এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > এবারের পঞ্চায়েতের পর রাজ্যের রাজনৈতিক অবস্থান ঠিক যেন ১০ বছর আগের প্রতিচ্ছবি

এবারের পঞ্চায়েতের পর রাজ্যের রাজনৈতিক অবস্থান ঠিক যেন ১০ বছর আগের প্রতিচ্ছবি


গতকাল মধ্যরাত, সারাদিনের লাইভ আপডেট দিতে দিতে মাথা আর তখন কাজ করছে না, একটু খোলা হাওয়ায় মাথাটা ঠান্ডা করতে করতে আর গরম চায়ে চুমুক দিতে দিতে বহুদিনের বন্ধু তথা সহ-সাংবাদিকের সঙ্গে আড্ডা হচ্ছিল। আড্ডার বিষয় যথারীতি বঙ্গ-রাজনীতি আর তর্কের বিষয়? বঙ্গ-রাজনীতিতে এ চিত্র কি আমরা আগে দেখেছি? আমার বন্ধুর জোরালো যুক্তি এতো পুরো ‘রিপিট-টেলিকাস্ট’ দেখছি ২০০৬ থেকে ২০০৮-এর, স্থান-কাল-পাত্র-চরিত্র পুরো বদলে গেছে, কিন্তু ঘটনা পরম্পরা তো সেই একই পথে হাঁটছে। কেন এই কথা প্রশ্নের যুক্তিতে আমার বন্ধু এক-আধটি নয়, একেবারে পনেরোটি তথ্য যা যুক্তি আকারে সাজিয়ে দিলেন –

ফেসবুকের কিছু টেকনিকাল প্রবলেমের জন্য সব খবর আপনাদের কাছে পৌঁছেছে না – তাই আরো খবর পেতে চোখ রাখুন প্রিয়বন্ধু মিডিয়া-তে

এবার থেকে প্রিয় বন্ধুর খবর পড়া আরো সহজ, আমাদের সব খবর সারাদিন হাতের মুঠোয় পেতে যোগ দিন আমাদের হোয়াটস্যাপ গ্রূপে – ক্লিক করুন এই লিঙ্কে

প্রথম যুক্তি –
২০০৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যের শাসকদল বামফ্রন্টের দাপটে বিরোধীরা কুপোকাত
২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের দাপটে বিরোধীরা কুপোকাত

দ্বিতীয় যুক্তি –
২০০৪ সালে রাজ্যের শাসকদল বামফ্রন্ট জিতেছিল ৩৫ টি লোকসভা আসন
২০১৪ সালে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস জিতেছিল ৩৪ টি লোকসভা আসন

তৃতীয় যুক্তি –
২০০৪ সালে বিরোধীদের হাতে ছিল – দার্জিলিং, রায়গঞ্জ, মালদা, জঙ্গিপুর, মুর্শিদাবাদ, বহরমপুর, কলকাতা দক্ষিণ – বাকি রাজ্য লালে লাল
২০১৪ সালে বিরোধীরা জিতেছে – দার্জিলিং, রায়গঞ্জ, মালদা-উত্তর, মালদা-দক্ষিণ, জঙ্গিপুর, মুর্শিদাবাদ, বহরমপুর, আসানসোল – বাকি রাজ্য সবুজে সবুজ

চতুর্থ যুক্তি –
২০০৪ সালে বিরোধীদের ক্ষমতা কিছুটা অবশিষ্ট ছিল উত্তর দিনাজপুর, মালদা ও মুর্শিদাবাদে
২০১৪ সালে বিরোধীদের ক্ষমতা কিছুটা হলেও অবশিষ্ট আছে উত্তর দিনাজপুর, মালদা ও মুর্শিদাবাদে

পঞ্চম যুক্তি –
২০০৪ সালে দক্ষিণবঙ্গে একটিমাত্র আসন জিতেছিল বিরোধীরা (কলকাতা-দক্ষিণ)
২০১৪ সালে দক্ষিণবঙ্গে একটিমাত্র আসন জিতেছে বিরোধীরা (আসানসোল)

ষষ্ঠ যুক্তি –
২০০৬ সালে বামফ্রন্টের হাতে ধুয়ে মুছে সাফ বিরোধীরা, এই রাজ্যে বাম-জমানা আদি-অনন্তকাল ধরে চলবে এই ধারণা মনের মধ্যে ক্রমশ জোরদার হচ্ছে
২০১৬ সালে একইরকমভাবে তৃণমূল কংগ্রেসের হাতে ধুয়ে মুছে সাফ বিরোধীরা, এই রাজ্যে তৃণমূল-জমানা আদি-অনন্তকাল ধরে চলবে এই ধারণা মনের মধ্যে ক্রমশ জোরদার হচ্ছে

সপ্তম যুক্তি –
২০০৬ সালে তৃণমূল কংগ্রেস কোনোরকমে প্রধান-বিরোধী দলের তকমা পায়
২০১৬ সালে কংগ্রেস কোনোরকমে প্রধান-বিরোধী দলের তকমা পায়

অষ্টম যুক্তি –
২০০৬ সালে রাজ্যের শাসকদল বামফ্রন্টের আসনসংখ্যা পৌঁছায় ২৩৪
২০১৬ সালে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের আসনসংখ্যা পৌঁছায় ২১১

নবম যুক্তি –
২০০৬ সালে বিরোধীদের মধ্যে প্রবল মমতা-হাওয়া ছিল, তবুও বিরোধীরা ব্যর্থ
২০১৬ সালে বিরোধীদের মধ্যে প্রবল বাম-কংগ্রেস-হাওয়া ছিল, তবুও বিরোধীরা ব্যর্থ

দশম যুক্তি –
২০০৬ এর পর রাজ্যে কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে (সিঙ্গুর, নন্দীগ্রাম) – ফলে মানুষের মধ্যে একটা সরকার বিরোধী হাওয়া মাথা ছাড়া দিয়ে উঠছিল
২০১৬ সালের পর থেকেও রাজ্যে কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে, যারফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে একটা সরকার বিরোধী হাওয়া দেখা দিচ্ছে বলে বিরোধীদের দাবি

একাদশ যুক্তি –
২০০৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে রাজ্যের শাসকদল বামফ্রন্ট রেকর্ড-সংখ্যক আসন বিনা-প্রতিদ্বন্দ্বিতায় যেতে
২০১৮ সালেও পঞ্চায়েত নির্বাচনে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস রেকর্ড-সংখ্যক আসন বিনা-প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতল

দ্বাদশ যুক্তি –
২০০৮ সালে তৎকালীন বিরোধী-নেত্রী দিল্লির বুকে গিয়ে রাজ্যের ‘লাল-সন্ত্রাস’ দেশবাসীকে দেখিয়েছিলেন
২০১৮ সালে এসেও বর্তমান বিরোধী দিল্লির বুকে ছুটে গেছেন বাংলায় শাসদলের ‘সন্ত্রাস’ দেশবাসীকে দেখতে

ত্রয়োদশ যুক্তি –
২০০৮ সালে তৎকালীন শাসকদল ‘তপন-সুকুরকে’ দলের গর্ব হিসাবে খুঁজে পেয়েছিল
২০১৮ সালে দাঁড়িয়ে বর্তমান শাসকদলের দুই দাপুটে নেতা ‘অনুব্রত-আরাবুলের’ সঙ্গে ‘তপন-সুকুরের’ তুলনা শুরু করেছেন বিরোধীরা

চতুর্দশ যুক্তি –
২০০৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে গোটা রাজ্যে তৎকালীন শাসকদল বামফ্রন্টের জয়জয়কার, দু-একটি জেলায় (বীরভূম, পূর্ব-মেদিনীপুর) মাথা তুলে দাঁড়িয়েছিল তৎকালীন বিরোধী
২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনেও গোটা রাজ্যে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের জয়জয়কার, দু-একটি জেলায় (পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম) মাথা তুলে দাঁড়াল বিজেপি

পঞ্চদশ যুক্তি –
২০০৮ এর পঞ্চায়েতেও রাজ্যের ভোটব্যাঙ্ক মূলত দুটি ভাগে ভাগ হয়ে গিয়েছিল – শাসক বামফ্রন্টের ভোট ও বিরোধী তৃণমূলের ভোট, বাকিরা আর সেভাবে দাগ কাটতে পারে নি। অর্থাৎ সরাসরি ‘পলিটিক্যাল-পোলারাইজেশন’
২০১৮ এর পঞ্চায়েতেও কিন্তু সেই একই দিশা দেখা যাচ্ছে। হয় শাসক তৃণমূল কংগ্রেসের ভোট নাহলে বিরোধী বিজেপির ভোট, অর্থাৎ সেই সরাসরি ‘পলিটিক্যাল-পোলারাইজেশন’

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!