প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – এক সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ হলেও, সম্প্রতি তিনি যোগ দিয়েছেন ভারতীয় জনতা পার্টিতে। রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে বৈশালী ডালমিয়া, প্রবীর ঘোষাল থেকে শুরু করে রথীন চক্রবর্তীরা বিজেপিতে যোগ দেওয়ার দিনেই গেরুয়া শিবিরের উত্তরীয় গলায় পড়ে নিয়েছেন তিনি। আর তারপরই তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যোগ দেওয়া হেভিওয়েট নেতারা প্রাক্তন দলের বিরুদ্ধে সরব হলেও, এই ব্যাপারে কি বলেন টলিউডের বিশিষ্ট অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষ! তার দিকে নজর ছিল সকলেরই।

অবশেষে মুখ খুলে তৃণমূল সরকারের বিড়ম্বনা রীতিমত বাড়িয়ে দিলেন এই হেভিওয়েট অভিনেতা। যেখানে টলিউডের মাফিয়ারাজ চলছে বলে বিস্ফোরক অভিযোগ করতে দেখা গেল তাকে।প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর এদিন প্রথম হাওড়ায় বিজেপির দলীয় কার্যালয়ে আসেন অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষ। আর সেখানেই টলিউড নিয়ে বিস্ফোরক অভিযোগ করতে দেখা যায় তাকে।

তিনি বলেন, “একের পর এক প্রযোজক পশ্চিমবঙ্গ থেকে চলে যাচ্ছেন। প্রযোজকদের মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে যত কলাকুশলী দরকার, তার চেয়ে দ্বিগুণ লোক আনতে বলা হচ্ছে। অতিরিক্ত লোকজন বসে বসে টাকা নিচ্ছে। তাই অনেকের মনে অসন্তোষ তৈরি হচ্ছে। যাদের প্রকাশ্যে দেখা যাচ্ছে না। আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই চিত্রটা পরিস্কার হয়ে যাবে। ওরা টলিউডের সিস্টেমের বিরুদ্ধে সরব হবেন। ক্ষমতায় আসার পর মুখ্যমন্ত্রী টলিউড পরিচালনার জন্য ভালো উদ্যোগ নিয়েছিলেন। কিন্তু যাদের দায়িত্ব দিয়ে এখানে বসালেন, নিজেদের আধিপত্য বজায় রেখে জোরজুলুম এবং স্বজনপোষণ চালু করল। অনেকেই হয়ত এদের দলে থাকতে চাইছেন। কিন্তু নিজেদের বিবেককে একবার প্রশ্ন করা উচিত।”

স্বাভাবিকভাবেই অন্যান্য নেতারা যেমন বিজেপিতে যোগ দিয়ে প্রাক্তন দলের বিরুদ্ধে সরব হচ্ছেন, তিনিও সেই একই ভঙ্গিমায় বিজেপিতে যোগ দেওয়ার সাথে সাথেই টলিউড নিয়ে রাজ্যের শাসকদলের বিড়ম্বনা ক্রমশ বাড়িয়ে দিলেন। সামনে বিধানসভা নির্বাচন। বর্তমানে বিজেপি শাসক দলের নেতাদের যেমন নিজেদের দিকে আনতে শুরু করেছে, ঠিক তেমনই টলিপাড়ার দিকে বাড়তি নজর রয়েছে তাদের।

এক্ষেত্রে বিশিষ্ট অভিনেতা অভিনেত্রীদের নিজেদের দলের পতাকা ধরাতে কার্যত সচেষ্ট ভারতীয় জনতা পার্টি। আর এই পরিস্থিতিতে কিছুদিন আগেই বিজেপিতে যোগ দেওয়া রুদ্রনীল ঘোষ এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের বিরুদ্ধে টলিউডে নিয়ে রীতিমতো বোমা ফাটালেন। বিশ্লেষকরা বলছেন, সরাসরি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে রুদ্রনীল ঘোষ অভিযোগ না করলেও, টলিপাড়ায় শাসকদলের ঘনিষ্ঠ যে সমস্ত ব্যক্তিরা রয়েছেন, তাদের দিকেই মূলত অভিযোগ করলেন বিজেপি নেতা। এক্ষেত্রে তিনি টলিউডে মাফিয়ারাজ চলছে বলে বড়সড় অভিযোগ তুলে রীতিমতো শাসকদলের ঘুম উড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলেন।

এমনিতেই বিজেপির হাতে রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা অবনতি সহ গণতান্ত্রিক পরিস্থিতি নষ্ট একাধিক অভিযোগ রয়েছে। তার মধ্যে সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া রুদ্রনীল ঘোষের গলায় টলিউড নিয়ে এই ধরণের উক্তি বিজেপিকে যে যথেষ্ট মাইলেজ পাইয়ে দেবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। সব মিলিয়ে হেভিওয়েট অভিনেতার শাসকদলের বিরুদ্ধে এই ধরনের মন্তব্য পরিপ্রেক্ষিতে তৃণমূলের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া আসে কিনা, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।