এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > উত্তরবঙ্গ > লোকসভা নির্বাচনের আগেই কি পাহাড়ে বড় ভোটযুদ্ধ? ইঙ্গিত মিলতেই আসরে সবপক্ষ

লোকসভা নির্বাচনের আগেই কি পাহাড়ে বড় ভোটযুদ্ধ? ইঙ্গিত মিলতেই আসরে সবপক্ষ

২০১৯-এর লোকসভা ভোটের আগেই দামামা বাজতে চলেছে পাহাড়ে গোর্খা টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনেস্ট্রেশনের (জিটিএ)নির্বাচনের। এমনটাই এদিন আভাসে জানালেন দার্জিলিংয়ের জেলাশাসক জয়শী দাশগুপ্ত। শিলিগুড়ির স্টেট গেস্ট হাউসে বিশ্ববাংলা শারদ সম্মান ঘোষণা অনুষ্ঠানে এসে তিনি জানালেন, ‘আগামী লোকসভা নির্বাচনের আগেই জিটিএ নির্বাচন হতে পারে। সেই মতো আমরা প্রস্তুতি শুরু করেছি’। এই প্রসঙ্গে তিনি আরো উল্লেখ করলেন, জিটিএ’র অধীনস্থ গোষ্ঠীগুলোতে ডিলিমিটেশন সঠিকভাবে ছিল না। কোনোটায় দু’হাজার জন, আবার কোনও সমষ্টিতে ২০ হাজার মানুষ রয়েছেন। সেগুলোতে নজর দিয়েই ডিলিমিটেশনের কাজ জোরকদমে শুরু করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি জিটিএ’র নির্বাচন নিয়ে পাহাড়ে সরব হয়েছে সুবাস ঘিসিংয়ের দল জিএনএলএফ। শুধু তাই নয়, জিটিএ প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারম্যান বিনয় তামাংও জিটিএ নির্বাচনের পক্ষেই সওয়াল তুলেছেন। এই পরিপ্রেক্ষিতেই উপত্যকায় ভোটযুদ্ধের আগাম ইঙ্গিত দিলেন জেলাশাসক বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট মহল। প্রসঙ্গত, মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বিমল গুরুংয়ের নেতৃত্বে জিটিএ-র উত্থান ঘটে। এর প্রথম নির্বাচন হয় ২০১২ সালে। তখন, একতরফা ভাবে জিটিএ’র দখল নিলেও মেয়াদ শেষের আগেই দায়িত্বভার ছেড়ে দেন গুরুং।

এরপর, পাহাড়ের প্রতিকূল পরিস্থিতির দিকটিকে মাথায় রেখে রাজ্যসরকার জিটিএ’র মেয়াদ ছমাস বাড়ায়। জিটিএ’র প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারম্যান করা হয় বিনয় তমাংকে এবং ভাইস চেয়ারম্যানের পদে আনা হয় অনীত থাপাকে – দুজনেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত। ফলে, বিনয়- অনীতের হাত ধরে এখন জিটিএ’র কার্যভার সামলাচ্ছেন কার্যত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই বলে বিভিন্ন মহলে বার্তা ছড়িয়েছে। তবে, মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়ার পর বোর্ডের প্রতি মানুষের আস্থা আছে কিনা তা যাচাই করার জন্যেই নির্বাচনের ডাক দেন জিটিএ’র প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারম্যান বিনয় তমাং বলে দাবি।

ফেসবুকের কিছু টেকনিকাল প্রবলেমের জন্য সব খবর আপনাদের কাছে পৌঁছেছে না – তাই আরো খবর পেতে চোখ রাখুন প্রিয়বন্ধু মিডিয়া-তে

এবার থেকে প্রিয় বন্ধুর খবর পড়া আরো সহজ, আমাদের সব খবর সারাদিন হাতের মুঠোয় পেতে যোগ দিন আমাদের হোয়াটস্যাপ গ্রূপে – ক্লিক করুন এই লিঙ্কে

উল্লেখ্য, জিটিএ প্রশাসকের মেয়াদ ছ’মাস বাড়ানো নিয়ে তীব্র আপত্তি জানিয়ে বিরোধীতায় নেমেছে জিএনএলএফ। কেন ছ’মাসের মেয়াদ বাড়ানো হল জিটিএ’র প্রশাসকের? এ প্রশ্নকে সামনে রেখে দ্রুত নির্বাচনের দাবীতে সরব হয়েছেন জিএনএলএফের মুখপাত্র নীরজ জিম্বা। নিজের বক্তব্যে তিনি জানিয়েছেন, ‘রাজ্য সরকার বিনা কারণে জিটিএ’র মেয়াদ বাড়িয়েছে। পাহাড়ে শান্তি আছে। নির্বাচন করার মতো পরিবেশ রয়েছে। তাহলে কেন নির্বাচন হবে না’? এই প্রেক্ষিতে এদিন দার্জিলিঙের জেলাশাসকের পাহাড়ের নির্বাচনের ইঙ্গিত দেওয়া যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

এখন লোকসভা ভোটের আগেই জিটিএ নির্বাচন হয় কিনা সেটাই দেখার! কেননা, বিগত কয়েক বছরে পাহাড়ের সমীকরণ বদলেছে অতি দ্রুত। ২০১১ সালে রাজ্যে ক্ষমতায় আসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্ত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেস সরকার। তখন, পাহাড়ের রাজনীতির রাশ যাঁর হাতে সেই বিমল গুরুং মুখ্যমন্ত্রীর অতি ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত ছিলেন। কিন্তু ২০১৪ সালে তৃণমূলের বিরোধিতা করে বিমল গুরুং বিজেপির হাত ধরেন। ২০১৬ সালে সেই বিরোধিতা তীব্রতর হয়। কিন্তু, রাজ্যে দ্বিতীয়বার তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় ফেরত আসার পর – বিমল গুরুংকে কার্যত পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে।

অন্যদিকে, পাহাড়ে নিজেদের সংগঠন বিস্তার করার পাশাপাশি, বিমল গুরুং ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত বিনয়-অনীতকে নিজের দিকে টেনে নিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। কিন্তু পঞ্চায়েত নির্বাচন থেকেই রাজ্যে নিজেদের প্রভাব টের পাওয়াচ্ছে গেরুয়া শিবির। মুকুল রায়রা যে এত সহজে পাহাড়ের রাশ ছেড়ে দেবেন না – সে কথা বলাই বাহুল্য, বিশেষ করে যেখানে দার্জিলিঙের বিজেপি সাংসদ যেখানে কেন্দ্রের মন্ত্রী। আর তাই, ২০১৯-এর গুরুত্ত্বপূর্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে একপ্রস্থ রাজনৈতিক শক্তির মাপামাপি বা সমীকরণ নিয়ে কাটাছেঁড়া হয়ে যাবে জিটিএ নির্বাচন ঘিরেই। আর তাই দার্জিলিঙের জেলাশাসক নির্বাচন নিয়ে ইঙ্গিত দিতেই লোকসভার আগে কোমর বেঁধে আসরে নেমে পড়ছেন সব পক্ষই।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!