এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > ভোটারের থেকে বেশি ভোট নন্দীগ্রামে! বিস্ফোরক নথি সামনে আসতেই আশায় তৃণমূল, চাপে শুভেন্দু!

ভোটারের থেকে বেশি ভোট নন্দীগ্রামে! বিস্ফোরক নথি সামনে আসতেই আশায় তৃণমূল, চাপে শুভেন্দু!


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –  2021 এ বাংলার বিধানসভা নির্বাচনে সবথেকে যে আসনটি নজরকাড়া হয়ে দাঁড়িয়েছিল, তা হল জমি আন্দোলনের আঁতুড়ঘর নন্দীগ্রাম। একদিকে এখানে বিজেপির প্রার্থী হয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একসময়কার সতীর্থ শুভেন্দু অধিকারী এবং অন্যদিকে তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছিলেন বাংলার বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। স্বাভাবিকভাবেই দুই পক্ষের লড়াইয়ে রীতিমতো জমে ওঠে বঙ্গ রাজনীতি। ভোটের ফলাফলের দিন রাজ্যের ক্ষমতা যে দলই দখল করুক না কেন, নন্দীগ্রাম কার দখলে যাচ্ছে, তার দিকেই নজর ছিল সকলের।

অবশেষে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জয়লাভ করেছেন বলে একটি খবর সামনে আসে। আর তারপরেই কমিশনের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নয়, নন্দীগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্রে জয়লাভ করেছেন বিজেপির শুভেন্দু অধিকারী। স্বাভাবিকভাবেই এরপর থেকেই তৃণমূলের পক্ষ থেকে কারচুপি করা হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়। এমনকি সম্প্রতি এই গোটা বিষয়টি নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন তৃণমূল নেত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে নন্দীগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্রের ফলাফল নিয়ে গোটা বিষয়টি আদালতের দরজায় যাওয়ার পরেই এবার বিস্ফোরক তথ্য সামনে এল। যেখানে একটি নথিতে দেখা গিয়েছে, নন্দীগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্রের রেয়াপাড়ার এস এন রায় স্কুলের বুথে ভোটার সংখ্যা 676 জন। কিন্তু সেখানে ভোট পড়েছে 799 টি।

স্বভাবতই তৃণমূলের পক্ষ থেকে এই নথি সামনে এনে তাদের বক্তব্য যে সত্যি, তা প্রমাণ করার মরিয়া চেষ্টা শুরু হয়েছে। যদিও বা বিজেপির পক্ষ থেকে তাকে সম্পূর্ণরূপে খন্ডন করা হচ্ছে। একাংশের প্রশ্ন, কেন এতদিন পরে এই ব্যাপারে হুশ ফিরল তৃণমূল কংগ্রেসের? কেন এতদিন এই নথি সামনে আনা হল না? অনেকে আবার বলছেন, ধীরে ধীরে আসল ব্যাপারটি সামনে আসতে শুরু করেছে। ভোট গণনার শেষের দিকে নন্দীগ্রামে শুভেন্দু অধিকারী বিরুদ্ধে কারচুপি করার অভিযোগ তোলা হয়েছিল। এমনকি লাইট বন্ধ করে গণনা পর্ব সম্পন্ন করা হয় বলেও অভিযোগ তুলেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। অবশেষে নন্দীগ্রাম নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হাইকোর্টে মামলা দায়ের করার পর এই বিস্ফোরক নথি সামনে আসায় কার্যত চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে।

সূত্রের খবর, এদিন রেয়াপাড়ার এস এন রায় স্কুলের একটি তথ্য সামনে আসে। যেখানে দেখা যাচ্ছে, সেই বুথের ভোটার সংখ্যা 676 থাকলেও, ভোটদান করেছেন 799 জন মানুষ। শুধু তাই নয়, এত গরমিল চোখে পড়লেও সেখানে কার্যত স্বাক্ষর করে দিয়েছেন প্রিসাইডিং অফিসার। আর তারপরেই তৃণমূলের পক্ষ থেকে এই গোটা ঘটনা নিয়ে তোলা হয়েছে প্রশ্ন। এদিন ই প্রসঙ্গে নন্দীগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্রের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্বাচনী এজেন্ট শেখ সুফিয়ান বলেন, “ওই দিন শেষের দিকে তিন ঘন্টা গণনা বন্ধ করে দেয়। হঠাৎ বলে সার্ভার নেই। তাতেও এক ঘন্টা দেরি হয়। আর ভিভিপ্যাড গোনার সময় আমাদের রাখেনি। এমনকি গণনার সময় বিরোধী দলের চাপে আমাদের নতিস্বীকার করে বেরিয়ে আসতে হয়।”

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

একইভাবে এই ব্যাপারে সরব হয়েছেন তৃণমূলের মুখপাত্র দেবাংশু ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, “রেয়াপাড়ার বুথের হিসাবে তো চক্ষু চড়কগাছ হওয়ার জোগাড়। এটা কি করে সম্ভব! একটা বুথে একশোর কাছাকাছি গরমিল। এটা 80 ধরুন। একটা বুথে 80 হলে, বাকিগুলো কি হয়েছে ভাবুন। আমরা তো প্রথম থেকে বলে আসছি, এই ব্যাপারটার মধ্যে বিরাট জঘন্য খেলা হয়েছে।” তবে তৃণমূলের পক্ষ থেকে এই নথি সামনে এনে বিজেপির বিরুদ্ধে কারচুপির অভিযোগ করা হলেও, তাকে সম্পূর্ণরূপে খারিজ করে দিয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি।

এদিন এই প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, “গত পঞ্চায়েত ভোটে এটা বহু জায়গায় ঘটেছে। এমন জায়গা আছে, যেখানে 100 শতাংশ ভোট হয়েছিল। তৃণমূল কি অভিযোগ করছে জানি না। তার সত্যতা বিচার করার লোক আমরা নই। আমরা দশ বছর ধরে অভিযোগ করেছি। তার আগে তৃণমূল বামেদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে। তাই এই অভিযোগের সত্যতা খতিয়ে দেখার দায়িত্ব আদালত এবং নির্বাচন কমিশনের।”

স্বাভাবিকভাবেই জয়প্রকাশ মজুমদারের এই বক্তব্য নিয়েও রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। তাহলে কি নন্দীগ্রাম নিয়ে ব্যাপক কারচুপি হয়েছে? আর সেই কারচুপি এখন সামনে আসতে শুরু করেছে? অনেকে বলছেন, ইতিমধ্যেই গোটা বিষয়টি আদালতের দরজায় গিয়ে পৌঁছেছে। বর্তমানে এই নথি সামনে আসলেও বেশ কিছুদিন আগেই নন্দীগ্রামের ফলাফল নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

তাই সেই মামলার ফায়সালা হওয়ার আগেই যেভাবে বিস্ফোরক নথি সামনে এল এবং তার ফলে বিজেপির বিরুদ্ধে আরও বেশি করে সরব হতে শুরু করল তৃণমূল কংগ্রেসকে, তাতে নন্দীগ্রামের ভবিষ্যৎ নিয়ে এখন বেজায় চিন্তায় রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। তাহলে কি আগামী দিনে নন্দীগ্রামের ফলাফল পরিবর্তন হতে পারে, কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে জমি আন্দোলনের আঁতুড়ঘরের ভবিষ্যত, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!