বঞ্চনার ডিএর ‘রাহুমুক্তি’ কি আজই? আশায় বুক বাঁধছেন লক্ষ লক্ষ রাজ্য সরকারি কর্মচারী ও শিক্ষকরা কলকাতা বিশেষ খবর রাজ্য December 19, 2018 প্রশ্ন বলুন বা আইনের মারপ্যাঁচ – আজ মূলত দুটি বিষয়ের উপরেই হতে চলেছে বহু প্রতীক্ষিত ও বহু চর্চিত রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ডিএ মামলায়। আজ দুপুর আড়াইটার সময় স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইবুন্যাল বা স্যাটে – অবশেষে শুরু হচ্ছে এই মামলার ফাইনাল কাউন্টডাউন। রাজ্যের লক্ষ লক্ষ সরকারি কর্মচারী, শিক্ষক ও সরকারি অনুদান প্রাপ্ত কর্মীরা অদম্য কৌতূহল নিয়ে তাকিয়ে আছেন কি করেন স্যাটের বিচারপতিরা – সেদিকেই। আজকের শুনানিতে মূলত দুটি সম্ভবনা স্পষ্ট ভাবে উঠে আসতে চলেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট মহল। প্রথমত, গত ৩১ শে আগস্ট কলকাতা হাইকোর্ট যে ঐতিহাসিক রায়ে জানিয়ে দিয়েছিল যে ডিএ কর্মচারীদের সাংবিধানিক অধিকারের মধ্যে পরে এবং এই ডিএর হার কি হবে বা তা বছরে কবার করে দেওয়া হবে তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে স্যাট – সেই রায়কে মান্যতা দিয়ে, আর রাজ্য সরকারকে কোন সময় নয়। উল্টে, রায় ঘোষণা বা রায়দানের জন্য দিন ঘোষণা। দ্বিতীয়ত, পুনরায় ৬ ই ডিসেম্বরের মত রাজ্য সরকারের প্রতি ‘সহানুভূতিশীল’ হয়ে আজও জানিয়ে দেওয়া যেহেতু, রাজ্য সরকার এই নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে আবেদন করেছে এবং সেই আবেদন গৃহীত হয়েছে – কিন্তু, শুনানি হয় নি। তাই, কলকাতা হাইকোর্টের শুনানির জন্য অপেক্ষা করা। কোন পথে যেতে চলেছে ডিএ মামলার ভবিষ্যৎ – তা নিয়েই চূড়ান্ত জল্পনা কল্পনা রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে। দীর্ঘদিন ধরেই বকেয়া ডিএ নিয়ে ক্ষোভ বাড়তে বাড়তে – শেষে অনোন্যপায় হয়ে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের একাংশ রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে স্যাটে মামলা করেন। কিন্তু, সেই মামলায় স্যাট স্পষ্ট জানিয়ে দেয় – ডিএ, রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের অধিকারের মধ্যেই পরে না। ফলে, মামলাকারীরা কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। আর সেখানে দীর্ঘ আইনি যুদ্ধের পরে – এক ঐতিহাসিক রায়ে, কলকাতা হাইকোর্ট গত ৩১ শে আগস্ট জানিয়ে দেয় – ডিএ কর্মচারীদের সাংবিধানিক অধিকারের মধ্যে পরে এবং এই ডিএর হার কি হবে বা তা বছরে কবার করে দেওয়া হবে তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে স্যাট। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - এরপর মামলাকারীরা পুনরায় স্যাটে আবেদন করলে, রাজ্য সরকার সেই মামলায় কোনো হলফনামাই জমা করে না এবং রাজ্য সরকারের পক্ষে আবেদন করা হয়, এর জন্য অতিরিক্ত সময়ের। কিন্তু, স্যাটের বিচারপতিরা স্পষ্ট জানান – হাইকোর্টের নির্দেশানুসারে ১১ ই ডিসেম্বরের মধ্যে এই মামলার রায়দান করতে হবে। তাই আর, অতিরিক্ত সময় দেওয়া সম্ভব নয়। ফলে, বিনা হলফনামাতেই চলে সওয়াল জবাব। সেখানে, মামলাকারীদের আইনজীবী সর্দার আমজাদ আলি ও ফিরদৌস শামীমের সওয়ালের সামনে – সেভাবে যুক্তি জাল খাড়া করতে পারেননি সরকারি আইনজীবীরা বলে দাবি মামলাকারীদের। আর, সেই সওয়াল-জবাবের শেষে – দু পক্ষকেই স্যাটের বিচারপতিরা নির্দেশ দেন নিজেদের সওয়ালের পরিপ্রেক্ষিতে কিছু নথি জমা দিতে। মামলাকারীরা সব নথি নির্দিষ্ট দিনে জমা করে দিলেও – রাজ্য সরকারের তরফে জানানো হয়, তাদের তরফে নথি ‘মিসপ্লেসড’ – ফলে, দেওয়া হোক অতিরিক্ত সময়। রাজি হয় না স্যাট – কিন্তু, রোযা সরকার জানায়, এই নিয়ে কলকাতা হাইকোর্ট আদেশ দিলে কি হবে? স্যাট সেই অনুযায়ী রাজ্য সরকারকে ৬ ই ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় দেয় – কলকাতা হাইকোর্টের এই সংক্রান্ত নির্দেশ নিয়ে আসার জন্য। কিন্তু, ৬ ই ডিসেম্বর রাজ্য সরকার জানায়, কলকাতা হাইকোর্ট মামলা গ্রহণ করেছে, যে কোনদিন শুনানি হতে পারে। তাই, দেওয়া হোক অতিরিক্ত সময়। স্যাটের বিচারপতিরা পুনরায় তা বিবেচনা করে ১৯ শে ডিসেম্বর অর্থাৎ আজকের মধ্যে এই সংক্রান্ত নির্দেশ জমা দিতে বলে। প্রসঙ্গত, এই মামলার রায়দান ১১ ই ডিসেম্বরের মধ্যেই হয়ে যাওয়ার কথা – স্যাট ইতিমধ্যেই অতিরিক্ত সময় বরাদ্দ করে রেখেছে। এরপর, কলকাতা হাইকোর্টে সেই মামলা ওঠে ১০ ই ডিসেম্বর। কিন্তু সেখানে রাজ্য সরকারের আবেদনে ‘টেকনিক্যালি ভুল’ থাকায়, পুনরায় রাজ্য সরকারকে আবেদন ১৪ ই ডিসেম্বরের মধ্যে জমা দিতে বলা হয়। রাজ্য সরকার সেখানেও অতিরিক্ত সময় চাইলে – তা গ্রাহ্য হয় না এবং জানানো হয়, রাজ্য সরকার ১৪ তারিখের মধ্যে আবেদন জমা করলে ১৮ তারিখ অর্থাৎ গতকাল এর শুনানি হতে পারে। রাজ্য সরকার ১৪ তারিখের মধ্যে আবেদন জমা করে দিলেও – গতকাল কিন্তু সেই মামলার শুনানি হয় নি। অর্থাৎ, স্যাটের গত ৬ ই ডিসেম্বরের দেওয়া ‘ডেডলাইন’ অর্থাৎ আজ, রাজ্য সরকারের পক্ষে এই নিয়ে কোন নির্দেশ জমা দেওয়া সম্ভব নয়। আর তাই, আজ স্যাট কার প্রতি ‘সহানুভূতিশীল’ হয়ে কি সিদ্ধান্ত জানায় – আবার ডিএ মামলার দিন বৃদ্ধি নাকি অবশেষে রায়দান করে সরকারি কর্মচারীদের ‘রাহুমুক্তি’ – তা জানা যাবে আর কয়েক ঘন্টার মধ্যেই। আপনার মতামত জানান -