WB Opinion Poll 2021: জলপাইগুড়ির হাত শিবিরের দূর্গ কি অটুট থাকবে? নাকি ‘হাত’ বদলে ঘাস-পদ্ম? উত্তরবঙ্গ কংগ্রেস বামফ্রন্ট বিজেপি ভোটের সমীক্ষা রাজনীতি রাজ্য November 9, 2020 প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – সবুজ ঝড় থেকে শুরু করে গেরুয়া ঝড়, বাংলার মাটিতে এখন রাজনীতির ক্ষেত্রে অন্তত এই দুই কথা অত্যন্ত সহজ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু সবুজ এবং গেরুয়ার দাপটে কার্যত অপ্রাসঙ্গিক হতে দেখা গেছে বাম এবং কংগ্রেসকে। তবে জলপাইগুড়ি বিধানসভা কেন্দ্রে অন্তত সেই বাম এবং কংগ্রেস বরাবর নিজেদের আধিপত্য দেখিয়ে এসেছে। 1951 সালে অশ্রুমতি দেবী হাত শিবিরের প্রতীক নিয়ে যে জয়যাত্রা শুরু করেন, তা শেষ হয় 1967 সালের খগেন্দ্রনাথ দাশগুপ্তকে দিয়ে। মাঝে 1969 সালে সিপিএমের নরেশ চন্দ্র চক্রবর্তী জয়লাভ করলেও, আবার কংগ্রেসের অনুপম সেন 1971 সাল থেকে নিজের দাপট বজায় রাখতে শুরু করেন। এরপর কখনও ফরওয়ার্ড ব্লকের নির্মল কুমার বোস, আবার কখনও বা অনুপম সেনের অদল বদল হয় এই কেন্দ্রে। মাঝে ফরোয়ার্ড ব্লকের গোবিন্দ রায় এবং কংগ্রেসের দেবপ্রসাদের মত ব্যক্তিরা এই কেন্দ্রের বিধায়ক হন। আর 2016 সালে ব্যাপক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঝড় থাকা সত্ত্বেও, এই জলপাইগুড়ি বিধানসভা কেন্দ্রে জয়লাভ করেন কংগ্রেসের সুখবিলাস বর্মা। তবে এখন প্রশ্ন, আগামী 2021 এর বিধানসভা নির্বাচনে এই কেন্দ্র কার দখলে থাকবে! কেননা এখন সেভাবে বাম- কংগ্রেসের দাপট নেই। সেদিক থেকে দিনকে দিন উত্থান বাড়াতে শুরু করেছে ভারতীয় জনতা পার্টির। মনে করা হচ্ছে, আগামীদিনে বিধানসভা নির্বাচনের মূল লড়াই হবে বিজেপি এবং তৃণমূল কংগ্রেসের মধ্যে। তাই গত লোকসভা নির্বাচনে উত্তরবঙ্গে ব্যাপক সাফল্য পাওয়া ভারতীয় জনতা পার্টি এই জলপাইগুড়ি বিধানসভা দখলের দিকে যে নতুন করে মনোযোগী হবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে বাম-কংগ্রেসের মধ্যে যদি জোট হয়, তাহলে এই কেন্দ্র দখলের ব্যাপারে তারাও যে অত্যন্ত উদ্যোগী হবে, সেই ব্যাপারটি নিশ্চিত বিশেষজ্ঞদের কাছে। একইভাবে এই কেন্দ্র দখলে পিছিয়ে থাকবে না তৃণমূল কংগ্রেসও। কিন্তু বিগত দিনের ভোটের অংক যদি দেখা যায়, তাহলে এই কেন্দ্র নিয়ে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের চিন্তার শেষ নেই। গতত 2014 সালের লোকসভা নির্বাচনে এখানে বামেরা পেয়েছিল 36.16 শতাংশ ভোট। অন্যদিকে তৃণমূল কংগ্রেস পেয়েছিল 34 শতাংশ ভোট। বিজেপি পেয়েছিল 12.14 শতাংশ ভোট এবং কংগ্রেস পেয়েছিল 12.50 শতাংশ ভোট। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - তারপর 2016 সালের বিধানসভা নির্বাচনে এখানে অনেকটাই অঙ্ক বদলে যায়। যেখানে তৃণমূল কংগ্রেস প্রায় 42.93 শতাংশ ভোট, বাম সমর্থিত কংগ্রেস 45.41 শতাংশ ভোট, বিজেপি 7.70 শতাংশ ভোট। অর্থাৎ 2014 সালের লোকসভা নির্বাচনে বামেরা এগিয়ে থাকলেও, 2016 সালের বিধানসভা নির্বাচনে এখানে তারা কংগ্রেসকে সমর্থন করায় সহজেই বাজিমাত করে হাত শিবির। আর 2019 সালের লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল আরও অবাক করে দেয় সকলকে। যেখানে বাম, কংগ্রেস, তৃণমূল সবাইকে পেছনে ফেলে এগিয়ে যায় ভারতীয় জনতা পার্টি। যে বিজেপি 2016 সালের বিধানসভা নির্বাচন পর্যন্ত এখানে 7 শতাংশ ভোট পেয়েছিল, সেই বিজেপি গত লোকসভা নির্বাচনে এই জলপাইগুড়ি বিধানসভায় 51.63 শতাংশ ভোট পায়। অন্যদিকে কংগ্রেস নেমে যায় 3.83 শতাংশ, বামফ্রন্ট 7.56 শতাংশ এবং তৃণমূল কংগ্রেস পায় 33.59 শতাংশ ভোট। অর্থাৎ দেখা যাচ্ছে এই কেন্দ্রের সমীকরণ ধীরে ধীরে বাম-কংগ্রেস জোটের হাত চলে যাচ্ছে গেরুয়া শিবিরের দিকে। গত লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল যদি দেখা যায়, তাহলে সেখানে অত্যন্ত ভালো জায়গায় রয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি। আর এই পরিস্থিতিতে এখন রাজনৈতিক মহলে এই জলপাইগুড়ি বিধানসভার আগামী ভবিষ্যৎ নিয়ে ব্যাপক চর্চা শুরু হয়েছে। প্রায় প্রতিটি রাজনৈতিক দলই চাইছে, এই কেন্দ্র দখল করতে। তবে শেষ কথা বলবেন জনসাধারণ। কিন্তু এখানকার যা রাজনৈতিক গতিপ্রকৃতি, তাতে গত লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে এখানে অনেকটাই সুবিধাজনক জায়গায় রয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি। যদি বিজেপি তাদের ভোটব্যাঙ্ক ধরে রাখতে পারে, তাহলে এখানে তারা অনেকটাই এগিয়ে যাবে। তবে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস যদি নিজেদের মত করে এখানে বিজেপির মোকাবিলা করতে পারে, তাহলে তারাও ভালো ফল করতে পারে বলে মনে করছেন একাংশ। অন্যদিকে যেহেতু এখানে বাম-কংগ্রেসের একটি পুরনো ভোটব্যাঙ্ক রয়েছে, তাই এই দুই দল জোট করলে তারা আবার এই কেন্দ্র দখলে সক্ষম হবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তবে কি হবে জলপাইগুড়ি বিধানসভা কেন্দ্রে, কারা এখানে শেষ হাসি হাসবে, তার আগাম পূর্বাভাস পাওয়ার জন্য অবশ্যই নজর রাখতে হবে প্রিয়বন্ধু বাংলায়। আর কিছুদিনের মধ্যেই এই জলপাইগুড়ি বিধানসভা কেন্দ্রের আগাম সমীক্ষার ফলাফল আপনাদের সামনে নিয়ে আসব আমরা। আপনার মতামত জানান -