এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > নদীয়া-২৪ পরগনা > তৃণমূল ছাড়া কি কেউ ত্রাণ বিলি করতে পারবেন না? প্রাক্তন বাম সাংসদ আক্রান্ত হতেই উঠছে প্রশ্ন!

তৃণমূল ছাড়া কি কেউ ত্রাণ বিলি করতে পারবেন না? প্রাক্তন বাম সাংসদ আক্রান্ত হতেই উঠছে প্রশ্ন!


মানুষের দুর্দিনে রাজনৈতিক নেতারা সাধারণ মানুষের পাশে থাকবেন, এটাই কাম্য। বর্তমানে করোনা ভাইরাসের কারণে সর্বত্র লকডাউন চলছে। আর এই লকডাউনের সময় প্রতিটি রাজনৈতিক দল চেষ্টা করছে, সামাজিক দূরত্বকে মান্যতা দিয়ে নিজের নিজের মত করে মানুষের পাশে থাকবে। আর এক্ষেত্রে নিজেদের সাধ্যমত সাধারণ মানুষের কাছে খাবার পৌঁছে দিতে উদ্যোগী তারা। এই তালিকায় যেমন রয়েছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস, ঠিক তেমনই রয়েছে বিরোধী রাজনৈতিক দল বিজেপি থেকে শুরু করে বামফ্রন্ট, কংগ্রেসের মত দলগুলো।

তবে প্রথম থেকেই এই ব্যাপারে রাজনৈতিক বৈষম্যের অভিযোগ তুলতে শুরু করেছে বিরোধীরা। বেশ কিছু ক্ষেত্রে দেখা গেছে, তৃণমূলের অনেক নেতা নেত্রীরা সাধারণ মানুষকে সাহায্য করবার জন্য ত্রাণ দিতে পৌঁছে গেলেও আটকে দেওয়া হয়েছে বিজেপির অনেক জনপ্রতিনিধিদের। বালুরঘাটের বিজেপি সাংসদ সুকান্ত মজুমদার থেকে শুরু করে ব্যারাকপুরের অর্জুন সিংহ – অনেকেই ত্রাণ বিলি করতে গিয়ে পুলিশের বাধার মুখে পড়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন। যার পরেই তাদের পক্ষ থেকে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, তাহলে কি শাসক দলের নেতারাই শুধুমাত্র ত্রাণ দিতে পারবেন?

তাঁদের আরও প্রশ্ন, এই কঠিন সময়েও, শুধুমাত্র বিরোধী বলেই কি তাঁরা সাধারণ মানুষকে সহযোগিতা করতে পারবেন না! আর বিজেপির পক্ষ থেকে যখন এই প্রশ্ন তোলা হচ্ছে, ঠিক তখনই এবার ত্রাণ দিতে গিয়ে আক্রান্ত হলেন সিপিএমের প্রাক্তন সাংসদ তড়িৎ তোপদার। যা লকডাউনের এই মুহূর্তে চরম চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। জানা গেছে, মঙ্গলবার দুপুরে ব্যারাকপুরে প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ টিটাগড় এলাকায় যান। অভিযোগ, সেখানেই তার গাড়িতে হামলা করা হয়। আর এই ঘটনার পরই রীতিমতো বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন সিপিএমের নেতা কর্মীরা।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

বামেদের অভিযোগ, বিরোধী দল হিসেবে তারা মানুষকে সহযোগিতা করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু সেই অধিকার কেড়ে নিয়ে তৃণমূলের পক্ষ থেকে তাদেরকে আক্রমণ করা হয়েছে। এদিন এই প্রসঙ্গে সরব হয়েছেন সিআইটিইউ উত্তর 24 পরগনা জেলার সম্পাদিকা গার্গী চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “প্রাক্তন সাংসদের গাড়ি মঙ্গলবার ভাঙচুর করা হয়েছে এবং আমাদের দলের পাঁচজন কমরেডকে মারধর করা হয়েছে। আমরা 40 দিন ধরে দুস্থদের খাবার দিচ্ছি। আমাদের সেই কমিউনিটি কিচেনের তৈরি খাবার ফেলে দেওয়া হয়েছে।”

রীতিমত ক্ষোভ উগরে দিয়ে তিনি বলেন, “ভাঙচুর করা হয়েছে চেয়ার-টেবিল। আমাদের একটাই দাবি, যে দুষ্কৃতীরা আমাদের নেতা তথা প্রাক্তন সাংসদের গাড়িতে হামলা করল, সেই দোষীদের গ্রেপ্তার করতে হবে। যতক্ষণ না পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেফতার করছে, ততক্ষণ আমাদের আন্দোলন চলবে। আজ পুরো জেলাজুড়ে আন্দোলন চালানো হবে। যদি 24 ঘন্টার মধ্যে দোষীদের গ্রেপ্তার করা না হয়, তাহলে আমরা আগামীকাল লকডাউন ভেঙে টিটাগড় থানায় গিয়ে বসে থাকব। যা হবে হবে। প্রশাসন কি করে দেখা যাবে।”

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শাসক থেকে বিরোধী, দুর্দিনে মানুষের পাশে থেকে প্রতিটি রাজনৈতিক দল সাধারণ মানুষকে সহযোগিতা করবেন, এটা অবশ্যই সাধুবাদযোগ্য ঘটনা। কিন্তু যেভাবে বিভিন্ন জায়গায় বিরোধী নেতা নেত্রীরা মানুষকে সহযোগিতা করতে গেলেই তাদেরকে বাধাদানের ঘটনা ঘটেছে, তাতে ইতিমধ্যেই বিতর্ক তৈরি হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে। আর এবার ব্যারাকপুরে প্রাক্তন সিপিএম সাংসদের পক্ষ থেকে সাধারণ মানুষকে সাহায্যদানের ঘটনায় যেভাবে সেই প্রাক্তন সাংসদ আক্রান্ত হলেন, তাতে রীতিমত শোরগোল তুলে দিল সিপিএম।

আর রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এতে করে আদতে চাপ বাড়ল শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের উপরেই! কেননা, খুব স্বাভাবিকভাবেই করোনার এই কঠিন সময়ে, সাধারণ মানুষ চাইছেন সকলে আপাতত রাজনীতির রঙ ভুলে এক হয়ে লড়াই করুন, মানুষের পাশে দাঁড়ান। কিন্তু যেভাবে বিজেপি থেকে সিপিএম প্রতিটি বিরোধী দল, ত্রাণবিলি করতে গিয়ে তৃণমূল নেতা-কর্মী বা পুলিশের বাধার মুখে পড়ার অভিযোগ আনছেন, তাতে করে এই কঠিন সময়েও তৃণমূল রাজনীতি করছে এই বার্তাই স্পষ্ট হচ্ছে। বিরোধীদের সেই অভিযোগকে মান্যতা দিয়ে সাধারণ মানুষ পুরো ব্যাপারটিকে কিভাবে নেন – সেদিকেই আপাতত নজর থাকবে রাজনৈতিক মহলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!