এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > তৃণমূলের পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে কোটি টাকার অনিয়মের অভিযোগ! তুলকালাম স্থানীয় তৃণমূল নেতাদেরই

তৃণমূলের পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে কোটি টাকার অনিয়মের অভিযোগ! তুলকালাম স্থানীয় তৃণমূল নেতাদেরই


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী শিবির শাসকদল তৃণমূলের বিরুদ্ধে বারবার নানারকম দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন, যার মধ্যে অন্যতম হলো আর্থিক দুর্নীতি। কিন্তু এবার তৃণমূলের বিরুদ্ধে তৃণমূলেরই একাংশ আর্থিক দুর্নীতির গুরুতর অভিযোগ নিয়ে এলো। যে ঘটনায় শোরগোল পড়ে গেল শাসক দলের অন্দরে। গতকাল সোমবার পুরাতন মালদহ ব্লকের তৃণমূল পরিচালিত মহিষবাথানি গ্রাম পঞ্চায়েতে তৃণমূল বোর্ডের বিরুদ্ধে কোটি কোটি টাকার আর্থিক তছরূপীর অভিযোগ নিয়ে বচসা ও তুলকালাম বাঁধালেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। চললো বিক্ষভ, ভাঙা পড়লো গ্রাম পঞ্চায়েতের অফিসের চেয়ার টেবিল।

গতকাল সোমবার সকাল থেকেই মহিষবাথানি গ্রাম পঞ্চায়েত অফিস চত্বরে শোরগোল শুরু হয়েছিল। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই বহু তৃণমূল কর্মী ও নেতা পঞ্চায়েত অফিসের সামনে জড়ো হন। তারা অভিযোগ করেন, মহিষবাথানি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান, উপপ্রধান, নির্মাণ সহায়ক সকলে মিলে ষড়যন্ত্র করে সংশ্লিষ্ট এলাকার উন্নয়নের কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

বিক্ষোভরত তৃণমূলের নেতাকর্মীদের অভিযোগ, পঞ্চায়েতের এই আর্থিক তছরূপী নিয়ে জেলা প্রশাসনের কাছে তারা বারবার অভিযোগ করেছেন। কিন্তু জেলা প্রশাসন এ ব্যাপারে সম্পূর্ণ নিরুত্তর। তাই এবারে গ্রামবাসীদের সঙ্গে প্রত্যক্ষ আন্দোলনে নেমেছেন
তাঁরা। পঞ্চায়েত অফিস ঘেরাও ও বিক্ষোভের পাশাপাশি, অফিসের চেয়ার টেবিল ভাঙ্গার অভিযোগ উঠেছে। এই গণ্ডগোলের পুলিশের কাছে পৌঁছায়, বিরাট পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।

গতকালের এই বিক্ষভ প্রসঙ্গে মহিষবাথানি গ্রাম পঞ্চায়েতের জনৈক তৃণমূল নেতা ঝাপ্পু রাজবংশী বলেছেন, ” ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষে প্রায় সাড়ে চার কোটি টাকার কাজ করার কথা ছিল। তার অর্ধেক টাকাই আত্মসাৎ করেছে প্রধান সহ পঞ্চায়েতের কর্মীদের একাংশ। তার প্রতিবাদেই আমরা আন্দোলনে নেমেছি। পঞ্চায়েতে কোনও ভাঙচুর করা হয়নি। আমাদের বিরুদ্ধে টেন্ডার প্রক্রিয়া ব্যাহত করা নিয়ে যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে তা ভিত্তিহীন। আমরা এলাকার মানুষের স্বার্থে ও উন্নয়নের দাবিতে এদিন বিক্ষোভ দেখিয়েছি।”

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

তবে মহিষবাথানি গ্রাম পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে ওঠা এই অভিযোগকে সম্পূর্ণভাবে অস্বীকার করেছে। সেই সঙ্গে গতকাল পঞ্চায়েতে টেন্ডার প্রক্রিয়া ব্যাহত করার অভিযোগ করেছে বিক্ষভকারী তৃণমূল নেতৃত্বের বিরুদ্ধে। এ প্রসঙ্গে মহিষবাথান গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের স্বামী জাহাঙ্গীর আলম বলেছেন, ” যে কাজ নিয়ে ওই নেতারা অভিযোগ তুলেছেন, তা এই প্রধানের আমলের কাজ নয়। তৃণমূল নেতা ঝাপ্পু রাজবংশী পঞ্চায়েতের কাজের পাঁচ কোটি টাকার টেন্ডার প্রক্রিয়ায় একাই অংশ নিতে চাইছেন। এদিন টেন্ডার প্রক্রিয়া হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তাঁরা কাউকে আবেদনপত্র জমা দিতে দেননি। উল্টে বিক্ষোভের নাম করে পঞ্চায়েতে ভাঙচুর চালানো হয়েছে। তাঁরা নিজেদের স্বার্থে এলাকার সাধারণ মানুষকে উসকে দিয়ে পঞ্চায়েত ঘেরাও করেছেন। বিষয়টি আমরা দলীয় নেতৃত্বকে জানাব।”

গতকালের এই ঘটনায় অনেকেই তৃণমূলের মধ্যে গোষ্ঠী কোন্দলের আভাস পেয়েছেন। তবে তৃণমূল দল গোষ্ঠীকোন্দলের বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে উড়িয়ে দিয়েছে। এ প্রসঙ্গে পুরাতন মালদহ ব্লক তৃণমূল নেতা জওহর ঘোষ জানিয়েছেন যে, তৃণমূল দলের মধ্যে থেকে যারা দলের বিরুদ্ধতা করবে, দল তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। দুর্নীতি ঘটলে তা খতিয়ে দেখবে প্রশাসন। তাঁর মতামত, তৃণমূল দলে কোন গোষ্ঠীকোন্দল নেই। তৃণমূলের জেলা সভানেত্রী মৌসম নুর এ প্রসঙ্গে জানিয়েছেন যে, এই বিষয়টি তার জানা নেই। এ বিষয়ে তিনি খোঁজ নিয়ে দেখবেন।

তবে মহিষবাথানি গ্রাম পঞ্চায়েতের অফিসে তৃণমূল বোর্ডের বিরুদ্ধে তৃণমূল নেতাদের এই বিক্ষভের বিষয়টি নিয়ে কটাক্ষ করেছে বিরোধী দল বিজেপি। এ প্রসঙ্গে পুরাতন মালদহ ব্লকের জনৈক বিজেপি নেতা নিতাই মণ্ডল জানিয়েছেন, ” মঙ্গলবাড়ি থেকে শুরু করে যাত্রাডাঙা, মহিষবাথানি- তৃণমূল পরিচালিত সবক’টা পঞ্চায়েতে অনিয়মের আখড়া হয়ে উঠেছে। তা এদিন তৃণমূলের নেতারাই প্রমাণ করে দিলেন।”

আপনার মতামত জানান -

ট্যাগড
Top
error: Content is protected !!