দিল্লির নাটক শেষ, অবশেষে খোলস ছাড়লেন মমতা? এতদিন চুপ কেন? কড়া প্রশ্ন বিজেপির! তৃণমূল বিজেপি রাজনীতি রাজ্য October 4, 2023 প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- ভারতবর্ষের রাজধানীতে তৃণমূল কর্মসূচি করল। কিন্তু সেখানে দেখাই গেল না তৃণমূল নেত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বেই ধর্না কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হলো দিল্লিতে। তবে সেই কর্মসূচি কতটা মানুষের মনে নাড়া দিল, তা তো সময় বলবে। কিন্তু প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত তৃণমূল দলের হর্তা কর্তা, বিধাতা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কার্যত আড়ালে থাকা নিয়ে অনেকের মনেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল। কিন্তু একেবারে শেষ পর্বে সেই দিল্লি নাটক শেষ হওয়ার পর খোলস ছেড়ে বেরোতে দেখা গেল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। যার ফলে বিরোধীরা একটাই প্রশ্ন করছেন, আন্দোলন চলার সময় কেন সশরীরে উপস্থিত না থাকলেও, অডিও বার্তা বা ভিডিও বার্তায় কর্মীদের বার্তা দিলেন না বাংলার মুখ্যমন্ত্রী? প্রসঙ্গত, এদিন দিল্লিতে ধর্না দেওয়ার পর কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীর দপ্তরে গিয়ে তৃণমূল অসভ্যতা করে বলে অভিযোগ। যার ফলে পুলিশের পক্ষ থেকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সহ বেশ কিছু তৃণমূলের সাংসদ এবং মন্ত্রীদের আটক করা হয়। আর সেই বিষয় নিয়েই টুইট করে নিজের প্রতিবাদ জানান তৃণমূল দলের নেত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যাই হোক, তার দলের সাংসদদের গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তাই তিনি প্রশ্ন করেছেন, এটা অত্যন্ত স্বাভাবিক বিষয়। কিন্তু অস্বাভাবিক বিষয় যে, এই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তো বিজেপির বিরুদ্ধে কতই না অভিযোগ করেন। তার তো অভিযোগ ছিল যে, কেন্দ্র পশ্চিমবঙ্গকে বঞ্চনা করছে। সেখানে তিনি যখন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী, যখন সরকারি একটি দাবি নিয়ে তৃণমূলের এই আন্দোলন, তখন তার অন্তত এই মঞ্চে থাকা উচিত ছিল। যদিও বা একটা পক্ষ বলছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অসুস্থ। তাই তিনি থাকতে পারলেন না। কিন্তু এত বড় গুরুত্বপূর্ণ বিষয় কেন হাতছাড়া করে দিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী? তিনি সশরীরে উপস্থিত থাকতে পারবেন না ঠিক আছে। কিন্তু অডিও বার্তা বা ভিডিও বার্তা তো তিনি দিতে পারতেন। সেটাও যখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দিতে দেখা গেল না, একেবারে শেষ প্রান্তে এসে তিনি একটি টুইট করে সমালোচক মহলের মনে অনেকগুলো প্রশ্ন তুলে দিলেন। গেরুয়া শিবিরের দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই নীরবতার পিছনে যথেষ্ট কারণ ছিল। তিনি তো রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। তিনি যদি দিল্লিতে এই আন্দোলনে যুক্ত হতেন, তাহলে কেন্দ্র তাকে কড়া কড়া প্রশ্নবানে বিদ্ধ করত। কারণ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় খুব ভালো মতোই জানেন যে, দুর্নীতি হয়েছে এ জন্যই কেন্দ্রীয় সরকার এই টাকা বন্ধ রেখেছে। তাই মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তিনি দিল্লির মাটিতে আসলে এবং কেন্দ্রের কাছে জবাবদিহি চাইলে, কেন্দ্র তাকে এমন কিছু প্রশ্ন করতো, যাতে কার্যত তৃণমূলের গ্যাস বেলুনের হাওয়া ফুস হয়ে যেত। তাই শেষ পর্যন্ত আড়ালে থেকেই গোটা দিল্লির আন্দোলন শুধু দেখে গিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, কিন্তু মুখ দিয়ে একটা কথাও বের করতে দেখা যায়নি তাকে। তবে শেষ মুহূর্তে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূল সাংসদদের আটক করা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য টুইট করেছেন। কিন্তু এসব করে তিনি যদি বোঝাতে চান যে, তিনি দিল্লির আন্দোলনের সঙ্গে ছিলেন, তাহলে তিনি ভুল ভাবছেন। বাংলার মানুষ মুখ্যমন্ত্রীর এই চালাকি খুব সহজেই ধরে ফেলেছে বলেই দাবি বিরোধী শিবিরের। পর্যবেক্ষকদের মতে, যে বিষয় নিয়ে তৃণমূল দিল্লিতে ধর্না দিয়েছে, তা যে অন্যায্য দাবি, তা বুঝতে বাকি নেই। তারা বলছে, তাদের টাকা নাকি কেন্দ্রীয় সরকার আটকে রেখেছে। কিন্তু কেন্দ্র বলছে, আমরা আজকেই টাকা দিতে রাজি আছি। শুধু হিসেবটা দিয়ে দিক বাংলা। ফলে এই জায়গায় দাঁড়িয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বদলে যদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিল্লিতে আসতেন, তাহলে তাকেই নেতৃত্ব দিতে হতো। আর তখন কেন্দ্র যে যুক্তি সহকারে প্রশ্নগুলো তৃণমূল নেত্রীর কাছে রাখতো, তখন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এমন চাপে পড়তেন যে, তৃণমূলের এই আন্দোলন বিগ জিরো হয়ে যেত। তাই শেষ পর্যন্ত পর্দার আড়ালে থেকে মেঘনাদের মত কাজ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দিনের শেষে তেমনটাই দাবি রাজনৈতিক সমালোচকদের। আপনার মতামত জানান -