এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > 42 এ 42 হয়নি, কিন্তু বিধানসভায় গেরুয়া ঝড় থামাতে এখন থেকেই ঘুঁটি সাজিয়ে ফেললেন মমতা

42 এ 42 হয়নি, কিন্তু বিধানসভায় গেরুয়া ঝড় থামাতে এখন থেকেই ঘুঁটি সাজিয়ে ফেললেন মমতা


এবারের লোকসভা নির্বাচনে বাংলার 42 টি লোকসভা আসনের মধ্যে 42 টি লোকসভা আসন দখল করে দিল্লি থেকে বিজেপি সরকারকে সরানোর ডাক দিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু বাস্তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেই স্বপ্ন পূরণ হওয়া তো দূর অস্ত, উল্টে বাংলায় নিজের গড়ই ধরে রাখতে পারেনি তৃনমূল।

বিগত 2014 সালে বাংলা থেকে তৃণমূল 34 টি আসন পেলেও এবার তা কমে দাঁড়িয়েছে 22 টিতে। অন্যদিকে বিজেপি এবার বাংলায় নিজেদের প্রবলভাবে উত্থান ঘটিয়ে 18 টি আসন দখল করেছে। ভোটের ফলাফল পর্যালোচনায় দেখা গেছে যে, রাজ্যের সিংহভাগ বিধানসভা আসনেই এগিয়ে রয়েছে গেরুয়া শিবির। যা তৃণমূল নেত্রীর কাছে আগামী 2021 সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে অত্যন্ত অস্বস্তির কারণ বলেই মনে করেছিল বিশেষজ্ঞ মহলের একাংশ।

আর তাই এবারে লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল বেরোনোর পর শনিবার কালীঘাটে নিজের বাসভবনে রাজ্যের সমস্ত জেলার দলীয় নেতৃত্বদের নিয়ে বৈঠক ডেকেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেখানেই যে সমস্ত জেলায় তৃণমূল কংগ্রেসের খারাপ ফলাফল হয়েছে, সেখানে একাধিক দলীয় নেতৃত্বের ডানা ছেঁটে ফেললেন তিনি।

সূত্রের খবর, এদিন জঙ্গলমহলের ঘাসফুল ফোটানোর জন্য দলীয় পর্যবেক্ষক হিসেবে ফের দায়িত্ব দেওয়া হল শুভেন্দু অধিকারীকে। পাশাপাশি সরকারি সাংগঠনিক দায়িত্বে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে সরিয়েও সেই শুভেন্দু অধিকারীকে বসালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

অন্যদিকে রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী তথা কলকাতা পৌরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে বর্ধমান, হাওড়া এবং হুগলি জেলার পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হল। এদিকে রাজ্যের বেশ কিছু জেলার জেলা সভাপতি পদেও বদল আনলেন তৃণমূল নেত্রী। সূত্রের খবর, হুগলিতে রত্না দে নাগ, দক্ষিণ দিনাজপুরে অর্পিতা ঘোষ, উত্তর দিনাজপুরে কানাইয়ালাল আগরওয়াল, ঝাড়গ্রামে বীরবাহা সোরেন, মালদায় মৌসম বেনজির নূর, বাঁকুড়ায় শুভাশিস বটব্যাল, বিষ্ণুপুরে শ্যামল সাঁতরা, বর্ধমান পূর্ব স্বপন দেবনাথ, মুর্শিদাবাদ আবু তাহের খান, বর্ধমান পশ্চিমে জীতেন তিওয়ারি, কৃষ্ণনগরের মহুয়া মৈত্র এবং রানাঘাটে শংকর সিংকে দায়িত্ব দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

অন্যদিকে কোচবিহারে তৃণমূলের ভরাডুবির কারণে উত্তরবঙ্গের চেয়ারম্যান পদ থেকে রবীন্দ্রনাথ ঘোষকে সরিয়ে সেখানে দায়িত্ব দেওয়া হলো দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী অমর সিং রাইকে। পাশাপাশি শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান পদ থেকে সৌরভ চক্রবর্তীকে সরিয়ে সেখানে বিজয়চন্দ্র বর্মনকে বসালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু তাই নয়, উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের চেয়ারম্যান অপূর্ব সরকার এবং এইচআরবিসির চেয়ারম্যান করা হলো দীনেশ ত্রিবেদীকে।

এদিকে জেলা সভাপতির পদ পাওয়ার পাশাপাশি মহিলা কমিশনের চেয়ারম্যানেরও বাড়তি দায়িত্ব পেলেন মালদার মৌসম বেনজির নূর। বস্তুত, এবারে লোকসভা ভোটে উত্তরবঙ্গে তৃণমূলের ভরাডুবি হয়েছে। তাই উত্তরবঙ্গের সংগঠনের প্রতি নজর রাখতে সেখানকার পর্যবেক্ষক করা হল রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকে। পাশাপাশি উত্তরবঙ্গের বেশ কিছু জেলার দলীয় পর্যবেক্ষক হিসেবে শুভেন্দু অধিকারীর উপরই ভরসা রাখলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

তবে আশ্চর্যজনক ভাবে এদিন তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড হিসেবে পরিচিত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনেকটাই দায়িত্ব কমিয়ে দিলেন তৃণমূল নেত্রী। অভিষেক সবার সাথে কো-অর্ডিনেশন করবে এবং ভোটার লিস্ট সামলাবে বলে জানিয়ে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সব মিলিয়ে দলের ভরাডুবির পর এবার বিশ্বস্ত সৈনিকদের দিয়ে দলীয় সংগঠনকে সাজাতে শুরু করলেন তৃণমূল নেত্রী।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!