এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > বিজেপি > বিজেপিতে মুকুলের জায়গা নিচ্ছেন শুভেন্দু? ক্রমশ কি ব্রাত্য হচ্ছেন বাংলার চাণক্য? গুঞ্জন চারিদিকে

বিজেপিতে মুকুলের জায়গা নিচ্ছেন শুভেন্দু? ক্রমশ কি ব্রাত্য হচ্ছেন বাংলার চাণক্য? গুঞ্জন চারিদিকে


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – তৃণমূল ভাঙ্গার কাজটা শুরু করেছিলেন মুকুল রায়। কেউ স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারেনি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছায়াসঙ্গী হিসেবে পরিচিত তৃণমূল কংগ্রেসের এক সময়কার সেকেন্ড-ইন-কমান্ড মুকুলবাবু ঘাসফুল শিবির ত্যাগ করবেন। কিন্তু প্রায় চার বছর আগে তৃণমূল কংগ্রেস ত্যাগ করে প্রথম তৃণমূলের অন্দরে ভাঙ্গনকে তীব্র করে দিয়েছিলেন সেই মুকুলবাবু। তবে তিনি বিজেপিতে যোগদান করার পর তৃণমূলের পক্ষ থেকে গোটা ব্যাপারে গুরুত্ব দেওয়া না হলেও, মুকুলবাবু বিজেপিতে অভিষিক্ত হওয়ার পর থেকেই তৃনমূল ত্যাগের হিড়িক পড়ে যেতে শুরু করে।

বর্তমানে তা স্বাভাবিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। মুকুল রায়ের পর তৃণমূল কংগ্রেসের হেভিওয়েট শীর্ষ নেতা হিসেবে পরিচিত শুভেন্দু অধিকারী গত বছরের ডিসেম্বর মাসে যোগদান করেন ভারতীয় জনতা পার্টিতে। অনেকেই বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দক্ষিণ হস্ত ছিলেন মুকুল রায় এবং বামহস্ত ছিলেন এই শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু সেই দুইজনই এখন ভারতীয় জনতা পার্টিতে।

স্বাভাবিক ভাবেই তৃণমূল কংগ্রেস যে এই দুই নেতাকে হারিয়ে ফেলায় অত্যন্ত চাপে রয়েছে, তা বলাই যায়। তবে বিজেপিতে প্রথম তৃণমূলের ঘর ভেঙে মুকুল রায় আসলেও, দিনকে দিন নির্বাচনের সময় যত এগিয়ে আসছে, ততই কি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দখল করতে চলেছেন সদ্য বিজেপিতে আসা শুভেন্দু অধিকারী? এখন তা নিয়ে রীতিমত গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে গেরুয়া শিবিরের অন্দরমহলে।

জানা গেছে, ইতিমধ্যেই মুকুল রায়কে সরিয়ে বেশ কিছু দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে শুভেন্দু অধিকারীকে। মুকুলবাবু বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি হলেও, আগামী দিনে বাংলার বিধানসভা নির্বাচনে যে শুভেন্দু অধিকারীকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দেবে বিজেপি, তা বলাই যায়। দিল্লির পক্ষ থেকে বাংলাকে নিয়ে কোর কমিটির বৈঠক হলেও, সেখানে ডাক পেতে দেখা যাচ্ছে এই শুভেন্দু অধিকারীকে।

অনেকে বলছেন, মুকুল রায় চার বছর আগে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর অনেক পরিশ্রম করেছেন। তারপর তাকে সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি করা হয়েছে। কিন্তু শুভেন্দু অধিকারীর সদ্য দলে আসার পরই যেভাবে তাকে গুরুত্ব দিতে শুরু করেছে ভারতীয় জনতা পার্টি, তাতে মুকুল রায়ের থেকে বিজেপিতে দিনকে দিন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় পৌঁছে দিতে দেখা যাচ্ছে অধিকারী পরিবারের মেজো ছেলেকে বলে মনে করছেন অনেকে।

আর এখানেই প্রশ্ন, তাহলে কি মুকুল রায় ক্রমশ মূলস্রোত থেকে সরে যেতে শুরু করেছেন? একাংশের দাবি, যদি বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলকে কুপোকাত করতে হয়, তাহলে শুভেন্দু অধিকারীকে যেমন প্রয়োজন বিজেপির, ঠিক তেমনই প্রয়োজন মুকুল রায়কে। কেননা শেষ পর্যন্ত খেলায় বাজিমাত করার কৌশল জানেন মুকুলবাবু। অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ হিসেবে পরিচিত মুকুল রায়কে যদি এখন বিজেপি শুধুমাত্র সান্ত্বনা দিয়ে রেখে দেয়, তাহলে শেষ মুহূর্তে তিনি গেরুয়া শিবিরকে খেলা দেখিয়ে দিতে পারেন। যা বিজেপির কাছে বড়সড় অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়াবে বলেই মনে করা হচ্ছে।

তাই এক্ষেত্রে শুভেন্দু অধিকারী দলে আসার সাথে সাথেই যেভাবে তাকে বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, তাতে মুকুল রায় এবং তার অনুগামীরা কিছুটা হলেও ব্যাকফুটে। তাই শেষ পর্যন্ত মুকুলবাবু অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ হিসেবে খেলা ঘুরিয়ে দেওয়ার জন্য কোনো পদক্ষেপ করেন কিনা, তা নিয়ে যথেষ্ট গুঞ্জন তৈরি হয়েছে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে। পর্যবেক্ষকদের মতে, বিজেপির কাছে এখন প্রধান টার্গেট বাংলার ক্ষমতা দখল করা। এক্ষেত্রে তৃণমূলের হেভিওয়েট নেতাদের নিজেদের দলে নিয়ে এসে বিজেপি শাসকদলের অস্বস্তি বাড়িয়ে দিতে শুরু করেছে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

তাই চার বছর আগে মুকুল রায় দলের আসার পর তার হাত ধরে একের পর এক নেতারা দলে আসতে শুরু করেছিলেন। কিন্তু মাঝে সেই দলবদল বন্ধ হয়ে যায়। তবে বিধানসভা নির্বাচনের মুখে শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূল কংগ্রেস ছাড়ার পর রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে বিভিন্ন জেলায় তৃণমূল কংগ্রেসের অনেক হেভিওয়েট গেরুয়া শিবিরে নাম লেখাতে শুরু করেছেন। ভবিষ্যতে তৃণমূল কংগ্রেসের অনেকেই বিজেপিতে আসতে শুরু করবেন বলে দাবি করছেন শুভেন্দুবাবু সহ একাধিক বিজেপি নেতা। আর এই পরিস্থিতিতে কিছুটা নীরবতা পালন করতে দেখা যাচ্ছে মুকুল রায়কে।

এমনকি ক্রিকেট পছন্দ করা মুকুল রায় জায়গা ছেড়ে দেওয়ার কথাও অনেক ক্ষেত্রে বলতে শুরু করেছেন। স্বাভাবিক ভাবেই তিনি কি সদ্য দলে আসা শুভেন্দু অধিকারীর প্রভাব এবং বাড়তি গুরুত্বের কারণে কিছুটা হলেও ক্ষুব্ধ? বিশ্লেষকদের মতে, মুকুল রায় জানেন বিজেপির শৃঙ্খলা। তাই কোনোমতেই দলের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে চাইছেন না তিনি। এক্ষেত্রে সময়কে সময় দিতে চাইছেন মুকুল রায়। কেননা যদি অল্পের জন্য বিজেপি কিছু সংখ্যার কারণে ক্ষমতায় আসতে গিয়ে বাধাপ্রাপ্ত হয়, তখন শেষ বেলায় বড় প্রয়োজন হবে মুকুলবাবুর।

পাশাপাশি ভোট কৌশলী মুকুল রায় খুব ভাল করেই জানেন, কিভাবে নির্বাচন করালে ভালো ফল হবে। তাই এখন শুভেন্দু অধিকারী থেকে শুরু করে সদ্য দলে আসা নেতাদের কদর বাড়লেও, ভবিষ্যতে মুকুলদা সবথেকে বড় ভূমিকা পালন করবে বলে দাবি করছেন তার অনুগামীরা। সব মিলিয়ে গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, শুভেন্দু অধিকারী চলে আসায় ক্রমশ ব্যাকফুটে পড়ে যান মুকুল রায়! নাকি নিজের মত করেই খেলা ঘোরানোর কৌশল শুরু করেন তিনি, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।

 

 

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!