এখন পড়ছেন
হোম > বিশেষ খবর > দিলীপ ঘোষকে সড়ানোর প্রক্রিয়া কি শুরু হয়ে গেল বিজেপিতে?

দিলীপ ঘোষকে সড়ানোর প্রক্রিয়া কি শুরু হয়ে গেল বিজেপিতে?

বাংলায় বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ এমনিতেই ‘বিখ্যাত’ তাঁর মুখের জন্য। রাজ্য বিজেপির শীর্ষ পদে থেকেও তিনি যেভাবে বিভিন্ন সময়ে ‘আলপটকা’ মন্তব্য করেছেন তাতে অস্বস্তিতে পড়েছেন দলের নেতা-কর্মীরা। এমনকি তৃণমূল কংগ্রেস ত্যাগ করে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার প্রাক্কালে মুকুল রায় সম্পর্কে তাঁর ‘চাটনি’ মন্তব্য এখন শাসকদলের নেতা-কর্মী-সমর্থকদের কাছে অত্যন্ত ‘জনপ্রিয়’ হয়ে গেছে, এই শব্দ প্রয়োগ করেই মুকুলবাবুকে অস্বস্তিতে ফেলছে শাসকদল, অথচ তার স্রষ্টা স্বয়ং বিজেপি রাজ্য সভাপতি। কিন্তু এবার কর্নেল দীপ্তাংশু চৌধুরীর দল ছাড়া প্রসঙ্গে তিনি এমন এক মন্তব্য করে বসলেন যে তার জন্য কেন্দ্রীয় নেতৃত্ত্বের ‘শো-কজ’ মেল পৌঁছে গেল তাঁর কাছে। রাজ্য বিজেপির সভাপতির কাছে সর্বভারতীয় সভাপতির এহেন জবাবদিহি স্মরণকালে হয়েছে কিনা, মনে করতে পারছেন না রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। আর তাই আগামী জুলাই মাসে শেষ হতে চলা রাজ্য সভাপতির মেয়াদের আগে এই ঘটনায় অন্য গন্ধ পাচ্ছেন তাঁরা।
প্রসঙ্গত, কর্নেল দীপ্তাংশু চৌধুরী প্রাথমিক ভাবে তৃণমূল কংগ্রেসে ছিলেন। কিন্তু মুকুল রায়ের এই ঘনিষ্ঠ নেতা এরপর যোগ দেন বিজেপিতে। বছরখানেক আগে খোদ বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ দিল্লিতে তাঁর হাতে দলীয় পতাকা তুলে দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই দীপ্তাংশুবাবুই আবার ফিরে গেলেন তৃণমূলে, সঙ্গে জানিয়ে গেলেন একরাশ অভিযোগ। তিনি জানান, খাতায়-কলমে বুদ্ধিজীবী সেলের আহ্বায়ক করা হলেও, এতদিন তাঁকে কার্যত নিষ্ক্রিয় করে রাখা হয়েছিল। আর সেই ক্ষোভ থেকেই তিনি তৃণমূলে ফিরে যেতে বাধ্য হলেন। এরপর দীপ্তাংশুবাবুর দল ছাড়ার প্রসঙ্গে নিজের প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে দিলীপবাবু জানান, তিনি দীপ্তাংশুবাবুকে দলেই নিতে চাননি, কৈলাস বিজয়বর্গীয়কে ধরেই বিজেপিতে এসেছিলেন তিনি। টিভিতে মুখ দেখানো এবং দিল্লিতে লবি করা ছাড়া দীপ্তাংশুবাবুর কোনও কাজ ছিল না।
কলকাতার এক প্রথমশ্রেণীর সংবাদপত্রের খবর অনুযায়ী, দীপ্তাংশু চৌধুরীর প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষের মন্তব্য জানার পরই কৈলাশ বিজয়বর্গীয়র ঘনিষ্ঠ রাজ্যের এক নেত্রী প্রথম বিষয়টি অমিত শাহের কানে তোলেন। আর এর পরেই, গত শনিবার রাতেই অমিত শাহের দপ্তর থেকে ফোন করে দিলীপ ঘোষের কাছে জানতে চাওয়া হয়, বঙ্গ বিজেপি কি সর্বভারতীয় বিজেপির থেকে আলাদা? কেন তিনি একজন কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে মুখ খুললেন? কে দীপ্তাংশুবাবুকে দলে নিয়েছে তা প্রকাশ্যে কেন বললেন তিনি? দীপ্তাংশুবাবু পার্টি ছাড়ার পর কেন তিনি গোটা ঘটনার দায় ঘুরিয়ে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বর ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টা করছেন? শুধু ফোনেই ক্ষান্ত নন ক্ষুব্ধ কেন্দ্রীয় নেতৃত্ত্ব, ওই সংবাদপত্রের খবর অনুযায়ী গত রবিবার সকালেই এই সব প্রশ্ন সংবলিত ‘শো-কজ’ ইমেল পৌঁছে যায় দিলীপ ঘোষের কাছে। যদিও দিলীপ বাবু নিজে এইরকম কোনও ইমেলের কথা অস্বীকার করেছেন। কিন্তু নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক নেতাই ওই ইমেলের কথা মেনে নিচ্ছেন। আর তাই মেয়াদ শেষের মাত্র কয়েক মাস আগে এই ‘শো-কজ’ কার্যত ‘বড় রকমের সিদ্ধান্তের’ পূর্ব প্রস্তুতি বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। যদিও এই খবরের সত্যতা বা সূত্র সম্পর্কে ওই সংবাদপত্রে কিছু লেখা নেই, প্রিয়বন্ধু বাংলার তরফেও এই খবরের সত্যতা যাচাই করে দেখা সম্ভব হয় নি। এই প্রবন্ধ সম্পূর্ণরূপে ওই সংবাদপত্রে প্রকাশিত খবরের পরিপ্রেক্ষিতে করা, কোনোভাবেই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নয় বা কোনো ব্যক্তি বা দলের সম্মানহানির উদ্দেশ্যে রচিত নয়।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!