এখন পড়ছেন
হোম > বিশেষ খবর > বালুরঘাটে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চরমে, বিধানসভার থেকেও খারাপ ফলের শঙ্কায় কর্মীরা

বালুরঘাটে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চরমে, বিধানসভার থেকেও খারাপ ফলের শঙ্কায় কর্মীরা

নেত্রীর নির্দেশিকা উপেক্ষা করে জেলা সভাপতি একক সিদ্ধান্তেই দল চালাচ্ছেন। এমনকি মমতা বন্দোপাধ্যায় স্বয়ং কাউকে দলের গুরুত্বপূর্ন পদ দিলেও সেই পদাধিকারীদের না জানিয়েই জেলা সভাপতি নিজের ইচ্ছে মত যা খুশি করে চলেছেন। গতকাল দক্ষিণ দিনাজপুরে এমনই অভিযোগ করলেন খোদ তৃণমূল কংগ্রেসেরই একাধিক নেতাকর্মী। এর আগেও দক্ষিণ দিনাজপুরের দলীয় কোন্দল মেটাতে সপ্তাহ দুয়েক আগে ছুটে আসতে হয়েছিল খোদ দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সুব্রত বক্সীকে। গত ১৩ ডিসেম্বর গঙ্গারামপুরের রবীন্দ্রভবনে সভাপতি বিপ্লব মিত্রকে তিনি নির্দেশ দিয়েছিলেন যে সবাইকে সাথে নিয়েই চলতে হবে। সাধারণ সম্পাদকের সেই নির্দেশ বাণীর দুই সপ্তাহ কাটতে না কাটতেই বালুরঘাটের সুবর্ণতট-এর এই সভায় ফের তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলই প্রকাশ্যে এলো।

গতকাল বালুরঘাটে তৃণমূল কংগ্রেসের এসসি-এসটি সেলের বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়। প্রাক্তন বিধায়ক সত্যেন রায়ের ডাকে এই সভায় প্রাক্তন মন্ত্রী শংকর চক্রবর্তী, কুমারগঞ্জের বিধায়ক তোরাব হোসেন, হরিরামপুর পঞ্চায়েত সভাপতির প্রাক্তন সভাপতি সুভাশিষ পাল বালুরঘাট টাউন সভাপতি সুভাষ চাকী সহ দলীয় পদাধিকারী আরও অনেকেই উপস্থিত ছিলেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী বাচ্চু হাঁসদা সরকারি কাজে কলকাতায় থাকলেও এই সভায় তাঁর পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। এসসিএসটি সেলের বর্ধিত এই সভায় মূল আলোচ্য বিষয়ই ছিল দলের দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্রের বিরুদ্ধাচারণ। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মমতা বন্দোপাধ্যায় একাধিকবার দক্ষিণ দিনাজপুরের নেতাকর্মীদের একসাথে নিয়ে চলার নির্দেশ দিয়ে আসলেও জেলাসভাপতি ও তাঁর অনুগামীরা কেউই তা মেনে চলছেন না। এদিনের সভায় উপস্থিত নেতা কর্মীদের অভিযোগ জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্র দল পরিচালনায় পদাধিকারী কাউকেই পাত্তা দিচ্ছেন না। পাত্তা তো দূর, ন্যূন্যতম সম্মানটুকুও দিচ্ছেন না বামেদের বিরুদ্ধে লড়াই-আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী নেতা কর্মীদের।

তাঁদের আরও অভিযোগ এভাবে নেত্রীর নির্দেশিকা এই জেলায় না মানা হলে বিধানসভা নির্বাচনের চাইতেও আগামী পঞ্চায়েতে খারাপ ফল হতে পারে এখানে। প্রসঙ্গত, গত শনিবার তপন এলাকায় খোদ উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী বাচ্চু হাঁসদার নেতৃত্ত্বে দলের জেলা সভাপতির বিরোধিতায় বিক্ষোভ সভাও করেছেন দলীয় কর্মীরা। সেখানে তপন ব্লকের ১১টি অঞ্চলের নতুন সভাপতি ও কার্যকরী সভাপতিদের নাম ঘোষণা করেন মন্ত্রী বাচ্চু হাসদা। এসটিএসসি সেলের সভাপতি তথা প্রাক্তন বিধায়ক সত্যেন রায় জানিয়েছেন যে তাঁরা সবাই তৃণমূলের সৈনিক। পাশাপাশি তিনি আরও জানিয়েছেন যে, এসসিএসটি সেলের অন্যতম উদ্দেশ্যই হল রাজ্য সরকারের উন্নয়নমূলক কাজ গুলি মানুষের সামনে তুলে ধরা। তাঁদের একার পক্ষে এ কাজ সম্ভব নয় বলেই দলের অন্যান্য সকলকে এদিন আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। পাশাপাশি জেলা সভাপতির নাম না করে তিনি বলেন, যাঁরা লড়াই করে দলটাকে আজকের জায়গায় পৌঁছে দিয়েছেন, দলে তাঁদের কোনও স্থান তো দূর সম্মানও দেওয়া হয়না। প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক সুভাশিষ পালও জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে একনায়কতন্ত্রের অভিযোগ করেছেন। যদিও এ ব্যাপারে জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্র জানিয়েছেন যে এধরণের কোনো সভার বিষয়ে তাঁর কিছুই জানা নেই।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!