এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > তৃণমূলে তিতিবিরক্ত মমতা ঘনিষ্ঠ, সংখ্যালঘু ভোটে বড়সড় ফাটল! কটাক্ষ বিরোধীদের!

তৃণমূলে তিতিবিরক্ত মমতা ঘনিষ্ঠ, সংখ্যালঘু ভোটে বড়সড় ফাটল! কটাক্ষ বিরোধীদের!


 

প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- সংখ্যালঘু ভোট নিয়ে এতদিন অনেক দাপাদাপি ছিল এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর। তিনি ভেবেছিলেন যে, সংখ্যালঘু সম্প্রদায় যেন তার হাতের মুঠোয় রয়েছে। তিনি যা বলবেন, তারা তাই করবে। কিন্তু যত সময় যাচ্ছে, ততই সেই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষরাও এই রাজ্যের সরকারের বুজরুকি এবং চালাকি ধরে ফেলছে। আর এবার প্রকাশ্যে তৃণমূলের বিস্ফোরক মন্তব্য করে বসলেন দলের অন্যতম মুখপাত্র তথা সংখ্যালঘু মুখ বলে পরিচিত কামাল হাসান। তিনি যে কার্যত এই তৃণমূলের উপর বিরক্ত, তা তার বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। এখন প্রথম কথা, তিনি সংখ্যালঘু মুখ, আর দ্বিতীয় কথা, সংখ্যালঘুদের মধ্যে এই একমাত্র ব্যক্তি তৃণমূলের রাজ্যস্তরের মুখপাত্রদের তালিকায় ছিলেন। ফলে এমন একজন হেভিওয়েট যখন দলের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে মন্তব্য করছেন এবং তৃণমূলের প্রতি বিরক্ত বলে জানিয়ে দিচ্ছেন, তখন বুঝতে হবে যে, আগামী দিন কতটা দুর্বিসহ হয়ে উঠতে চলেছে এই রাজ্যের শাসকদলের কাছে। যে সংখ্যালঘু ভোট নিয়ে এত বড়াই করতেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার দল, এবার যে ধীরে ধীরে সেই সংখ্যালঘু সমাজও তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে, তা কামাল হাসানের কথার মধ্যে দিয়ে আরও একবার স্পষ্ট হয়ে গেল বলেই মনে করছেন একাংশ।

প্রসঙ্গত, এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করেন তৃণমূলের মুখপাত্র কামাল হাসান। তিনি বলেন, “আমার কোনো গুরুত্ব নেই‌। আমি আর তৃণমূলে থাকতে পারছি না। সংখ্যালঘুদের পক্ষ থেকে প্রচন্ড চাপ আসছে। আমার বলার কোনো স্বাধীনতা নেই। তাহলে আমার এখানে থেকে লাভ কি? একমাত্র সংখ্যালঘু মুখ হিসেবে আমি এই মুখপাত্রদের তালিকায় রয়েছে। মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনে যা হয়েছে, তা মেনে নেওয়া যায় না।” অর্থাৎ খুব সহজেই বোঝা যাচ্ছে যে, একজন মুখপাত্র, তৃণমূলের রাজ্যস্তরের নেতা তিনিই কতটা বিরক্ত এই দলের ওপর। আর সবথেকে বড় কথা, তিনি একজন সংখ্যালঘু সমাজের প্রতিনিধি। ফলে যে সংখ্যালঘু ভোট তৃণমূলের পক্ষে আছে বলে তাদের দলের নেতারা দাবি করেন, সেখানে এত বড় মুখপাত্রের তালিকা থেকেও, তিনি যখন কথা বলতে পারছেন না বলে প্রকাশ্যে দাবি করছেন, তখন বোঝাই যাচ্ছে যে, রাজ্যের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ এই তৃণমূলকে মোটেই ভালো চোখে নিচ্ছে না। শুধু প্রয়োজন একটা শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের। তাহলেই স্পষ্ট হয়ে যাবে যে, এই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ভোটও চলে গিয়েছে তৃণমূলের বিপক্ষে বলেই দাবি একাংশের।

ইতিমধ্যেই গোটা বিষয়ে কটাক্ষ করতে শুরু করেছে বিরোধীরা। তাদের দাবি, এই সরকারের থেকে সকলেই মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে অনেক দিন ধরে ভুল বুঝিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার দলের মধ্যেই যেভাবে এক সংখ্যালঘু নেতা অসন্তুষ্ট, তাতে বোঝাই যাচ্ছে যে, রাজ্যের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ তারা কতটা বঞ্চিত! তারা কতটা রেগে আছে এই সরকারের ওপর! আগামী দিনে এই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সমর্থন আর তৃণমূলের দিকে যাবে না। তাদের ভোট নিয়ে গর্ব করার দিন শেষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। এবার ক্ষমতা থেকে বিদায় নেওয়ার জন্য তৈরি হন বলেই দাবি বিরোধী শিবিরের।

পর্যবেক্ষকদের মতে, হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ এমনিতেই এই তৃণমূল সরকারের ওপর প্রচন্ড বিরক্ত। নিজেদের ধর্মের কথা ভেবে তো বটেই, এমনকি যে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে খুশি করতেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিভিন্ন কাজকর্ম করে, সেই কারণেও হিন্দু সম্প্রদায় তৃণমূলের দিকে আর ঝুঁকবে না। তবে এবার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কেও ক্ষেপিয়ে তুলছে এই রাজ্যের সরকার। যেখানে দলের ভেতরে থেকে দলের একজন মুখপাত্র, যিনি সংখ্যালঘু মুখ বলে পরিচিত, তিনিই নিজের দল সম্পর্কে বিরক্তি ভাব প্রকাশ করছেন, সেখানে বুঝে নিতে হবে যে, সেই সমাজের অন্যান্য মানুষরা এই সরকারকে কোন চোখে দেখছে! স্বাভাবিক ভাবেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এখন আর কিছু করার নেই। এবার তার বিপদ আসন্ন। যে সংখ্যালঘু ভোট তার একমাত্র তুরুপের তাস বলে মনে করা হত, এবার সেখানেও ফাটল ধরতে শুরু করলো‌। আগামী দিন কামাল হাসান তো বটেই, এরকম আরও অনেক সংখ্যালঘু মুখ, যারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ এবং যাদের হাতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের একটা বড় ভোটব্যাঙ্ক রয়েছে, তারাও এই সরকারের থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে। যার ফলে চোখে সর্ষেফুল দেখতে হবে তৃণমূল কংগ্রেসকে। দিনের শেষে তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক সমালোচকরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!