এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > উত্তরবঙ্গ > আপনার চায়েও মারাত্মক বিষ? নতুন সন্ধানে ঘুম উড়তে পারে – জানুন বিস্তারিত

আপনার চায়েও মারাত্মক বিষ? নতুন সন্ধানে ঘুম উড়তে পারে – জানুন বিস্তারিত


বর্তমানে আমাদের নানান খাদ্য ক্ষেত্রে ভেজালের পরিমাণ বিপদসীমা কবেই অতিক্রম করে গেছে। নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য ছাড়াও ব্যবহার্য উপাদানে সবকিছুতেই দেখা যায় ভেজালের পরিমাণ অত্যন্ত বেশি। এবার এমন একটি খবর সামনে এসেছে, যা শুনে সাধারন মানুষের ঘুম উড়তে পারে। সাধারণ মানুষ সকাল-বিকেল যা না খেয়ে বিছানা ছাড়তে পারেনা তার সম্পর্কে এমন একটি খবর যা শুনলে চমকে উঠতে হবে। এবার চা এর মাধ্যমেও সাধারণমানুষ বর্জ্য খাচ্ছেন। সম্প্রতি এক সমীক্ষায় উঠে এসেছে চা প্রক্রিয়াকরণের সময় কোম্পানিগুলি তাদের বর্জ্য চায়ের সাথে মিশিয়ে দিচ্ছে, যা মানবদেহে বিষের সমতুল।

সুন্দর প্যাকেটে মোড়া যে চা আমাদের প্রত্যেকের ঘরে আসে, সেই চায়েতেই মিশে রয়েছে বর্জ্য। যা ফেলে দেওয়ার কথা ছিল, তাই চায়ের সাথে মিশে আমাদের কাপে আসছে। সাম্প্রতিক অভিযানে দেখা গেছে, একাধিক কারখানায় চায়ের সাথে বর্জ্য মেশানো হয়েছে। ঘটনা ধরা পড়ার পর থেকে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে টি বোর্ডের পক্ষ থেকে। কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে নেয়া হয়েছে কড়া ব্যবস্থা। স্মল টি গ্রোয়ার অ্যাসোসিয়েশন ও সংগঠনের সদস্যদের সতর্কীকরণ বার্তা দিয়েছে এই ধরনের ঘটনা দ্বিতীয়বার ঘটলে কারখানাগুলির লাইসেন্স বাতিল করা হবে বলে জানা গেছে। আগামী বছরের শুরু থেকে কোনো চা কারখানায় যদি এর ধরণের অনিয়ম ধরা পড়ে, তাহলে সে ক্ষেত্রে তাদের জন্য ব্যবসা চিরকালের জন্য বন্ধ হওয়ার পথে।

বাগান থেকে চা তোলার পর ঝাড়াই-বাছাই এর সময় বেশ কিছুটা খারাপ অংশ বের হয় কারখানায়। প্রক্রিয়াকরণের সময় যা খুব স্বাভাবিক ঘটনা বলে জানা যায়। নিয়ম অনুযায়ী কারখানাগুলোকে মোট উৎপাদনের 2% বাতিল বা বর্জ্য হিসেবে দেখাতে হবে। শুধু খাতা-কলমে নয়, বাস্তবেও তা বর্জ্য হিসেবে অস্তিত্ব থাকতে হবে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, বেশ কয়েকটি কারখানা নিয়ম বহির্ভূত কাজ করছে। বর্জ্য বা বাতিল চা পাতা ইনস্ট্যান্ট এর সঙ্গে মিশিয়ে বিক্রি করছে। বাতিল চায়ের জন্য ক্ষতি কমাতে তা বাইরে পাঠানোর অনুমতি দিয়েছে টিবোর্ড। যদিও তা নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে করতে হয়। নিয়মকানুন মানার ঘেরাটোপে না থেকে কারখানাগুলি সরাসরি ইনস্ট্যান্ট চায়ের সাথে সেই বর্জ্য মিশিয়ে দিচ্ছে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

সম্প্রতি সমীক্ষায় তদন্তে একাধিক কারখানার ক্ষেত্রে এই ঘটনা উঠে এসেছে। জানা গেছে, ভারতে তিন লাখ ক্ষুদ্র চা বাগান আছে, যার একটা বড় অংশ অসম উত্তরবঙ্গে। অসম উত্তরবঙ্গে একের পর এক ছোট কারখানা গড়ে উঠেছে ক্ষুদ্র চাষীদের কারণেই। এখন এই ধরনের কারখানা করতে টিবোর্ডে সাহায্য করছে। তবে এই গড়ে ওঠা কারখানাগুলির মধ্যে কয়েকটি এই ধরনের অনিয়ম চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ। টি বোর্ড এর তরফ থেকে শাস্তি হিসেবে এতদিন পর্যন্ত কাউকে একমাস কাউকে তিন মাস পর্যন্ত সাসপেন্ড করা হয়েছিল। বর্তমানে পুরো ব্যাপারটি চায়ের গুণমান ও নিরাপত্তা সংস্থা ফ‍্যাসাইয়ের অধীনে তদারক করা হচ্ছে। তাদের তরফে একটি টিম গঠন করে মাঝেমধ্যেই কারখানাগুলোতে গিয়ে নমুনা পরীক্ষা চলছে। শুধু তাই নয়, কারখানাগুলির নিজস্ব পরীক্ষাগারে চায়ের রিপোর্ট প্রতি ছ মাস অন্তর আপলোড করতে হবে বলে জানা গেছে।

চা-পাতা প্রক্রিয়াকরণে যে বর্জ্য মিশছে তা ধরা পড়ে ফ‍্যাসাইয়ের এর করা সমীক্ষায়। এই সমীক্ষার ফল সামনে আসার পর টিবোর্ড থেকে একটি বিশেষ টিম গঠন করেছে, যারা গিয়ে বর্জ্য নষ্ট করে দিয়ে আসছে অথবা বর্জ্য মিশ্রিত চা কোথায় কিভাবে বিক্রি করা হচ্ছে বা তা বাইরে যাচ্ছে কিনা তা সম্পূর্ণ তদারক করা হচ্ছে। স্মল টি গ্রোয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের কর্তা বিজয় গোপাল চক্রবর্তী জানিয়েছেন, ‘এই প্রবণতা যদিও কম তবে তা মারাত্মক। আমাদের সংগঠনের সদস্যদের সচেতন করা হয়েছে। কারণ চটজলদি সামান্য লাভের লোভে সুনাম এবং মানুষের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত ঝুঁকি নেওয়ার মানে হয়না। টিবোর্ড বিষয়টি নিয়ে অত্যন্ত কড়া মনোভাব দেখাচ্ছে।’ অন্যদিকে টি রিসার্চ অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি জয়দীপ ফুকন জানান, ‘এখন চায়ের বর্জ্য বা গুনমান বজায় রাখতে না পারার ফলে বাতিল চা বাইরে পাঠানোর অনুমতি রয়েছে বোর্ডের তরফে। তার জন্য বিশেষ গাইডলাইন রয়েছে‌। সেটা মেনে চললেই হল। তাহলে নিজেদের ক্ষতি হয় না। মানুষের স্বাস্থ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে না।’

চা সংক্রান্ত এই বিষয়টি সামনে আসার সঙ্গে সঙ্গে তুমুল আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। যেহেতু চা প্রত্যেকেরই নিত্যপ্রয়োজনীয় পানীয়। সেই চায়ের সাথে এরকম বর্জ্য মেশানোর ঘটনায় এক প্রকার আতঙ্কের সৃষ্টি করছে জনমানসে বলে দাবি করা হয়েছে। তবে অসম, উত্তরবঙ্গের ক্ষুদ্র চাষীদের পক্ষ থেকে এ ধরনের ঘটনাকে অস্বীকার করা হয়েছে। তবে কি চা পানও এখন ভেজালের কারণে বন্ধ করতে হবে? বাঙালি কি চায়ের রসনা তৃপ্তি থেকে বঞ্চিত হবে? এ প্রশ্নের উত্তর এখনো সঠিকভাবে সামনে আসেনি। তবে পুরো বিষয়টিকে সমূলে নষ্ট করতে তৎপর হয়েছে টি বোর্ড। আপাতত সম্পূর্ণ ঘটনাটির ওপর নজর থাকবে টি বোর্ড ও ফ‍্যাসাইয়ের।

আপনার মতামত জানান -

ট্যাগড
Top
error: Content is protected !!