মমতার বিরুদ্ধে কি এবার পদক্ষেপ নেবেন রাজ্যপাল? চাপ বাড়ালেন শুভেন্দু! তৃণমূল বিজেপি রাজনীতি রাজ্য February 4, 2024 প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- রাজ্যপাল কেমন হয়, তার আচার-আচরণ কেমন হওয়া উচিত, তা জগদীপ ধনকরকে দেখে শেখা উচিত ছিল পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের। বাংলার মানুষ অনেক আশা করেছিলেন যে, তৃণমূল সরকার যেভাবে চুরি করছে, যেভাবে তারা বাংলাকে শেষ করে দিচ্ছে, তাতে এই আনন্দ বোস রাজ্যপালের দায়িত্ব নেওয়ার পর এই সরকারকে আচ্ছা মতন টাইম দেবেন। কিন্তু যেভাবে তিনি নরমে গরমে এই সরকারের সঙ্গে প্রতিমুহূর্তে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন, তাতে এই রাজ্যপালের কাছ থেকে ভালো কিছু আশা করাই বৃথা। রাজ্যের যারা গণতন্ত্রপ্রেমী মানুষ, যারা বিরোধী দল, যারা এই সরকারের চুরির বিরুদ্ধে লড়াই করছেন, তারা বলছেন যে, এই রাজ্যপাল কাজের কাজ কিছুই করতে পারবেন না। কিন্তু এত বড় ইস্যু যখন সামনে চলে এলো, যখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চাপে ফেলা এক মিনিটের ব্যাপার, তখন রাজ্যপাল কি এবার নিজের ঘুম ভেঙে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন? সাংবিধানিক প্রধান হিসেবে তিনি কি করবেন, সেটা তাঁর ব্যাপার। কিন্তু বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী যে কথা বললেন, তারপর অন্তত রাজ্যের গণতন্ত্রকে রক্ষা করার জন্য, রাজ্যের দুর্নীতিকে বন্ধ করার জন্য রাজ্যপালের একটা বড় স্টেপ নেওয়া উচিত। অবশ্য যদি এই রাজ্যপাল এই সরকারের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে চাইতেন, তাহলে তিনি অনেক দিন আগেই নিতে পারতেন। যদি আজকে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর থাকতেন, তাহলে তিনি বুঝিয়ে দিতেন, কি করে এই সরকারকে টাইট দিতে হয়! কিন্তু আনন্দ বোস সেই কাজ করার মত ক্ষমত হয়ত রাখেন না। মিনমিনে গলায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেওয়া যাবে না, এটা তিনি বুঝেও কেন না বোঝার ভান করছেন, সেটাই লাখ টাকার প্রশ্ন। কিন্তু যে ভয়ংকর রিপোর্ট এবার সামনে এলো, তারপর সাংবিধানিক প্রধান হিসেবে রাজ্যপাল যদি কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করেন, তাহলে বুঝে নিতে হবে যে, এই রাজ্যপালের প্রশ্রয়ে আরও বেশি চুরি করার সাহস পেয়ে যাচ্ছেন তুলামুলের নেতারা। অন্তত বিরোধীদের পক্ষ থেকে তেমনটাই বলা হচ্ছে। প্রসঙ্গত, আপনারা সকলেই জানেন, ইতিমধ্যেই একটি ক্যাগ রিপোর্ট সামনে এসেছে। যেখানে প্রায় 2 লক্ষ কোটি টাকা দুর্নীতির ঘটনা এই রাজ্যের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে এনে সোচ্চার হয়েছে বিরোধীরা। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এদিন আরও একবার দাবি করেছেন যে, এই ক্যাগ রিপোর্ট ধরে এবার এফআইআর করার নির্দেশ দেওয়া উচিত রাজ্যপালের। এখন প্রশ্ন হচ্ছে যে, রাজ্যপাল কি সেই কাজ করবেন? তিনি সবটাই জানেন যে, এই রাজ্যের সরকার চুরি করেছে। কেন্দ্রের বঞ্চনার যে অভিযোগ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় করছেন, তা সর্বৈব মিথ্যা। কারণ তারা হিসাব না দিয়ে বারবার কেন্দ্রের পক্ষ থেকে টাকা চাইছেন। কিন্তু এত কিছু জানার পরেও সেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে আবার বাংলার বকেয়া নিয়ে কথা বলেছেন রাজ্যপাল। অর্থাৎ বোঝাই যাচ্ছে যে, তিনি এই চোর তৃণমূলের হয়েই কথা বলার চেষ্টা করছেন। আর এতেই রাজ্যপালের ভূমিকা মানুষের কাছে প্রশ্নের মুখে পড়ে যাচ্ছে। কারণ মানুষ আজকে তৃণমূলের সঙ্গে নেই। তাই ক্যাগ রিপোর্ট যখন সামনে এসেছে, যখন এত লক্ষ লক্ষ কোটি টাকার দুর্নীতির বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে, তখন তদন্তের নির্দেশ দিতে কিসের অসুবিধা মহামহিম রাজ্যপালের? বিরোধীদের দাবি, বিরোধী দলনেতা হিসেবে ঠিক কথাটাই তো বলেছেন শুভেন্দু অধিকারী। রাজ্যপাল নাকি নিজের এক্তিয়ারে থেকে কাজ করছেন! তাহলে কেন তিনি মানুষের পালস বুঝতে পারছেন না! কেন তিনি বুঝতে পারছেন না যে, এই সরকারের পক্ষে আর কেউ নেই! তাহলে যে ক্যাগ রিপোর্টের দুর্নীতির বিষয়টি প্রকাশ্যে এসেছে, সেটা নিয়ে তো অবিলম্বে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া উচিত রাজ্যপালের। কিন্তু সেটা না দিয়ে তিনি এখনও যদি চুপচাপ বসে থাকেন, তাহলে বুঝে নিতে হবে যে, কেন্দ্রের সঙ্গে নয়, বরঞ্চ এই রাজ্য সরকারের সঙ্গে সেটিং রয়েছে রাজ্যপালের। আর তিনি মাঝখানে রয়েছেন বলেই কেন্দ্র কোনো পদক্ষেপ নিতে পারছে না এই রাজ্যের বিরুদ্ধে। আজকে সাংবিধানিক প্রধান হিসেবে তিনি যদি এই সরকারের চুরিকে ঢাকার চেষ্টা করেন, তাহলে রাজ্যের মানুষ কি করে জবাব দিতে হয়, সেটা লোকসভাতে দেখিয়ে দেবে। তাই নিজের ভাবমূর্তিকে ঠিক রাখার জন্য, এই রাজ্য সরকারের কাছে ভালো সাজার জন্য কারসাজি করা বন্ধ করুন রাজ্যপাল। রাজ্যের মানুষের মন পেতে হলে, অবিলম্বে দুর্নীতিকে বন্ধ করতে ক্যাগ রিপোর্টকে হাতিয়ার করে এফআইআর করার নির্দেশ দিয়ে তিনি নয়া দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন বলেই দাবি বিরোধী শিবিরের। পর্যবেক্ষকদের মতে, যখন সরকারের পক্ষ থেকে ন্যায় পাওয়া যায় না, যখন রাজ্যে আইন ব্যবস্থা প্রশ্নের মুখে পড়ে, তখন একমাত্র ভরসার জায়গা হয়ে দাঁড়ায় কেন্দ্রীয় সরকার এবং রাজ্যের রাজ্যপাল। কিন্তু কেন্দ্র এই রাজ্যের চালাকি ধরতে পেরেছে বলেই চুরি বন্ধ করতে টাকা আটকে রেখেছে। বারবার রাজ্যকে হিসাব দিতে বলছে। রাজ্য হিসাব না দিলে যে কেন্দ্র টাকা দেবে না, সেটাও তারা জানিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু মাঝখানে বারবার ব্যাগড়া হয়ে দাঁড়াচ্ছেন রাজ্যপাল। বিরোধীদের বক্তব্য অনুযায়ী বোঝা যাচ্ছে যে, এই রাজ্যপালের নিষ্ক্রিয়তার কারণেই রাজ্য সরকার প্রশ্রয় পেয়ে যাচ্ছে। তাই যদি আইনের শাসনকে রাজ্যে প্রতিষ্ঠা করতে হয়, তাহলে ক্যাগ রিপোর্ট ধরে অবিলম্বে পদক্ষেপ নিতে হবে সিভি আনন্দ বোসকে। তা না হলে স্পষ্ট হয়ে যাবে যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার দলকে চুরি করতে দেওয়ার জন্য মূল প্রশ্রয়দাতাটাকে! শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্যের পর তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক সমালোচকরা। আপনার মতামত জানান -