তৃণমূল আছে তৃণমূলেই? গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে হেভিওয়েট নেতা পুলিশে যেতেই বাড়িতে শুরু বোমাবাজি তৃণমূল বর্ধমান রাজনীতি রাজ্য November 21, 2020 প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – একুশের বিধানসভা নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে, ততই রাজ্যজুড়ে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের তীব্রতা বাড়ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বস্তুত, তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব কিন্তু সর্বজনবিদিত। তৃণমূল শিবিরের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বর্তমানে নিয়মিত সংবাদ শিরোনামে উঠে আসছে। আর এই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বই তৃণমূলের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। একুশের বিধানসভা নির্বাচনের লক্ষ্যে তৃণমূল রাজ্য জুড়ে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে জোর তৎপরতার সংগে। কিন্তু এত কিছু করেও রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব কিন্তু কিছুতেই আটকানো যাচ্ছেনা। সেরকমই নজির মিলল পূর্ব বর্ধমান জেলায়। দীর্ঘদিন ধরেই এই জেলায় তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের আভাস পাওয়া যাচ্ছিল। আর এবার গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে হেভিওয়েট নেতা থানায় যাওয়ায়, আশঙ্কা অনুযায়ী তাঁর বাড়িতে শুরু হয় বোমাবাজি। প্রসঙ্গত, আগেই হামলার অনুমান করে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বর্ধমান থানায় লিখিত অভিযোগ করেছিলেন পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সদস্য নুরুল হাসান। আর তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তাঁর বাড়িতে বোমাবাজি এবং হামলার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় তৃণমূল নেতা শেখ জামালের বিরুদ্ধে। খুব স্বাভাবিকভাবেই বিধানসভা নির্বাচনের আগে দলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে এভাবে বোমাবাজি অস্বস্তি বাড়িয়েছে। সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার বিকেলে বর্ধমান থানায় জেলা পরিষদের সদস্য নুরুল হাসান একটি লিখিত অভিযোগ করেন। তিনি জানান, বুধবার সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ শেখ জামালের নেতৃত্বে একটি গোপন বৈঠক হয় ডাঙাপাড়ার নিচুপাড়ায় একটি ঘরে। যেখানে উপস্থিত ছিলেন শেখ জামাল ও তাঁর বাবা মনসুর জামাল। তাঁরা ঐ গোপন বৈঠকে জানান, কাকলি গুপ্ত ও মানস ভট্টাচার্যের নির্দেশে নুরুল হাসান সহ আরো তিন চার জনকে বিধানসভা নির্বাচনের আগে মঙ্গলকোট থেকে দুষ্কৃতী এনে হামলা চালানো হবে। পাশাপাশি শেখ জামাল জানিয়েছেন, পুলিশ তাঁর কিছুই করতে পারবেনা। অন্যদিকে নুরুল হাসান পুলিশের কাছে মানস ভট্টাচার্যের কল লিস্ট চেক করার দাবিও করেন। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - বৃহস্পতিবার বিকেলে থানাতে লিখিত অভিযোগ জমা করে আসার পর গভীর রাতে নুরুল হাসানের বাড়িতে হামলা চালানো হয় এবং বোমাবাজি করা হয়। এ প্রসঙ্গে নুরুল হাসান শেখ জামালের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলে বলেন, গভীর রাতে জামাল এবং তাঁর সাঙ্গপাঙ্গরা নুরুলের বাড়িতে হামলা চালিয়েছে, বোমাবাজি করেছে। এই ঘটনা সামনে আসার সাথে সাথেই আবারও বর্ধমানের তৃণমূল শিবিরের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ছবি প্রকাশ্যে এলো বলে মনে করা হচ্ছে। অন্যদিকে পূর্ব বর্ধমানের তৃণমূলের ব্লক সভাপতি কাকলি গুপ্ত অবশ্য এই ঘটনার সাথে দলের কোনো যোগাযোগ নেই বলেই দাবি করেছেন। পাল্টা নুরুল হাসানকেই তিনি অভিযুক্তের তালিকায় ফেলেছেন বলে খবর। অন্যদিকে শেখ জামাল তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগকে পুরোপুরি খারিজ করেছেন। এ প্রসঙ্গে রাজ্য তৃণমূলের মুখপাত্র দেবু টুডু জানিয়েছেন, পুরো ব্যাপারটি পুলিশের তদন্ত সাপেক্ষ। তবে দলের অভ্যন্তরীণ কোনো সমস্যা থাকলে অবশ্যই আলোচনা করে তা মেটানো হবে। অন্যদিকে পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সদস্য নুরুল হাসান পুলিশে অভিযোগ জানানোর পরেও কিভাবে তাঁর বাড়িতে রাতের বেলা হামলা হলো, তা নিয়ে কিন্তু প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। রাজনৈতিক মহলের অনেকেই আড়ালে বলছেন, তাহলে কি নুরুল হাসানের অভিযোগই সত্য? পুলিশের কাছ থেকেই কি শেখ জামালের কাছে খবর গিয়েছে? যদিও এই ঘটনা পুরোপুরিই অনুমান সাপেক্ষ। পুলিশ এই ঘটনার তদন্ত চালাচ্ছে। অন্যদিকে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল নিয়ে কিন্তু ইতিমধ্যেই বিশেষজ্ঞরা সাবধান করেছেন। একুশের বিধানসভা নির্বাচনের পরিপ্রেক্ষিতে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব কিন্তু বড় বিপর্যয়ের মুখে দাঁড় করাতে পারে দলকে। তাই সবার আগে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নির্মূল করা তৃণমূল শিবিরের আশু কর্তব্য বলে মনে করা হচ্ছে। আপনার মতামত জানান -