এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > তৃণমূলের রদবলের পরে পদ থেকে সরালেও এখনও তিনিই যে ‘সব’ ফের ‘প্রমান’ অনুব্রত মন্ডলের !

তৃণমূলের রদবলের পরে পদ থেকে সরালেও এখনও তিনিই যে ‘সব’ ফের ‘প্রমান’ অনুব্রত মন্ডলের !


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – বীরভূম জেলার তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি অনুব্রত মন্ডলকে বলা হয় জেলার সর্বেসর্বা। বীরভূম জেলা তো বটেই, রাজ্য তৃণমূলেরও একজন অত্যন্ত দাপুটে নেতা তিনি। বীরভূম জেলার সভাপতির আসন অলংকৃত করার সাথে সাথেই দীর্ঘসময় ধরে তিনি ছিলেন পূর্ব বর্ধমান জেলার তিন বিধানসভা কেন্দ্র মঙ্গলকোট, কেতুগ্রাম ও আউশগ্রামের পর্যবেক্ষক। কিন্তু, সম্প্রতি তৃণমূল দলের সাংগঠনিক ক্ষেত্রে কিছুটা রদ দল ঘটিয়ে উক্ত তিন বিধানসভা কেন্দ্রের পর্যবেক্ষক পদটি বাতিল করে দেওয়া হয়েছে।

সংবাদসূত্রে জানা গেছে, গত ৪ তা জুলাই পূর্ব বর্ধমান তৃণমূল কংগ্রেস জেলা সভাপতি স্বপন দেবনাথ জেলার তৃণমূল দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের নিয়ে একটি ২০২১এর বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল দলের স্ট্রাটেজি বিষয়ে একটি ভার্চুয়াল সভার আয়োজন করেন। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় এই ভার্চুয়াল সভায় পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোট, কেতুগ্রাম ও আউশগ্রামের কোন নেতা, কর্মী যোগ দেননি।

এরপর গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল ৪ টায় পূর্ব বর্ধমানের ওই তিন বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল নেতা-কর্মীদের নিয়ে একটি নির্বাচনী মূলক ভার্চুয়াল বৈঠকের আয়োজন করেন বীরভূম জেলার তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি অনুব্রত মন্ডল। উক্ত ভার্চুয়াল সভায় যোগ দিয়েছিলেন কেতুগ্রামের বিধায়ক শেখ সাহানেওয়াজ, আউশগ্রামের বিধায়ক অভেদানন্দ থান্দার, মঙ্গলকোটের তৃণমূল ব্লক সভাপতি অপূর্ব চৌধুরী, কেতুগ্রাম ১ ও ২ ব্লকের তৃণমূল সভাপতি তরুণ মুখ্যোপাধ্যায় ও বিকাশ মজুমদার এছাড়াও আউশগ্রাম ১ ও ২ ব্লকের সভাপতি শেখ সালেক রহমান ও রামকৃষ্ণ ঘোষ, গুসকড়া শহর সভাপতি কুশল মুখ্যোপাধ্যায়ে প্রমুখেরা।

সংবাদসূত্রে জানা গেছে,এই বৈঠকে পূর্ব বর্ধমান জেলার উক্ত তিন বিধানসভা কেন্দ্রের সকল পঞ্চায়েত প্রধান ও উপপ্রধানদেরও বৈঠকে উপস্থিত থাকবার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল অনুব্রত মন্ডলের পক্ষ থেকে। এই নির্বাচনী বৈঠকে অনুব্রত মন্ডল তাঁর অধীনস্থ তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের জানিয়েছেন যে, উক্ত তিন বিধানসভা কেন্দ্রের নির্বাচনে হাড্ডা-হাড্ডি লড়াই হবে, এই লড়াইয়ে দলকে জেতাতে প্রতিটি বুথে তিনি ৪০ জন তৃণমূল সদস্যকে কে নিয়ে একটি কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন, এই কমিটিতে ৩০ জন পুরুষ ও ১০ জন মহিলা থাকবেন। অনুব্রত বাবু প্রতিদিনই এই এলাকা গুলির সমস্ত নেতাদের সঙ্গে যোগযোগ করতে একেক দিন এক একটি এলাকায় যাবেন।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

কিন্তু, এই তিন বিধানসভা কেন্দ্রের পর্যবেক্ষক পদ থেকে অপসারণের পরেও অনুব্রত মন্ডলের করা এই নির্বাচনী সভা করা নিয়ে তৃণমূল দলের অন্দরেই শুরু হয়ে গেছে ক্ষোভ। এ প্রসঙ্গে অনুব্রত মন্ডলের দিকে অভিযোগের আঙ্গুল খাড়া করে মঙ্গলকোটের তৃণমূল বিধায়ক তথা রাজ্য সরকারের জনৈক মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী বলেছেন, ‘‘দলের গঠনতন্ত্র কে মানবেন আর কে মানবেন না, তা তাঁর ব্যাপার। ৪০ বছর পরে সিপিএমকে হারিয়ে এখানে আমি জিতেছি। পেশিশক্তি দিয়ে কাজ হবে না, মঙ্গলকোটে জিততে হলে এ বার মানুষের মন জয় করতে হবে।’’

রাজ্যের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর এই বক্তব্যের সম্পূর্ণ বিরোধিতা করেছেন মঙ্গলকোট ব্লকের তৃণমূল সভাপতি অপূর্ববাবু। এ প্রসঙ্গে অপূর্ববাবু বলেছেন, ‘‘যিনি এলাকাতেই আসেন না তিনি কী করে মানুষের মন বুঝবেন? আমরা কেষ্টদার (অনুব্রত) নেতৃত্বে ছিলাম, আছি এবং থাকব। তিনি শীঘ্রই বুথ কমিটির সঙ্গে বসবেন বলে জানিয়েছেন।’’ কেতুগ্রাম বিধানসভার বিধায়কের কণ্ঠেও শোনা গেল অনুব্রত মনকে সমর্থনের সুর। এ প্রসঙ্গে কেতুগ্রামের বিধায়ক শেখ সাহানেওয়াজ বলেছেন, ‘‘অনেকে ভেবেছিলেন, পর্যবেক্ষক পদ বিলুপ্ত হওয়ায় হয়তো কেষ্টদার নেতৃত্ব খর্ব হল। তা ঠিক নয়।’’

শেষপর্যন্ত এই বৈঠকের বিষয়ে মুখ খুলতে দেখা গেল স্বয়ং অনুব্রত মণ্ডলকে। এ প্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, ‘‘আমি দলের তরফে বোলপুর লোকসভা কেন্দ্রের দায়িত্বে রয়েছি। ওই তিন এলাকা সেই কেন্দ্রের অধীনে রয়েছে, তাই বৈঠক করেছি। পর্যবেক্ষক হিসেবে বৈঠক করিনি।’’ প্রসঙ্গত, গতকাল মঙ্গলকোট, কেতুগ্রাম ও আউশগ্রামের তৃণমূল দলের নবনিযুক্ত কোঅর্ডিনেটর সুভাষ মণ্ডলকে বারবার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে ফোনে পাওয়া যায়নি।

এমনি তাঁর উদেশ্যে মেসেজ পাঠিয়েও কোন রিপ্লাই পাওয়া যায় নি। তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য স্তরের মুখপাত্র দেবু টুডু এই বৈঠকের প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, ‘‘এটি দলের বিষয়। রাজ্য নেতৃত্ব দেখছেন।’’ ইতিপূর্বে নিজের পার্টি অফিসে বসে জেলায় লকডাউন ঘোষণা করে বিতর্কের কেন্দ্রে এসেছিলেন অনুব্রত মন্ডল। আর এবার পর্যবেক্ষকের পদ চলে যাবার পরেও নির্বাচনী বৈঠকে ডেকে পুনরায় বিতর্কের কেন্দ্রে এলেন তিনি।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!