প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – সাম্প্রতিককালে শোভন চট্টোপাধ্যায় বিজেপি ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে ফিরতে পারেন বলে তীব্র জল্পনা তৈরি হয়েছে বঙ্গ রাজনীতিতে। বান্ধবী বৈশাখী বন্দোপাধ্যায়কে নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের সাথে মতানৈক্যের জন্য একসময় ঘাসফুল শিবির ছেড়ে ভারতীয় জনতা পার্টিতে নাম লিখিয়েছিলেন তিনি।

তবে বিজেপিতে নাম লেখালেও, সেভাবে সক্রিয় ভূমিকায় দেখা যায়নি তাকে। প্রায় এক বছরের বেশি সময় হয়ে গেছে, এখনও পর্যন্ত নিষ্ক্রিয় অবস্থায় বিজেপিতে রয়ে গেছেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। মাঝে তার তৃণমূলে ফেরার জল্পনা তৈরি হলেও, তা বাস্তবায়িত হতে দেখা যায়নি। তবে আবার তার তৃণমূলে যোগ দেওয়ার জল্পনা তৈরি হচ্ছে। কিন্তু যে শোভন চট্টোপাধ্যায় বৈশাখী বন্দোপাধ্যায়কে নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের আপত্তির কারণে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন, সেই তিনি এমনি এমনি তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেবেন কিনা, তা নিয়ে তৈরি হয়েছে সংশয়।

অনেকে বলছেন, শোভন চট্টোপাধ্যায় তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিলেও, তিনি তৃণমূলকে বেশ কিছু শর্ত দিয়ে ঘাসফুল শিবিরে নাম লেখাতে পারেন। ইতিমধ্যেই শোভন চট্টোপাধ্যায় যাতে দলে ফিরে আসেন, তার জন্য তাকে বার্তা দিতে তার স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায়কে সেই ওয়ার্ডের দায়িত্বের থেকে সরিয়ে দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস।

অর্থাৎ রত্নাদেবীর সঙ্গে শোভন চট্টপাধ্যায়ের বিবাদের জন্যই যে তার সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের দূরত্ব তৈরি হয়েছে এবং সেই কারণেই তিনি যে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন, সেই ব্যাপারটি কার্যত স্পষ্ট সকলের কাছে। তাই সেই রত্নাদেবীর ডানা ছেঁটে শোভনবাবুর তৃণমূলে ফেরার পথ প্রশস্ত করার জন্যই এই পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে শাসক দল বলে দাবি রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।

তবে শোভন চট্টোপাধ্যায় তৃণমূলের ফিরতে আরও বেশকিছু শর্ত শাসক দলকে দিতে পারেন। আর তারপরেই তৃণমূল কংগ্রেসে ফিরতে পারেন বলে জল্পনা ছড়িয়ে পড়েছে। কিন্তু তৃণমূলের পক্ষ থেকে অবশ্য এই ব্যাপারে অন্য কথা বলা হচ্ছে।বিশেষ সূত্র মারফত খবর, ইতিমধ্যেই তৃণমূলের পক্ষ থেকে বার্তা দেওয়া হয়েছে, শোভন চট্টোপাধ্যায় আগে নিঃশর্তে তৃণমূলের পতাকা তুলে নিন।

তারপর যাবতীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হবে। এমনকি তিনি যে শর্ত দিয়েছেন, সেই শর্ত পূরণের ব্যাপারটিও তখন ভাবা হবে বলে জানিয়ে দিয়েছে ঘাসফুল শিবির। অর্থাৎ এখনই শোভন চট্টোপাধ্যায়ের সমস্ত কথা যে মেনে নেওয়া সম্ভব নয়, তা কার্যত বুঝিয়ে দিতে চাইছে শাসকদল। এক্ষেত্রে শোভন চট্টোপাধ্যায় কি করবেন! তিনি কি তৃণমূল কংগ্রেসের এই শর্ত মেনে নিয়ে ঘাসফুল শিবিরে আসবেন! নাকি ভারতীয় জনতা পার্টিতেই থাকবেন! তা অবশ্যই লক্ষণীয় বিষয় রাজনৈতিক মহলের কাছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শোভন চট্টোপাধ্যায়ের মত হেভিওয়েট রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এক বছরের বেশি সময় ধরে চুপচাপ ঘরে বসে রয়েছেন। সামনে বিধানসভা নির্বাচন। তার মত এমন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব যদি ঘরে বসে থেকে সময় কাটিয়ে দেন, তাহলে তা অবশ্যই অস্বস্তির কারণ। তাই এমত পরিস্থিতিতে তাকে তৃণমূল দলে ফেরার ব্যাপারে বার্তা দিলেও তিনি যদি তৃণমূলের এই সমস্ত শর্ত মেনে নিয়ে ঘাসফুল শিবিরে নাম লেখান, তাহলে ভবিষ্যতে তৃণমূল তার দেওয়া শর্ত কতটা মানবে, তা নিয়ে তৈরি হয়েছে সংশয়।

তাই এই সমস্ত কিছুর উপর নির্ভর করে এখন সমস্ত কিছু সিদ্ধন্ত শোভন চট্টোপাধ্যায়ের উপরে নির্ভর করছে বলে দাবি অনেকের। এখন গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, তৃণমূলের বক্তব্য মেনে নিয়ে তিনি ঘাসফুল শিবিরে যোগদান করেন কিনা, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।