প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে ত্রিপুরা জুড়ে। কিছুদিন আগেই ত্রিপুরাতে পা রেখে আক্রান্ত হয়েছিলেন সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তারপর থেকেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ত্রিপুরার মাটি। আর এর মাঝেই তৃণমূল কংগ্রেসের ছাত্র এবং যুব সংগঠনের তিন হেভিওয়েট নেতা নেত্রীর ওপর আক্রমণ নেমে এল সেই ত্রিপুরাতে। যেখানে দেবাংশু ভট্টাচার্য, সুদীপ রাহা এবং জয়া দত্তের গাড়ি লাঠি দিয়ে ভেঙে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। আর এরপরই তারা প্রতিবাদ শুরু করেন। যেখানে বিজেপির বিরুদ্ধে এবং ত্রিপুরা প্রশাসনের বিরুদ্ধে একতরফা আচরণের অভিযোগ তুলে সরব হন বাংলার তৃণমূল কংগ্রেসের এই তিন হেভিওয়েট নেতা নেত্রী।

ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় সুদীপ রাহা এবং জয়া দত্ত আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা গেছে। আর তার দলের তিন সৈনিকের ওপর যেভাবে আক্রমণ নেমে এসেছে, তাতে রীতিমতো ক্ষুব্ধ তৃণমূল নেত্রী তথা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। ইতিমধ্যেই গোটা বিষয় নিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন তিনি। রীতিমতো চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বিপ্লব দেব সরকারের অস্বস্তি বাড়িয়ে দিয়েছেন বাংলার প্রশাসনিক প্রধান। বুঝিয়ে দিয়েছেন, তার দলের উপরে আক্রমণ হলে তিনি ছেড়ে কথা বলবেন না।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, শনিবার ত্রিপুরার মাটিতে আক্রান্ত হন তৃণমূলের সুদীপ রাহা এবং জয়া দত্ত। আর তারপরেই তারা তাদের প্রতিবাদ শুরু করেন। এদিকে ত্রিপুরাতে সংগঠন গড়ার জন্য দেবাংশু ভট্টাচার্য সুদীপ রাহা এবং জয়া দত্তকে পাঠানো হলেও, যেভাবে তাদের ওপর আন্দোলন নেমে এসেছে, তাতে বিজেপির বিরুদ্ধে বাড়তি হাতিয়ার পেয়ে যায় তৃণমূল কংগ্রেস। গোটা বিষয়ে প্রতিক্রিয়া দিয়ে বিজেপিকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন তৃণমূল নেত্রী তথা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন তিনি বলেন, “বিজেপি জানে ওরা ত্রিপুরায় জিততে পারবে না। সেইজন্য সন্ত্রাস ছড়িয়ে ভাবছে ভয় ধরিয়ে দেবে। কিন্তু ওরা তৃণমূলকে চেনে না। আমাদের দলের পাশে দাঁড়িয়ে বাংলার মানুষ বিজেপিকে যে শিক্ষা দিয়েছে, ত্রিপুরার মানুষ এবার ওদের সেই শিক্ষা দেবে। এরপর গোটা দেশে বিজেপি সেই শিক্ষা পাবে। ত্রিপুরায় বিজেপি অস্তিত্ব থাকবে না।”

অর্থাৎ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই গোটা ঘটনাকে হাতিয়ার করে ত্রিপুরার বিজেপি সরকারের অস্বস্তি আরও বেশি করে বাড়িয়ে দিতে চাইলেন। তিনি বুঝিয়ে দিতে চাইলেন যে, তার দলের নেতা-কর্মী এবং সৈনিকদের উপর আক্রমণ করে বিজেপি নিজেদের ক্ষমতা ধরে রাখতে চাইছে। কিন্তু এই সমস্ত করে লাভের লাভ কিছুই হবে না। তৃণমূল কংগ্রেস আরও বেশি করে ত্রিপুরাতে তাদের লড়াই চালাবে বলে নিজের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে বুঝিয়ে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তৃতীয়বারের জন্য পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতা দখল করার পরেই তৃণমূল নেত্রী বাংলার বাইরে দলের সংগঠনকে বিস্তার লাভ করাতে উদ্যোগী হয়েছেন। আর সেদিক থেকে তার প্রথম নজর রয়েছে ত্রিপুরায়। আর সেই কারণেই দলের ছাত্র এবং যুব সংগঠনের নেতা নেত্রী ত্রিপুরার মাটিতে আক্রান্ত হওয়ার পরেই আর সুযোগ হাতছাড়া করলেন না তৃণমূল নেত্রী। সাথে সাথেই গোটা বিষয়ে প্রতিক্রিয়া দিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে আগামী দিনে আরও বেশি করে লড়াইয়ের বার্তা দিলেন তিনি। সব মিলিয়ে গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।