এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > বিনা মাস্কে স্বাস্থ্যবিধি উড়িয়েই চলছে তৃণমূলের বিজয়া সম্মিলনী! বিতর্কে একাধিক প্রভাবশালী

বিনা মাস্কে স্বাস্থ্যবিধি উড়িয়েই চলছে তৃণমূলের বিজয়া সম্মিলনী! বিতর্কে একাধিক প্রভাবশালী


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- পুজোর কিছু আগে রাজ্যের সংক্রমণের হার খানিকটা কমলেও পুজোর সময় থেকে রাজ্যে তরতরিয়ে বেড়েছে করোনা সংক্রমণ। সেই পরিস্থিতিতে একদিকে যেরকম আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছিল প্রশাসনের তরফ থেকে তেমনই চিকিৎসকদের তরফ থেকেও শোনা গিয়েছিল প্রমাদ বাণী। আর যার জেরে পুজোর আগেই সমস্ত পুজো প্যান্ডেল গুলিকে কনটেইনমেন্ট জোন করে দেওয়া হয়েছিল।

শুধু তাই নয়, এছাড়া প্যান্ডেলের ঠাকুর দেখা, ঘোরা, প্যান্ডেলে ভিড় করা এই সমস্ত কিছুর ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে দিয়েছিল উচ্চ আদালত। তবে সেই সঙ্গে যে সমস্ত মানুষ বাইরে বেরোচ্ছে তাদের মুখে মাস্ক থাকা, সামাজিক দূরত্ব পালন করা, হাত স্যানিটাইজ করা এবং অন্যান্য সমস্ত করোনা সতর্কতা সম্পর্কিত বিষয়গুলি পালন করার জন্য বারবার অনুরোধ করা হয়েছিল চিকিৎসক, প্রশাসন, সরকারের তরফ থেকে।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সমাজের সমস্ত মানুষকে একই দিকে চালনা করতে গেলে যেভাবে একজন নেতার প্রয়োজন হয়, তেমনি সেই ব্যক্তি যা করেন সেটাকেই যে সাধারণ মানুষ অনুসরণ করে সে কথাটা সর্বার্থে প্রযোজ্য। আর তাই করোনা পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের মধ্যে করোনা সম্পর্কিত বার্তা পৌঁছে দেওয়ার জন্য বারবারই সমাজের বিশিষ্টজনদের দিয়ে প্রচার করানোর প্রক্রিয়া দেখা গেছে।

কিন্তু সম্প্রতি তৃণমূলের বিজয়া সম্মিলনী অনুষ্ঠানে যেভাবে মাস্ক না পরে, বা স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা না করেই সাধারণ মানুষ তথা নেতা-নেত্রীদের একত্রিত হতে দেখা গেছে, তাতে বিতর্ক তৈরি হয়েছে অনেক ক্ষেত্রে। জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে হুগলি জেলার মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের বিজয়া সম্মিলনী অনুষ্ঠানে।

বৃহস্পতিবার পান্ডুয়া তেলিপাড়া জিটি রোড এলাকায় অনুষ্ঠিত হওয়া সেই বিজয়া সম্মিলনী অনুষ্ঠানে মঞ্চে হাজির থাকা শাসক দলের নেতা-নেত্রীদের বেশিরভাগের মুখে ছিল না মাস্ক, এমনকি মঞ্চের সামনে সামাজিক দূরত্ব অগ্রাহ্য করে বসেছিলেন হাজারখানেক মানুষ। যাদের মধ্যে সর্বোচ্চ ১০০ জনের মুখে মাস্ক ছিল বলে অভিযোগ উঠেছে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এদিন বিকেল চারটা থেকে ছয়টা পর্যন্ত চলা এই সভায় হাজির থাকা নেতা নেত্রীদের মধ্যে যেখানে হাতেগোনা কয়েকজন মুখে মাস্ক পরেছিলেন, সেই সঙ্গে অনেককেই আলিঙ্গন এবং করমর্দন করতেও দেখা গেছে। যা দেখে চোখ কপালে ওঠে অনেকেরই। এই অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন তৃণমূলের জেলা সভানেত্রী করবী মান্না।

এদিন মঞ্চে থাকাকালীনও তাঁর মুখেও দেখা যায়নি মাস্ক। আর রাজ্যজুড়ে যখন করোনা এমন তাণ্ডব ছড়াচ্ছে, সেই সময় শাসক দলের এহেন কার্যকলাপ মোটেই আশাপ্রদ নয় বলেই মনে করা হচ্ছে। সেইসঙ্গে এই কাজ সাধারন মানুষদের নিয়ম লঙ্ঘন করার ক্ষেত্রে যে নতুন পথ দেখাচ্ছে সেই কথাও শোনা গেছে বিরোধীদের মুখে।

এপ্রসঙ্গে এলাকার একজন বাসিন্দার মতে কলকাতা হাইকোর্ট যেখানে দুর্গাপুজোর মতোই উৎসবে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে এবং চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পুজো এবং পান্ডুয়ার কালীপূজার শোভাযাত্রা বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে, সেখানে শাসকদলের এহেন কার্যকলাপ অবিবেচকের মত হয়েছে বলেই জানিয়েছেন তিনি। অন্যদিকে এ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে সংগঠনের জেলা নেত্রী বলেছেন, মঞ্চে তাঁর কাছে মাস্ক ছিল। তিনি মাস্কটিকে গলায় ঝুলিয়ে রেখেছিলেন।

তাঁর কথায় তাঁরা অনেককেই মাস্ক দিয়েছেন, সামাজিক দূরত্ববিধিও মানার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু এদিন যেভাবে মানুষ সভায় হাজির হয়েছিলেন, তাকে তিনি অভাবনীয় বলেই বর্ণনা করেছেন। এছাড়া তাদের বেশিরভাগ কর্মী সমর্থকদের মুখে মাস্ক ছিল বলেই দাবি করেছেন তিনি। এছাড়া আগামী দিনে মানুষ যাতে মাস্ক ব্যবহার করেন, সেই বার্তায় তিনি দিয়েছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।

অন্যদিকে, এদিন যেখানে তৃণমূলের কর্মসূচি হয়েছে, সেখানে সাধারণত ফলের বাজার বসে বলে জানা গিয়েছিল। এবং লক্ষ্মী পূজার আগে রোজগারের আশা নিয়ে যে সমস্ত ফলবিক্রেতা এদিন সকালে বাজারে বসেছিলেন, সভার কারণে তাদের প্রত্যেককেই সেখান থেকে তুলে দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ করেছেন অনেকে।

যাদের মধ্যে থেকে একজনের কথায়, লক্ষ্মী পূজোর কেনাকাটা চলে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত। তাই ভালো ফল বিক্রির আশায় অনেক ফল তুললেও এখন সেই ফল নিয়ে তারা কি করবেন তা ভেবে পাচ্ছেন না কেউই। তবে শাসকদলের সভা হবে এই ভয়ে তারা কেউই মুখ খোলেননি বলেও জানিয়েছেন তারা।

অন্যদিকে হুগলি জেলার সভানেত্রীর কথায় তিনি এই বিষয়টা সম্পর্কে জ্ঞাত ছিলেন না বলেই জানিয়েছেন। অন্যদিকে পান্ডুয়া পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ তৃণমূলের আনিসুল ইসলামের মতে দু ঘন্টার মধ্যেই যেহেতু অনুষ্ঠান শেষ হয়ে গিয়েছে, তাই ফল বিক্রেতাদের কোনো ক্ষতি হয়নি বলেই জানিয়েছেন তিনি। তবে তৃণমূলের এহেন কাজে তাদের যে ভাবমূর্তি বেশ ক্ষুন্ন হয়েছে, সে কথাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!