গোষ্ঠী সংঘর্ষে মৃত তৃণমূল ছাত্রনেতা, অবরোধ-প্রতিবাদে উত্তাল উত্তরবঙ্গ উত্তরবঙ্গ বিশেষ খবর রাজ্য July 27, 2018 “রাজায় রাজায় যুদ্ধ হয়, আর উলুখাগড়ার প্রানটি যায়” – প্রাচীনকালের এই প্রবাদ আজও সমানভাবে তাৎপর্যপূর্ন। কারন বর্তমানে রাজ্য রাজনীতিতে বিরোধী হোক বা শাসক, দলীয় অন্তর্কলহ থেকে নেতায় নেতায় গন্ডগোল সবকিছুই চলছে পাল্লা দিয়ে! আর সব ব্যাপারেই খাঁড়াটা নেমে আসছে নিরীহ কর্মী-সমর্থকদের ওপরে। আর এবারে গত ১৩ ই জুলাই কোচবিহারে তৃনমূল ছাত্র পরিষদের দুই গোষ্ঠীর লড়াইয়ে প্রানই হারাতে হল মাজিদ আনসার নামে এক তরতাজা যুবককে। বুধবার শিলিগুড়ির একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে রাত সাড়ে ১০ টা নাগাদ মৃত্যু হয় এই টিএমসিপি কর্মীর। আর যা নিয়ে বর্তমানে তুলকালাম কান্ড চলছে গোটা কোচবিহার জেলাজুড়ে। এমনকি গতকাল এই ঘটনার প্রতিবাদে অন্যতম অভিযুক্ত তৃনমূল নেতা মুন্না খানের বাড়িতে ইঁট-পাটকেল পর্যন্ত ছোঁড়া হয় বলে স্থানীয় সূত্রের খবর। অভিযোগ, এই ইঁটের আঘাতে মুন্না খানের দাদা আহত পর্যন্ত হয়েছেন। অন্যদিকে, অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা নিয়ে পুলিশি অসহযোগিতার অভিযোগ তুলে এক ছাত্রী কোচবিহার কলেজের সামনে ব্লেড দিয়ে নিজের হাত কাটারও চেষ্টা করেন। এবার থেকে প্রিয় বন্ধুর খবর পড়া আরো সহজ, আমাদের সব খবর সারাদিন হাতের মুঠোয় পেতে যোগ দিন আমাদের হোয়াটস্যাপ গ্রূপে – ক্লিক করুন এই লিঙ্কে পরে পুলিশ অবশ্য পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনলেও বিকালে সেই মৃত টিএমসিপি কর্মীর মৃতদেহ নিয়ে জেলা পুলিশ সুপারের দপ্তরের সামনে একটি বিক্ষোভও দেখায় কলেজের ছাত্রছাত্রীরা। শুধু এখানেই শেষ নয়, শুক্রবার থেকে এই ঘটনার প্রতিবাদে কোচবিহার জেলাজুড়ে ছাত্র ধর্মঘট পলনের সিদ্ধান্তও নিয়েছে জেলা তৃনমূল ছাত্র পরিষদ। আর যার জেরে ইতিমধ্যেই ২৭ শে জুলাইয়ে হওয়া সমস্ত পরীক্ষা পিছিয়ে ৩০ শে জুলাই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কোচবিহারের পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয় বলে জানিয়েছেন উপাচার্য দেবকুমার মুখোপাধ্যায়। এদিন ছেলের মৃত্যুতে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের জন্য সংবাদমাধ্যমের সাহায্যে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানান মাজিদের বাবা মুস্তাকিন আনসারি। দোষীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে যে জেলাজুড়ে প্রতিবাদ, ধর্মঘট চলবে তা জানিয়ে দিয়েছেন টিএমসিপির জেলা কার্যকরী সভাপতি সায়নদীপ গোস্বামী থেকে রাজ্যের সহ সভাপতি রাহুল রায়। অন্যদিকে ঘটনাটিকে দুঃখজনক বলে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারিতে পুলিশি তৎপরতার কথাও উল্লেখ করেছেন কোচবিহার জেলা তৃনমূল সভাপতি তথা মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। তবে তিনি যে এই ঘটনায় যুক্ত নন এদিন সেই কথা আরও একবার স্পষ্ট করে দিয়েছেন ঘটনায় অভিযুক্ত তৃনমূল নেতা মুন্না খান। এদিকে পুলিশ সুপার ভোলানাথ পান্ডে অবশ্য এদিন জানিয়েছেন, “অভিযুক্তদের তল্লাশে চলছে।” সব মিলিয়ে তৃনমূল ছাত্র পরিষদের মাজিদ আনসারির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে অভিযুক্ত তৃনমূল নেতাকে গ্রেপ্তারের দাবিতে কোচবিহার জেলাজুড়ে পথে নামছে শিক্ষার্থীরা, ক্রমশ বাড়ছে আন্দোলনের তেজ – প্রশাসন কিভাবে এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে সেদিকেই নজর রাজনৈতিক মহলের। আপনার মতামত জানান -