এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > অভিষেকের ভাষা-সন্ত্রাস! তৃণমূলকে নয়া প্রশ্নবানে বিদ্ধ করলেন বিজেপি নেতা!

অভিষেকের ভাষা-সন্ত্রাস! তৃণমূলকে নয়া প্রশ্নবানে বিদ্ধ করলেন বিজেপি নেতা!


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –রাজনীতিতে আক্রমণ, প্রতি আক্রমণ থাকবে, এটা অত্যন্ত স্বাভাবিক বিষয়। কিন্তু মাঝেমধ্যেই রাজনৈতিক দলের নেতা-নেত্রীরা লড়াইয়ে পাল্লা দিতে না পেরে বক্তৃতার মঞ্চে করে ফেলেন অশালীন মন্তব্য। বাম আমল হোক বা তৃণমূল আমল, শাসক হোক বা বিরোধী, বাংলার সংস্কৃতিকে শিকেয় তুলে মাঝেমধ্যেই “তুই তুকারি” মন্তব্যের রেওয়াজ করতে দেখা যায় রাজনৈতিক নেতা থেকে শুরু করে হেভিওয়েট জনপ্রতিনিধিদের। কিন্তু ক্ষমতায় আসার আগে যাদের মুখে শোনা যায় সংস্কৃতির কথা সেই তারাই ক্ষমতায় আসার পরে 180° বদলে যাবেন, হয়ত বা এটা অনেকেই আশা করতে পারেননি।

সামনে আরেকটা বিধানসভা নির্বাচন। যে নির্বাচন স্থির করবেন নবান্নের ক্ষমতা দখল করবে। আর সেই নির্বাচনী যুদ্ধে নামার আগে এখন রীতিমত বাকযুদ্ধ শুরু হয়েছে শাসক-বিরোধী নেতাদের মধ্যে। তবে শুধু বাকযুদ্ধ হলে হয়ত বা আশ্বস্ত হতেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু বাকযুদ্ধ এখন রীতিমত কু-বাক্যের যুদ্ধে পরিণত হয়েছে।এককালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিরোধী নেত্রী থাকার সময় বিগত বাম সরকারের আমলে বহু অশ্লীল মন্তব্যের শিকার হয়েছিলেন সিপিএমের বহু হেভিওয়েট নেতা বিমান বসু, থেকে শুরু করে প্রয়াত বিনয় কোঙ্গার, অনিল বসুর মত নেতারা।

মাঝেমধ্যেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কেন্দ্র করে অশালীন মন্তব্য করতে ব্যস্ত থাকতেন যাকে হাতিয়ার করেছিল তৎকালীন বিরোধী দল তৃণমূল কংগ্রে। যার পরেই বাংলার সংস্কৃতি এটা নয় বলে সরব হয়েছিল আজকের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। স্বাভাবিক ভাবেই তারা ক্ষমতায় আসলে বাংলায় কৃষ্টি এবং সংস্কৃতি সর্বোপরি বাংলার রাজনৈতিক সংস্কৃতির মধ্যে একটা সৃষ্টিশীল লড়াই হবে বলেই আশা করেছিলেন সকলে।

কিন্তু শাসকের রং এক হয় বলে অভিযোগ বিরোধীদের। তাই একসময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে রাজ্যে পরিবর্তনের পক্ষে লড়াই করা শুভেন্দু অধিকারী এখন বিরোধী শিবিরে নাম লেখানোর তার প্রাক্তন দল তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিভিন্ন বক্তব্য নিয়ে ভাষা সন্ত্রাসের অভিযোগ তুললেন। এক্ষেত্রে নিজের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে তিনি মনে করিয়ে দিলেন, বিগত বাম আমলে একাধিক নেতার কথা।

বলা বাহুল্য, শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে নাম লেখানোর পর থেকেই তাকে বিভিন্ন সভা সমিতি থেকে আক্রমণ করছেন তৃণমূলের ছোট-বড়-মাঝারি স্তরের নেতারা। কখনও শুভেন্দুবাবুকে বলা হচ্ছে গদ্দার, আবার কখনও বা মীরজাফর সম্বোধনে তাকে আখ্যায়িত করা হচ্ছে। তবে এত পর্যন্ত সবকিছু ঠিকঠাক থাকলেও, সম্প্রতি কাঁথির সভা থেকে সেই শুভেন্দু অধিকারীকে “তুই তুকারি” বলে সম্বোধন করেন তৃণমূল কংগ্রেসের যুব সংগঠনের সর্বভারতীয় সভাপতি তথা ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ। আর সেই বিষয়টি তুলে ধরে বুধবার নোয়াপাড়ার সভা থেকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাষা নিয়ে মন্তব্য করেন শুভেন্দু অধিকারী।

বক্তব্য রাখতে উঠে তিনি বলেন, “কি ভাষা দেখেছেন! আমার ওকে দেখে অনিল বসুর কথা মনে পড়ে যাচ্ছে।” রাজনৈতিক সচেতন মানুষজনেরা বলছেন, শুভেন্দু অধিকারী এই কথা বলে যেন মাস্টারস্ট্রোক দিলেন। এর আগে তৃণমূল কংগ্রেস ত্যাগ করার পর বহু সভা থেকে প্রাক্তন দলকে কটাক্ষ করলেও, তিনি যে অশালীন মন্তব্য করেন না, তা বুঝিয়ে দিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী।

নিজের বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে তুলে ধরেছিলেন, তিনি বিদ্যাসাগরের দেশের লোক। তার মুখ থেকে কেউ অশ্লীল মন্তব্য শুনতে পাবেন না। কিন্তু রাজনৈতিক আক্রমণ যে তিনি করবেন, তা অভিজ্ঞ এই রাজনীতিবিদ বারবার প্রতিষ্ঠা করেছেন। আর এই পরিস্থিতিতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বেশ কিছু মন্তব্য নিয়ে প্রশ্ন তুলে সংস্কৃতির বুলি আওড়ানো তৃণমূল কংগ্রেসকে এ কেমন সংস্কৃতি, বলে প্রশ্নবানে বিদ্ধ করলেন শুভেন্দু অধিকারী। প্রসঙ্গত, বিগত 2011 সালের বিধানসভা নির্বাচনের প্রচার যখন তুঙ্গে, তখন বৈশাখের তপ্ত দুপুরে হঠাৎ করেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে অশালীন মন্তব্য করে বসেন সিপিএম নেতা অনিল বসু।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

যেখানে তৎকালীন তৃণমূল নেত্রীকে কটুক্তি করে গোটা রাজ্য রাজনীতিতে আলোড়ন ফেলে দেন তিনি। স্বাভাবিক ভাবেই তৃণমূলের হাওয়া যখন চরমে, তখন তৃণমূলের বিরুদ্ধে সিপিএমের একের পর এক নেতার এই ধরনের কটুক্তি রীতিমত বাড়তি হাতিয়ার হয়ে দাঁড়ায় ঘাসফুল শিবিরের কাছে। নির্বাচনী প্রচার ময়দানে সিপিএমের এটাই সংস্কৃতি বলে তৃণমূল ক্ষমতায় আসলে “বাংলার সংস্কৃতি হবে রবীন্দ্রনাথ নজরুল” বলে দাবি করেন তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা নেত্রীরা। আর সেই তৃণমূল কংগ্রেস 10 বছর ধরে রাজ্যের ক্ষমতায় রয়েছে।

অনুব্রত মণ্ডল থেকে শুরু করে আরাবুল ইসলাম, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক থেকে শুরু করে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় একের পর এক নেতারা গত নির্বাচনের সময় আসছে, ততই বেলাগাম মন্তব্য করছেন‌। যা বাংলার সংস্কৃতির ক্ষেত্রে খুব একটা স্বাস্থ্যকর নয় বলেই দাবি করছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে এই সমস্ত নেতারা এই ধরনের মন্তব্য করলেও, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় অন্তত সেই সমস্ত মন্তব্য থেকে সচেতন হবেন বলেই আশা করেছিলেন বাংলার বিশিষ্টজনেরা।

তবে সদ্য তৃনমূল থেকে চলে যাওয়া শুভেন্দু অধিকারীকে আক্রমণ করতে গিয়ে যেভাবে “তুই-তুকারি” শব্দ প্রয়োগ করতে দেখা গেল তৃণমূলের অলিখিত সেকেন্ড-ইন-কমান্ডকে, তাতে সিপিএমের কথা তুলে ধরে সেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করে শুভেন্দু অধিকারী বুঝিয়ে দিলেন, তৃণমূলের ভাষা সংস্কৃতি। তাই একের পর এক নেতার এই ধরনের বেলাগাম মন্তব্য আর পাল্টা বিরোধী পক্ষ থেকে আক্রমণ আসায় বিশেষজ্ঞরা বলছেন “এত ভঙ্গ বঙ্গ দেশ, তবু রঙ্গে ভরা।”

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!