আবার বাড়তে চলেছে পশ্চিমবঙ্গের বিধায়কদের বেতন, ক্ষোভ সরকারি কর্মী ও শিক্ষকমহলে কলকাতা বিশেষ খবর রাজ্য June 24, 2019 রাজ্যে যখন বাম শাসন ছিল, তখন প্রধান বিরোধী নেত্রী হিসাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ডিএ নিয়ে সরকারি কর্মীদের আন্দোলনে গিয়ে বলেছিলেন, যে সরকার সরকারি কর্মীদের প্রাপ্য দিতে পারে না, তাদের অধিকার নেই এক মুহূর্তও ক্ষমতায় থাকার। রাজ্য সরকারি কর্মীরা ও শিক্ষকরা, এর পরে অনেক আশা নিয়ে দুহাত ভরে তাঁকে সমর্থন জানিয়েছিলেন ২০১১ সালে, দীর্ঘ ৩৪ বছরের বামশাসনের অবসান ঘটিয়ে রাজ্যে হয়েছিল পরিবর্তন। তারপর, বিগত ৮ বছরে গঙ্গা দিয়ে বয়ে গেছে অনেক জল, রাজ্য প্রশাসনের হেড কোয়ার্টার গঙ্গা পেরিয়ে রাইটার্স বিল্ডিং থেকে নবান্নে গিয়ে উঠেছে। আর বিরোধীনেত্রী হিসাবে বলা কথাগুলি বিলকুল ভুলে গেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলে অভিযোগ উঠেছে সরকারি কর্মচারী ও শিক্ষক মহলে। কেননা ডিএ ফারাক বাড়তে বাড়তে আকাশ ছুঁয়েছে আর তা দেওয়া আটকাতে সরকারি আইনজীবীরা একবার স্যাট, একবার হাইকোর্ট ছুটে ‘তারিখ পে তারিখ’ খেলছেন! আর মুখ্যমন্ত্রী এই নিয়ে নিজে বলছেন – ‘বেশি ঘেউ ঘেউ করবেন না’! এর পাশাপাশি পে কমিশনের আশা তো প্রায় ছেড়েই দিয়েছেন সরকারি কর্মীরা! কেননা ভূ-ভারতে কোনোদিন যা হয় নি, তাই করে দেখিয়ে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন রাজ্য সরকার। চার বছর ধরে প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ অভিরূপ সরকার হিসেবে নিকেশ করে চলেছেন এই পে-কমিশনের। আর তার কোনো রিপোর্ট জমা না পড়লেও প্রতি ছমাস বাদে রাজ্য সরকার তার মেয়াদ বাড়িয়েই যাচ্ছে। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - একই হতোদ্যম দশা রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষকদের! চাকরি বাঁচাতে সবাইকে নিজেদের যোগ্যতা বাড়িয়ে নিয়ে হয়েছে কেন্দ্রীয় নিয়ম মেনে, কিন্তু রাজ্য সরকার আজ পর্যন্ত কেন্দ্রীয় নিয়ম মেনে পিআরটি স্কেল দিল না! ফলে, শিক্ষকদের আক্ষেপ, বর্তমানে তাঁদের বেতন ভারতীয় রেলে কাজ করা একজন সাফাইকর্মীর থেকেও কম। এই যখন রাজ্যের সরকারি কর্মচারী ও শিক্ষকদের অবস্থা, মুখ্যমন্ত্রী নিজে বারেবারে প্রকাশ্যে জানাচ্ছেন রাজ্যের কোষাগারের অবস্থা রীতিমত সঙ্গীন – ঠিক তখনই আবারো বাড়তে চলেছে রাজ্যের বিধায়কদের বেতন। বিধানসভার এনটাইলমেন্ট কমিটির দেওয়া এই প্রস্তাব যদি অর্থমন্ত্রক মেনে নেয়, তাহলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমলে – এই নিয়ে তৃতীয়বার বাড়তে চলেছে বিধায়কদের ভাতা। বর্তমানে রাজ্যের বিধায়করা বেতন ও মাসিক ভাতা মিলিয়ে পান মাসে ৮১,৩০০ টাকা। কিন্তু, বিধানসভার এনটাইলমেন্ট কমিটি সুপারিশ পাঠিয়েছে, অধিবেশন চলাকালীন বিধায়কদের দৈনিক ভাতা ২,০০০ টাকা করা হোক। বর্তমানে বিধায়করা পান দৈনিক ১,০০০ টাকা ভাতা। অর্থাৎ, মাসে যদি গড়ে ১৫ দিন করে বিধানসভার অধিবেশন বসে, তাহলে এক-একজন বিধায়কের ভাতা বাড়বে ১৫,০০০ টাকা করে। অর্থাৎ রাজ্যের ঘাড়ে প্রতিমাসে গড়ে প্রায় ৩৮-৪০ লক্ষ টাকা এবং বছরে প্রায় ৪ কোটি টাকার অতিরিক্ত বোঝা। প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ১১ ই মার্চ শেষবার বেতন বৃদ্ধি হয়েছিল রাজ্যের বিধায়কদের। আর তার দেড় বছরের মধ্যে পুনরায় তাঁদের বেতন বৃদ্ধির সুপারিশ হল – যা কার্যকর হওয়া শুধুমাত্র সময়ের অপেক্ষা বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্ট মহল। আর তাই রাজ্য সরকারি কর্মচারী বা শিক্ষকরা বেতন নিয়ে মাথা চাপড়ালেও, রাজ্যের বিধায়কদের কার্যত ‘পৌষমাস’ চলছে বলেই অভিমত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের। আপনার মতামত জানান -