এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > উত্তরবঙ্গ > শাসকদলের নতুন পদক্ষেপে কার্যত দুভাগ দল, অস্বস্তি আরও বাড়ল ঘাসফুল শিবিরের

শাসকদলের নতুন পদক্ষেপে কার্যত দুভাগ দল, অস্বস্তি আরও বাড়ল ঘাসফুল শিবিরের

গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব কিছুতেই কমছে না তৃনমূলে। সূত্রের খবর, উত্তর দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জ সেন্ট্রাল কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কের (আরসিসিবি) বোর্ড অফ ডিরেক্টরের চেয়ারম্যান মাসুদ মহম্মদ নাসিম এহসানকে দল থেকে বহিষ্কারের পর এবার জেলা তৃণমূল কার্যত দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে গিয়েছে। যেখানে একদিকে জেলার দলের একাধিক হেভিওয়েট নেতা বহিষ্কারের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

আবার অন্যদিকে জেলা সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়াল ও গোয়ালপোখর ব্লক সভাপতির বহিষ্কার নিয়ে ভিন্ন বক্তব্য দিচ্ছেন। যার ফলে গোটা ঘটনায় দলের ভিতরে এবং বাইরে চাপের মুখে পড়ে কোণঠাসা হচ্ছেন কানাইয়ালালবাবু এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। জানা গেছে, এই বিষয়টি নিয়ে উত্তর দিনাজপুর জেলা তৃণমূলের উপরতলার পাশাপাশি নীচুতলাতেও ব্যাপক শোরগোল সৃষ্টি হয়েছে।

এদিন এই প্রসঙ্গে উত্তর দিনাজপুর তৃণমূলের জেলা চেয়ারম্যান তথা প্রাক্তন জেলা সভাপতি ইটাহারের বিধায়ক অমল আচার্য বলেন, “নাসিম এহসানের বিরুদ্ধে অভিযোগ তাঁকে জানানো হয়নি। নিয়ম অনুসারে প্রথমে শো-কজ করা উচিত ছিল। নির্দিষ্ট সময়ে উত্তর না দিলে কিংবা সন্তোষজনক উত্তর না নিলে দল ব্যবস্থা নিতে পারে। ব্লক কমিটি বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে জেলা কমিটির কাছে অনুমোদনের জন্য পাঠায়। কিন্তু এক্ষেত্রে সেই নিয়মগুলি মানা হয়নি। খুনের কেসের আসামিকেও বিচারক বলার সুযোগ দেন। কিন্তু নাসিমকে এক্ষেত্রে বলার সুযোগ দেওয়া হয়নি।”

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

অন্যদিকে এই ব্যাপারে চোপড়ার তৃণমূল বিধায়ক হামিদুল রহমান বলেন, “নাসিমকে অবৈধভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। আমি শুনেছি ব্লক কমিটিও বৈঠক করেনি।” তবে এই প্রসঙ্গে তৃণমূলের জেলা সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়াল বলেন, “গোয়ালপোখর ব্লক কমিটিই বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়ে আমাদের জানিয়েছে। সেভাবেই বহিষ্কার করা হয়েছে। নাসিম সাহেব বিজেপির সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সেই ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। ওই ভিডিওতে সমস্ত বিষয় পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে।”

অন্যদিকে এই ব্যাপারে তৃণমূলের গোয়ালপোখর ব্লক কমিটির সভাপতি গোলাম রসুল ওরফে মনি বলেন, “আমরা নাসিম সাহেবকে বহিষ্কার বা শো-কজ কিছুই করিনি। জেলা সভাপতিকে বলেছিলাম তিনি দলবিরোধী কাজ করেছেন। জেলা নেতৃত্ব যে সিদ্ধান্ত নেবে আমরা তাই মেনে নেব।” তবে এই প্রসঙ্গে মাসুদ মহম্মদ নাসিম এহসান বলেন, “আমাকে দল কিছুই জানায়নি। এবিষয়ে আমি জেলা কমিটির অনেককেই জানিয়েছি।কিছুদিনের মধ্যেই কলকাতায় যাব। দলের জেলা পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারী সহ অন্যান্য নেতৃত্বকে বিষয়টি জানাব। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও বিষয়টি জানাব।”

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, কিছুদিন আগেই দলবিরোধী কাজের জন্য জেলা তৃণমূলের পক্ষ থেকে নাসিম সাহেবকে বহিষ্কার করা হয়। তবে নাসিমকে অবৈধভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে জানান। তিনি বলেন, “অন্য দলের নেতা-কর্মীরা যাঁরা আসতে চাইছেন আমরা তাঁদের দলে নিচ্ছি। কিন্তু দল থেকে বের করে দেওয়া এবারই প্রথম শুনছি। দলবিরোধী কাজ করে থাকলে তার প্রমাণ দিতে হবে। নাসিমের বিরুদ্ধে কোনও দুর্নীতির অভিযোগ নেই। সরাতে গেলে তাকে শো-কজ করতে হয়, তাঁকে সময় দিতে হয়। বিজেপিতে চলে গিয়েছে বলা হচ্ছে। কিন্তু তার প্রমাণ কোথায়। কোনও দলের মিটিং হচ্ছে এবং সেখানে আমি আছি এবং ভিডিওতে আমরা ছবি এলেই কি বিজেপিতে যাওয়া হল? বিজেপির জেলা সভাপতি তো ঘোষণা করেননি।”

আর করিম চৌধুরীর এই বক্তব্যের পরই গত রবিবার জেলার বড় বড় তৃণমূল নেতারাও করিম সাহেবের সুরেই সুর মিলিয়ে এই বহিষ্কারের বিরোধিতা করতে শুরু করেছেন। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, নাসিম সাহেব একসময় রাষ্ট্রমন্ত্রী গোলাম রব্বানির ঘনিষ্ঠ ছিলেন। তাঁকে ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান করার পিছনেও রব্বানি সাহেবের হাত ছিল। গোয়ালপোখর হাইস্কুলের শিক্ষক নাসিম সাহেবের স্ত্রী মহজাবি বেগম গোয়ালপোখর পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল সদস্য। তিনিও সভাপতি পদের দাবিদার ছিলেন।

কিন্তু কয়েকমাস আগে জেলায় গুঞ্জন ছড়িয়েছিল যে নাসিম সাহেব বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন। বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে তাঁর একটি বৈঠকের ভিডিও ভাইরাল হয়। আর এবার তাঁকে ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান পদ থেকে সরানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। আর সেই কারণেই আগে তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে মনে করছেন একাংশ।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!