এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > মমতার ঘুম ভাঙবে কবে? তৃণমূলকে চরম লজ্জায় ফেললেন সুকান্ত!

মমতার ঘুম ভাঙবে কবে? তৃণমূলকে চরম লজ্জায় ফেললেন সুকান্ত!


 

প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- সন্দেশখালিতে যখন আগুন জ্বলছে, যখন সেখানকার মহিলারা প্রকাশ্যে বলে ফেলছেন যে, এইখানকার মা-বোনেদের রাত্রিবেলা তুলে নিয়ে যেতেন তৃণমূল নেতারা, তখন এই লজ্জা রাখার মত জায়গা নেই পশ্চিমবঙ্গের শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষের। কিন্তু একবারের জন্যও পশ্চিমবঙ্গের প্রশাসনিক প্রধান হিসেবে একজন মহিলা হয়ে কড়া বার্তা দিতে পারছেন না এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। কারণ তার ভোটব্যাঙ্ক চাই। সেই কারণে যারা এতদিন সন্দেশখালীর ক্ষমতা দখল করে রেখেছিল, যারা ভোট লুট করে তৃণমূলকে ক্ষমতায় বসিয়েছিল, সেই সমস্ত নেতাদের বিরুদ্ধে মানুষ কথা বললেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কোনো বার্তা দিতে পারছেন না।

স্বাভাবিক ভাবেই তিনি গোটা রাজ্যবাসীর কাছে চরম লজ্জার কারণ বলেই কটাক্ষ করছে বিরোধীরা। আর এসবের মাঝেই বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করলেন। তিনি যে কথা বললেন, তারপর অনেকেই বলছেন যে, রোম যখন জ্বলছিল, তখন নীরো ঘুমাচ্ছিলেন। আর সন্দেশখালি যখন জ্বলছে, তখন এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর বড় বড় বাতেলা দেওয়া ভাষণ কেন, তার দেখাটুকুও পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে এই যে তিনি এত বড় বড় কথা বলেন যে, তিনি নাকি রাজ্যের পাহারাদার, তাহলে সেই নমুনা কোথায়?

প্রসঙ্গত, এদিন সন্দেশখালির ঘটনা নিয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতিকে একটি প্রশ্ন করা হয়। আর সেই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে তিনি কটাক্ষ করেন এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে। সুকান্ত মজুমদার বলেন, “এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ঘুমোচ্ছেন। এটাই কি রবীন্দ্রনাথ, নজরুলের বাংলা? এটাই কি সংস্কৃতির বাংলা! তার বাড়ির মা-বোনেদের ছাড়া তিনি আর কাউকে নিয়ে চিন্তা করেন না। বাংলার মহিলাদের নিয়ে তার কোনো চিন্তা নেই। এই লজ্জা আমরা রাখব কোথায়?” ‌ অনেকে বলছেন, নিজের ক্ষমতা, নিজের স্বার্থ সবার আগে এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে। এতদিনে তা রাজ্যবাসীর কাছে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। তা না হলে তিনি ভাতা, ভর্তুকি দিয়ে রাজ্যের মানুষের কোমরটা ভেঙে দিতেন না। সন্দেশখালিকে উপদ্রুত অঞ্চলে পরিণত হতে দিতেন না। সেখানকার দুষ্কৃতীদের প্রথম দিনেই তিনি গ্রেফতার করার নির্দেশ দিতেন।

কিন্তু যখন এতদিন পরেও শেখ শাহাজাহান গ্রেফতার হয়নি, তখন বুঝে নিতে হচ্ছে যে, কার আশ্রয়ে এই অভিযুক্ত রয়েছেন। সন্দেশখালির মহিলাদের এত বড় ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু তারপরেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একবারের জন্যও সেই নিয়ে একটা কথা বলতে পারছেন না! কিন্তু এটা যদি তার ঘনিষ্ঠ কেউ হত, তাদের চোখের সামনে যদি এই ঘটনা ঘটত, তাহলে কি তিনি চুপ থাকতে পারতেন! তার বিবেক কি একবারের জন্যেও নাড়া দিত না? কেন একজন মহিলা মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরেও তিনি নীরব ভূমিকা পালন করছেন! যেখানে পুরুষরাও এই গোটা ঘটনা নিয়ে সোচ্চার হচ্ছে, দলমত নির্বিশেষে সবাই রাস্তায় নামছেন, সেখানে মুখ্যমন্ত্রীর নীরবতা পালন যথেষ্ট নিরাশার সৃষ্টি করেছে রাজ্যবাসীর মধ্যে।

ইতিমধ্যেই গোটা বিষয়ে কটাক্ষ করতে শুরু করেছে বিজেপি। তাদের দাবি, লজ্জা থাকলে তো দু চার কথা বলবেন? এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর আর সময় নষ্ট না করে পদত্যাগ করা উচিত। রাজ্যবাসীকে যিনি নিরাপত্তা দিতে পারেন না, রাজ্যের মেয়েদের সম্মান যিনি রক্ষা করতে পারেন না, তার ক্ষমতায় টিকে থাকা উচিত নয়। তবে এসব করে আর বেশি দিন টিকে থাকা যাবে না। আগামী দিন এই রাজ্যের মানুষ তৃণমূলের বিরুদ্ধে রায় দেবে বলেই দাবি গেরুয়া শিবিরের।

পর্যবেক্ষকদের মতে, সুকান্ত মজুমদার তো একদম বিবেকে নাড়া দেওয়ার মতই কথা বলেছেন। সত্যিই তো তাই! মুখ্যমন্ত্রী তো একজন নিজেও মহিলা। ছেড়ে দিন মহিলা, তিনি তো একজন মুখ্যমন্ত্রী। তার তো রাজ্যের সকল মানুষের বিপদে আপদে পাশে থাকা উচিত। যেখানে এত বড় ঘটনা ঘটে যাচ্ছে, যেখানে মহিলারা প্রকাশ্যে মুখ খুলছেন, সেখানে কেন এত কিছুর পরেও তিনি চুপ করে আছেন? কেন তিনি রাজধর্ম পালন করতে পারছেন না? তাহলে কি তার কাছে ভোটব্যাংকটাই সবার আগে? কিন্তু একজনকে রক্ষা করতে গিয়ে গোটা রাজ্যের মানুষকে যেভাবে বিপদের মুখে ঠেলে দিচ্ছেন, যেখানে মানুষের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করছেন এই মুখ্যমন্ত্রী, তাতে কোন বার্তা যাচ্ছে সমাজের কাছে?

তিনি কি ভেবে নিয়েছেন যে, ক্ষমতা একবার পেয়ে গিয়েছেন, সুতরাং তাকে আর কেউ ক্ষমতা থেকে সরাতে পারবে না! তাই যা খুশি, তিনি তাই করবেন, কারওর কথায় কান না দিয়ে যতই তার দুধেল গাইদের বিরুদ্ধে কথা বলা হোক না কেন, তিনি সেগুলো গায়ে লাগাবেন না। যদি এভাবেই সবকিছু চলতে থাকে, তাহলে সামনের দিন কিন্তু অত্যন্ত ভয়ংকর। যে প্রতিবাদের আগুন সন্দেশখালিতে জ্বলছে, আগামী দিনে তার বিস্তার গোটা রাজ্য জুড়ে হবে। যার ফল হাতেনাতে পেতে হবে এই রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানকে। সুকান্ত মজুমদারের বক্তব্যের পর তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক সমালোচকরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!