২০১৯ লোকসভা ভোটে কংগ্রেস-তৃণমূল কংগ্রেস জোট সম্ভাবনা কতটা? জাতীয় বিশেষ খবর রাজ্য January 2, 2018 গত লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির মূলমন্ত্র ছিল ‘কংগ্রেস মুক্ত ভারত’, আর এবারের লোকসভা ভোটে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস লক্ষ্য নিল ‘কংগ্রেস মুক্ত বাংলা’। আর একটা বছর গড়ালেই দেশজুড়ে আসন্ন লোকসভা নির্বাচন, আর সেই নির্বাচনে রাজ্যের ৪২ টি লোকসভা আসনের সবকটিই এবার দখলে রাখতে চাইছে জোড়াফুল শিবির। নির্বাচনের পরে জাতীয় রাজনীতির রাশ হাতে নিতে যত বেশি সংখ্যক আসনের দখল নেওয়া জরুরি এবং তার জন্য কংগ্রেস নির্ভরতা কমিয়ে আঞ্চলিক দলগুলির ঐক্যকেই অগ্রাধিকার দিতে চায় শাসকদল বলে সূত্রের খবর। পাশাপাশি বিজেপির কেন্দ্রীভূত রাজনীতির উল্টোপথে যুক্তরাষ্ট্রীয় বাধ্যবাধকতাকে কাজে লাগাতে আঞ্চলিক শক্তি গুলোকেই অস্ত্র করতে চায় তৃণমূল কংগ্রেস। লোকসভায় একমাত্র তামিলনাড়ুর কোনো রাজনৈতিক দল ছাড়া আর কোনও আঞ্চলিক দলের পক্ষে তৃণমূল কংগ্রেসের থেকে বেশি আসন জয়ের সম্ভবনা নেই। তাই বর্তমানে লোকসভায় চতুর্থ বৃহত্তম দল তৃণমূলের রাহুল গান্ধীর দল নিয়ে তেমন কোন মাথা ব্যথা নেই বলেই সূত্রের খবর। বিগত লোকসভায় ৩৪ টি আসন জিতেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। পরবর্তীকালে নোটবাতিল এবং অন্যান্য ইস্যুতে সুর চড়াতে থাকে বিরোধী দলগুলি, যার পুরোভাগে ছিলেন এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তীব্র মোদী বিরোধিতা রাজ্যের বাইরে নিয়ে যেতে তিনি উত্তরপ্রদেশের অখিলেশ যাদব ও বিহারের লালু প্রসাদ যাদবের হাত ধরেছিলেন। পরবর্তীকালে তাঁর এই মোদী-বিরোধিতায় শামিল হয় শিবসেনার মত পুরোনো এনডিএ শরিকও। এমনকি পড়শি রাজ্য ওড়িশায় মহানদী বিতর্কেও সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিজু জনতা দলের নবীন পট্টনায়েকের পাশে দাঁড়িয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এই সব দেখেই রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের অভিমত এবার ধীরে ধীরে দেশব্যাপী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক উপস্থিতি ক্রমশ দৃঢ় হচ্ছে। যদিও নোট বাতিল থেকে জিএসটি সব ক্ষেত্রেই কংগ্রেসকে সঙ্গে নিয়েই সরব হয়েছেন তৃণমূল নেত্রী এবং বিজেপি বিরোধী মহাজোটে সোনিয়া গান্ধী ও রাহুল গান্ধী ব্যক্তিগতভাবে তাঁকে মহা গুরুত্ত্ব সহকারে মধ্যমনি করেছেন। কিন্তু তারপরেও রাজ্য কংগ্রেসের সাথে তিক্ততা বেড়েছে তৃণমূলের। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন কংগ্রেস থেকে দূরে থাকার বিষয়টি বেশ পরিকল্পিতভাবেই করছে তৃণমূল কংগ্রেস। ইতিমধ্যেই দিল্লিতে সংসদীয় দলের পক্ষ থেকে কংগ্রেসকে ছাড়াই অধিবেশন কক্ষের ভিতরে ও বাইরে নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিতে শুরু করেছে রাজ্যের শাসকদল। এমনকি কংগ্রেসের ছোঁয়াচ এড়াতে সম্প্রতি টুজি মামলায় ইউপিএ সরকারের মন্ত্রীরা বেকসুর খালাস হলেও তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি তৃণমূল শীর্ষনেতৃত্ত্ব। অন্যদিকে গুজরাত বিধানসভা নির্বাচনে জিতলেও রাহুল গান্ধীর সৌজন্যে মোদী-অমিত শাহদের স্নায়ুর চাপ বেড়েছে। কিন্তু এই নিয়ে জাতীয় রাজনীতি আন্দোলিত হলেও, কোনও হেলদোল দেখাননি তৃণমূল শীর্ষনেত্রী। উল্টে গুজরাতের বিরোধী ত্রয়ী হার্দিক প্যাটেল, অল্পেশ ঠাকুর ও জিগনেশ মেভানিকে ফোন করে অভিনন্দন জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং। অর্থাৎ কট্টর নরেন্দ্র মোদী বিরোধী আঞ্চলিক শক্তিগুলিকে নিয়ে কেন্দ্রীয় রাজনীতির অভিমুখ ঠিক করতে বদ্ধপরিকর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কংগ্রেসকে আপাতত দূরেই সরিয়ে রাখবেন বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। আপনার মতামত জানান -