এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > পুরসভা নয়,এবার টোটোর লাইসেন্স দিচ্ছে তৃণমূল সংগঠন,অভিযোগ এমনটাই

পুরসভা নয়,এবার টোটোর লাইসেন্স দিচ্ছে তৃণমূল সংগঠন,অভিযোগ এমনটাই


নম্বরপ্লেটহীন টোটো ক্রমশ ঢেকে ফেলছে বালুরঘাটের রাস্তাঘাট। একরকম প্রশাসনের চোখে ধুলো দিয়েই এদের অবাধ যাতায়াত চলছে। ফলে এদের দাপট নিয়ে অভিযোগে সরব সরকারিভাবে লাইসেন্সপ্রাপ্ত টোটোচালকরা। তাঁদের দাবী, এঁদের অনিয়ন্ত্রিত চলাচলের পেছনে ছড়ি ঘোরাচ্ছে পৌরসভার কাউন্সিলর। নম্বরপ্লেটহীন টোটোর এভাবে বেনিয়মিতভাবে চলাচলের কারণে যানযট তো বাড়ছেই, পাশাপাশি রাস্তাঘাটের পথচারীরাও নিত্যদিন সমস্যার মুখে পড়ছে। এদিন শহরের বেশ অনেক জায়গাতেই সরকারি লাইসেন্স প্রাপ্ত টোটোচালকরা এই নতুন টোটোচালকদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সরব হয়েছিলেন। অনেক জায়গায় তাঁদের বাধাও দেওয়া হয়।
জানা গেছে, বছর দেড়েক আগে পুলিশ এবং প্রশাসনের পক্ষ থেকে বালুরঘাট শহরে শহর এবং গ্রামের টোটোগুলোকে দুভাগে ভাগ করে দেওয়া হয়। শহরের টোটোগুলোকে চিহ্নিত করতে সেগুলিকে নীল রং করে দেওয়া হয়। এবং এই ফতোয়াও জারি হয় যে গ্রামীন এবং লাইসেন্সহীন টোটো শহরে ঘুরতে দেখলেই জরিমানা করা হবে। প্রথমে এই নিয়ম মেনে চলাচল করলেও পরে আস্তে আস্তে পরিস্থিতি বিরূপ হয়। প্রশাসন নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয় টোটোচালকদের। বর্তমানে লাইসেন্স নিয়ে বালুরঘাটে টোটো ঘুরছে ১১৮৫ টি। এর ভিতর শহরের টোটো ৬১৫ টি এবং গ্রামীণ টোটো ৫৭০ টি। এছাড়া দেড় হাজারের ও বেশি লাইসেন্সহীন টোটোর অবাধ চলাচল রয়েছে বালুরঘাটে। তবে জানা যাচ্ছে দিনে দিনে এই সংখ্যাটা ক্রমশ বাড়ছে।

বিষয়টি মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে উঠেছে সরকারিভাবে লাইসেন্সপ্রাপ্ত টোটোচালকদের। তাই তৃণমূল প্রভাবিত শ্রমিক সংগঠনের টোটো শাখার সদস্যরা তদন্ত করতে শুরু করেন কারা এদের মদত দিচ্ছে! তাতে জানা যায় শাসকদলেরই অন্য একটি টোটো ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন নামে আরো একটি সংস্থা এই বেআাইনি ভাবে টোটোওয়ালাদের লাইসেন্স সরবরাহ করছে। শুধু তাই নয়, তাঁরা টাকাও নিচ্ছে মিথ্যে পরিচয়পত্র এবং নম্বরপ্লেট দেওয়ার জন্য। এ খবর জানতে পেরে ক্ষোভ চরমে ওঠে তৃণমূক শ্রমিক সংগঠনের টোটো চালকদের। এদিন তাই তাঁরা ওই টোটো ওনার্স অ্যাসোসিয়েশানের কয়েকজনকে আটকে রেখে প্রতিবাদ করতে থাকেন। মুহূর্তেই পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। তখন ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে বিষয়টি নিয়ন্ত্রণে আনেন। তবে এখানেই শেষ নয়। এরপরও দফায় দফায় শহরের বিভিন্ন প্রান্তে নতুন টোটোচালকদের বাধা দেওয়ার কর্মসূচি চলতে থাকে।

আরো খবর পেতে চোখ রাখুন প্রিয়বন্ধু মিডিয়া-তে

এ প্রসঙ্গে তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের টোটো শাখার সভাপতি প্রণব ওঁরাও,নেতা নন্তু মহন্ত এবং খোকন সরকারের মতে আরো অনেকে অভিযোগে জানান যে, এতে পৌরসভার মদত রয়েছে নয়তো এভাবে কোনো সংগঠন লাইসেন্স দিতে পারে না। আর পৌরসভার কাজ কীভাবে টোটো ওনার্স অ্যাসোসিয়েশান করতে পারে এনিয়েও প্রশ্নে সরব হন তাঁরা। এছাড়া আরো জানান যে পরিচয়পত্র এবং নম্বরপ্লেট বাবদ নাকি নেওয়া হচ্ছে মাথাপিছু ৩০০ এবং ২৫০ টাকা। এতোবেশি টাকা নিয়েও সরকারি লাইসেন্স ও পরিচয়পত্র দিতে পারছে না তাঁরা। তাই নাকি এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে তাঁরা প্রতিবাদ কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন। তবে এ ব্যাপারে কোনো প্রকাশ্য মন্তব্য করতে দেখা যায়নি টোটো ওনার্স অ্যাসোসিয়েশানের আধিকারিকদের।

এই বিষয়টি নিয়েই মন্তব্য পাওয়া যায় বালুরঘাট পৌরসভার চেয়ারম্যান-ইন-কাউন্সিলের সদস্য তথা পৌর পরিবহনের দায়িত্বে থাকা শংকর দত্ত। তিনি জানান যে, পৌরসভা এ কাজ করছে না। তবে তিনি উর্দ্ধতন কতৃপক্ষের নির্দেশ মতোই টোটে ওনার্স অ্যাসেসিয়েশানকে দিয়েই এই লাইসেন্স বিতরণের কাজটি করাচ্ছিলেন। তবে নম্বরপ্লেট বা পরিচয়পত্রের জন্য তাঁদের টাকা নেওয়ার কথা নয়। এ কাজটা পুরসভাই করবে। অন্যদিকে, বালুরঘাট পৌরসভার চেয়ারম্যান রাজেন শীল এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান যে প্রথমে বিষয়টি তাঁরাই দেখছিলেন। পরে পরিবহন দপ্তর তাঁদের দায়িত্বে নেন ব্যাপারটা। কিন্তু তাঁরা এতোটাই এ ব্যাপারে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছে কালে কালে যে পুরসভাকেই ফের কাজটিতে নাক গলাতে হয়। আপতত চেয়ারম্যান-ইন-কাউন্সিলের সদস্য শঙ্কর বাবু কাজটি সামলাচ্ছেন। আর এই কাজটি সরাসরি এখন পুরসভার আওতাধীন। সেখাই কোনো সংগঠন এ কাজ করতে পারে না। এছাড়া তিনি আরো জানান যে এই মুহূর্তে কাউকে লাউসেন্সে দেওয়া হচ্ছে না। তবে পুরানো তালিকা থেকে ৮৮ জনকে পৃথকভাবে লাইসেন্স দেওয়া হবে। বর্তমানে টোটো নিয়ে যে কেচ্ছা হচ্ছে তা তদারক করা হবে। এছাড়াও কেউ যদি পৌরসভার দুর্নাম রটায় তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে নেওয়া হবে আইনানুগ ব্যবস্থা। এমনটাই স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিলেন পুরসভার চেয়ারম্যান রাজেন শীল।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!