নিচ্ছেন তৃণমূলের অনেকেই। এখন নিজের গড়কে ধরে রাখতে রবিবাবুর এই অভিনব জনসংযোগ কতটা কাজে দেয়, তার দিকেই নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!